সানস্ক্রিন বাদ দেওয়া যাবে না: “গরমকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করা সবচেয়ে বড় ভুল,” বলেন নিউ জার্সির হ্যাকেনস্যাক’য়ে অবস্থিত ‘শোয়েগার ডার্মাটোলজি’র বোর্ড প্রত্যয়িত ত্বক বিশেষজ্ঞ মার্গারিটা ললিস।
ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “জিঙ্ক অক্সাইড এবং টাইটেনিয়াম অক্সাইড সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করা কেবল ক্যান্সার সৃষ্টিকারী অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষিত রাখে না বরং ত্বককে অকালে বয়সের ছাপ পড়া থেকেও রক্ষা করে।”
গ্রীষ্ম, বর্ষা বা শীত যে কোনো মৌসুমেই বাইরে যাওয়ার আগে সানব্লক ব্যবহার করা উচিত।
নিউইয়র্ক ভিত্তিক বোর্ড প্রত্যয়িত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ হ্যাডলি কিং বলেন, “আমাদের ত্বকে যে সূর্যের ক্ষতি হয় তার বেশিরভাগই দৈনিক সূর্যের আলো সংস্পর্শে যাওয়ার কারণে।”
চোখের পাতা, ঠোঁট, নাক, কান, চুলের রেখা ও মাথার ত্বকের দিকেও মনোযোগী হওয়া উচিত।
পর্যাপ্ত সানব্লক ব্যবহার না করা: শুধু সানব্লক ব্যবহার করলেই হবে না, তা ব্যবহার করতে হবে পরিমাণ মতো।
ডা. কিং বলেন, “অধিকাংশ মানুষই প্রয়োজনের তুলনায় ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ সানব্লক ব্যবহার করে। সানব্লকের আদর্শ মাপ হল এক আউন্স। উন্মুক্ত থাকে এমন স্থান মুখ, গলা ও ঘাড় ইত্যাদিতে সানব্লক ব্যবহার করা জরুরি।”
সিকি পরিমাণ সানব্লক খুব একটা কাজে দেয় না।এসপিএফ যুক্ত মেইকআপ নিজে থেকে সুরক্ষা দেয় না। তাই এর সঙ্গে এসপিএফ ৩০ বা ৫০ যুক্ত লোশন ব্যবহার করা উপকারী।
সকালে অনেক পরিমাণ মতো সানব্লক ব্যবহারের পরেও তা পুনরায় ব্যবহার করতে হবে।
ডা. কিং পরামর্শ দেন, “প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর এবং সাঁতার কাটা বা ঘাম বেশি হওয়ার পরে আবার সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে ত্বক সুরক্ষিত থাকবে না।”
অতিরিক্ত পরিষ্কার বা এক্সফলিয়েট করা: সূর্যের সুরক্ষার পাশাপাশি গরমে ত্বকের প্রতি কোমল আচরণ করার পরামর্শ দেন ডা. কিং।
তিনি বলেন, “গরমে ঘাম, তেল ও ত্বকে ময়লা জমার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই অধিকাংশ মানুষ বার বার ত্বক পরিষ্কার করে। ফলে ত্বকে জ্বলুনি দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে ত্বক পরিচর্যার সাধারণ ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে।”
মাঝে মধ্যে ঘাম, তেল বা ময়লা বেশি দেখা দিলে মৃদু ফোমিং ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি।
ডা. ললিস বলেন, “গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রার আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ত্বক চিটচিটে ও ময়লা অনুভূত হয়। অনেকে মনে করেন ত্বক পরিষ্কার করার মূল চাবি হল এক্সফলিয়েট করা। এ ধারণা ভুল। অতিরিক্ত এক্সফলিয়েট করার ফলে, বাইরের প্রতিকূল আবহাওয়া ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করে।”
ডা. ললিসের মতে, অতিরিক্ত এএইচএ এবং বিএইচএ’য়ের ব্যবহার ত্বকে দ্রুত পোড়াভাব সৃষ্টি করে।
তিনি বলেন, “মুখ ঠিক মতো ধোয়া হলে সপ্তাহে দুবারের বেশি এক্সফলিয়েট করার প্রয়োজন পড়ে না।”
ভারী ক্রিম ব্যবহার: গরমকালে ভারী মেইকআপের পরিবর্তে হালকা ফর্মুলার প্রসাধনী ব্যবহার করার কথা বলেন ডা. ললিস। হ্যায়ালুরনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।
শরীরের অযত্ন: মুখের মতো দেহেরও প্রতিদিন যত্ন প্রয়োজন, বিশেষত গ্রীষ্মকালে।
ডা ললিস বলেন, “গোসলের পরে মুখ ও পুরা শরীর আর্দ্র রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। সেরামাইড, হ্যায়ালুরনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ লোশন ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। নিয়মিত এক্সফলিয়েট করা ত্বকের মলিনভাব ও ব্রেকআউট কমায়।”
পর্যাপ্ত পানি পান না করা: ডা. ললিস বলেন, “পানি পান ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।”
পিপাসা পাওয়ার মানেই হল ত্বক সুস্থ ও সুরক্ষিত থাকা জন্য পানি প্রয়োজন এবং পানি শূন্যতার হলে ত্বকের তাপমাত্রা বাড়ে।
ত্বক সুস্থ, সুন্দর ও সতেজ রাখতে দৈনিক কমপক্ষে আট থেকে ১০ গ্লাস বা ৬৪ থেকে ৮০ আউন্স পানি পান করা প্রয়োজন।