কাতার বিশ্বকাপে টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য
1 min readআর্জেন্টিনা-পোল্যান্ডের মধ্যকার বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে ছয় ঘণ্টা আগেই কাতারের স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ পৌঁছান আশরাফ আলী। কিন্তু তখনো ম্যাচের টিকিট পাননি। মরিয়া হয়ে শেষপর্যন্ত ‘আমার টিকিট দরকার’ লেখা চিহ্ন তুলে ধরেন তিনি।
একপর্যায়ে তার কাছে দুই হাজার মার্কিন ডলার দামে একটি টিকিট বিক্রি করতে রাজি হন এক কালোবাজারি, যা টিকিটের প্রকৃত দামের চেয়ে অন্তত নয়গুণ বেশি।
কিন্তু এই দামে টিকিট কেনা সম্ভব ছিল আশরাফের। আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসির খেলা দেখতে সুদূর মিসর থেকে কাতারে উড়ে গেছেন তিনি। তাহলে কি স্বপ্নপূরণ হবে না তার? না সেটি হয়নি। শেষমেষ ৫০০ ডলারে কোনোমতে একটি টিকি জোগাড় করে ২-০ গোলে আর্জেন্টিনার জয় প্রত্যক্ষ করেছেন আশরাফ।
শুধু এ মিসরীয় যুবকই নন, তার মতো অসংখ্য টিকিটবিহীন ফুটবলপ্রেমী রোজ জড়ো হচ্ছেন কাতারের স্টেডিয়ামগুলোর বাইরে। ফলে টিকি হয়ে উঠেছে সোনার হরিণ। এর সুযোগ নিয়ে কোনো কোনো কালোবাজারি টিকিটের জন্য ১০ গুণ বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন। পুলিশের টহল, সিসিটিভি ক্যামেরা, কাতারের কঠোর আইন- কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করছে না তারা।
ফ্রান্সের এক টিকিট কালোবাজারি বলেন, একটি কালোবাজার তৈরি হয়েছে। সেখানে টিকিট বিক্রি করে ফাইনাল ম্যাচ দেখার মতো অর্থ আয় করেছেন তিনি।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি বলেন, তিনি মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো তারকা থাকা ম্যাচের টিকিটের জন্য ‘সবচেয়ে নিবেদিতপ্রাণ সমর্থকদের’ কাছে এক হাজার শতাংশ পর্যন্ত বেশি দাম নেন। তার কথায়, যেসব ম্যাচে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাওয়া যাবে, আমি সেসব ম্যাচের টিকিটই বিক্রি করি।
এ ধরনের অভিজ্ঞ আরও অনেক কালোবাজারি বিশ্বকাপ থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য কাতারে গেছেন। রয়টার্স অন্তত ২০ জনের সঙ্গে কথা বলেছে, যারা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বা স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে কালোবাজারের টিকিট কিনেছেন বা কেনার চেষ্টা করেছেন।
বিশ্বকাপের জন্য একটি বিশেষ আইন পাস করেছে কাতার। এ আইনে টিকিট বিক্রির একচেটিয়া অধিকার দেওয়া হয়েছে ফিফাকে। এর বাইরে কেউ অবৈধভাবে টিকিট বিক্রি করলে যে দামে সেটি বিক্রি করা হয়েছে তার ১০ গুণ পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।