স্থানীয়রা জানান, গত তিন দিন ধরে উজানের ঢলে হাওর এলাকায় পানি বেড়ে ফসল রক্ষা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে চাপ সৃষ্টি করছে। এ কারণে তাহিরপুর উপজেলার পাটলাই নদীর তীর উপচে শুরুতে গুরমার হাওরের বর্ধিতাংশে পানি প্রবেশ করে। পরে টাংগুয়া হাওরের ওয়াচ টাওয়ারের পাশের বাঁধ পানির চাপে ভেঙে যায়। এতে তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ও মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর এবং দক্ষিণ বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের বোরো ধান তলিয়ে যায়।
এদিকে রবিবার গভীর রাতে দিরাই উপজেলার হুরামন্দিরা হাওরে কাটাখালী নদীর ফসল রক্ষা বাধ ভেঙে তলিয়ে যায় ৪০০ হেক্টর জমির ফসল। এদিকে আগাম বন্যার আতঙ্কে হাওরের কৃষকরা আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন।
কৃষকরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে হাওরে পানির চাপ বেড়েছে। এতে বাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করছে হাওরে। তাই জমির ধান কেটে নিচ্ছেন তারা।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, সোমবার (১৮ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত সারা জেলায় ৫১ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। আগাম বন্যার কারণে বাধ ভেঙে ৫৭০০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে ২৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, সকাল থেকে সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টি না হলে পানি দ্রুত কমে যাবে। উজানে আজ সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে, তবে পানি দ্রুতই কমে যাবে। এদিকে সুনামগঞ্জের পানি নেত্রকোনার হাওরে প্রবেশ করতে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ কর্মকর্তা।
সার্বিক বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সুনামগঞ্জের হাওরের সব বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। পানির চাপে বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। তাই দ্রুত হাওরের পাকা ধান কেটে ফেলার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, হাওরের বাধগুলোতে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করা হচ্ছে। কারণ নদীর তীর উপচে হাওরে পানি প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে।