হজ ফ্লাইট শুরু ৩১ মে, বিমান ভাড়া ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা
1 min readএবার হজ ফ্লাইট শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ধরা হয়েছে আগামী ৩১ মে। হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সভা শেষে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তবে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ৩১ মে’র মধ্যে প্রথম হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন হজ এজেন্সিস অব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) নেতারা। একই সঙ্গে বিমান ভাড়াও কমানোর দাবি জানিয়েছেন হাব সভাপতি।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৯ জুলাই সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৮৫৬ জন হজে যেতে পারবেন বলে ইতোমধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। করোনা মহামারিতে সৌদি আরবের নিষেধাজ্ঞার কারণে গত দুই বছর বাংলাদেশ থেকে কেউ হজে যেতে পারেননি।
বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত দুই বছর আমরা হজ করতে পারিনি। এই বছর খুলেছে আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। হজযাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে যেতে পারেন, সেজন্য আমরা বসে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অত্যন্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমাদের কাজগুলো করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘৩১ মে প্রথম হজ ফ্লাইট হবে সেই ধারণা নিয়ে আলোচনায় বসেছি। এর মধ্যে যাতে সব কাজ সম্পন্ন করতে পারি, এ ব্যাপারে সবাই আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
‘এবার দুটি বড় ৭৭৭ বিমানের ডেডিকেটেড ফ্লাইটের মাধ্যমে হজযাত্রীদের নেবো। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ৭৫টি ফ্লাইট অপারেশন করতে পারবে। বিমান বাংলাদেশের মাধ্যমে ৩১ হাজার হজযাত্রী পরিবহন করতে হবে। বাকি যাত্রী সৌদি এয়ারলাইন্স বহন করবে।’
বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছি। বিশেষ করে বাংলাদেশেই হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা। সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই, তারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন। এখানে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। অনেক বড় একটা প্রতিনিধি দল এসেছিল, তারাও নিজেরা দেখেছেন। তাদের সহযোগিতা আরও বাড়াবেন। এই বছর যাতে ফুল অপারেশনে যেতে পারি রোড টু মক্কা, সেজন্য তারা তাদের সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করবেন।’
ভাড়া কত নির্ধারিত হয়েছে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন জ্বালানি খরচ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সেক্ষেত্রে সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে দেখা গেছে ভাড়া দেড় লাখ টাকা আসে। কিন্তু হজযাত্রীদের কল্যাণের কথা চিন্তা করে, যাতে ভাড়াটা তাদের জন্য বহনযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য হয়, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিমান ভাড়া হবে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। সৌদি এয়ারলাইন্সের ক্ষেত্রে এ ভাড়া থাকবে।’
২০১৯ সালে বিমান ভাড়া এক লাখ ২৮ হাজার টাকা ছিল বলেও জানান মাহবুব আলী।
হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জিডিএস সিস্টেমে প্রদর্শিত গড় ভাড়া আমরা এখানে উপস্থাপন করেছি। সেই ভাড়ার গড় করলে তা এক লাখ ১০ হাজারের মধ্যে থাকে। এর আগেও যখনই ভাড়া বাড়ানো হয়েছে, ফুয়েলের দামের কথা বলে বাড়ানো হয়েছে। এ বছর ফুয়েলের দাম বেড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব ছিল ভাড়া আরও কমানো। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব ছিল এক লাখ ২৫ হাজার টাকা। আমরা মনে করি ভাড়াটি আরও কমানো উচিত। ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে আসা উচিত। আমি প্রতিমন্ত্রীকে বিষয়টি রিভিউ করার জন্য বলেছি।’
‘পাশাপাশি আমরা একটি কথা জানিয়ে দিয়েছি। এই ভাড়া নেওয়া হয় ডেডিকেটেড ফ্লাইটের (যে ফ্লাইটে শুধু হজযাত্রীদের পরিবহন করা হয়) জন্য। কিন্তু হজযাত্রীদের বেশির ভাগকে নেওয়া হয় শিডিউল ফ্লাইটে। ২০১৯ সালে মোট হজের সময় ৩৬৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছে, এর মধ্যে ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছে মাত্র ১৪৯টি। কিন্তু ৩৬৬টি ডেডিকেটেড ফ্লাইটেরই ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এটা যাতে না হয়। এ বছর একটি শিডিউল ফ্লাইটেও হাব হজযাত্রী পাঠাবে না।’
আগামী ৩১ মে থেকে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব নয় জানিয়ে হাব সভাপতি বলেন, ‘নিবন্ধনের বিভিন্ন কাজ রয়েছে, এজেন্সি টু এজেন্সি সমন্বয়, মোনাজ্জেম নির্বাচন, সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া, পরিবহন, খাবারের ব্যবস্থা সবকিছুর পর ভিসা হবে এরপর হজযাত্রী যাবেন। এটা বিশাল একটা প্রক্রিয়া। সঙ্গত কারণে ৩১ মে থেকে হজযাত্রী প্রেরণের জন্য কোনোভাবেই হাব প্রস্তুতি নিতে পারবে না, এটা সম্ভব নয়। সৌদি আরব অংশে খরচ কত হবে সেটা আমরা এখনও জানতে পারিনি।’
সভায় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান, বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আবু সালেহ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।