সন্তানরা ‘সময়’ দেন না, হতাশায় বাসা ছাড়েন স্কুলশিক্ষক
1 min readমো. হারুনুর রশীদ শিক্ষকতা করেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে কলেজ বন্ধ থাকায় হতাশায় ভুগছিলেন তিনি। কাউকে কিছু না জানিয়ে গত ৩১ জানুয়ারি বাসা থেকে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যান এই শিক্ষক। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সবুজবাগ থানায় জিডি করেন তার পরিবারের সদস্যরা।
শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর সায়েদাবাদে তার খোঁজ পায় সবুজবাগ থানা পুলিশ। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে কাউন্সিলিংয়ের পর তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ বলেছে, হারুনুর রশীদ গত সোমবার রাজধানীর সবুজবাগের মাদারটেক এলাকা থেকে নিখোঁজ হন। পরদিন মঙ্গলবার তার পরিবারের সদস্যরা সবুজবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, হারুন ঘটনার দিন একটি ব্যাগ নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান।
মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মনতোষ বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, পেশায় হারুনুর রশীদ একজন শিক্ষক। তার পরিবার ও স্বজনরা জানিয়েছেন, তিনি মানুষ হিসেবে খুব ভালো এবং ধার্মিক। তার এক ছেলে চিকিৎসক, অন্য ছেলে বুয়েটের শিক্ষার্থী। ছোট মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী। পরিবারের সদস্যরা সবাই ব্যস্ত থাকেন। আবার করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে কলেজ বন্ধ। ফলে তিনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি পরিবার ও পেশাগত জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। ব্যক্তিজীবনে শিক্ষক হারুনুর রশীদ মোবাইলও ব্যবহার করতেন না।
হারুন পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘স্কুলে যাওয়ার জন্য সকালে বের হয়ে মনে হলো কোনদিকে যাবো?
৩১ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোথায় ছিলেন হারুনুর রশীদ, জানতে চাইলে এসি মনতোষ বিশ্বাস বলেন, তার বাসা থেকে মতিঝিল স্কুল আ্যন্ড কলেজ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। আত্মগোপনে থাকা কয়েকদিন তিনি হোটেলেই ছিলেন। তার পরিবার কিংবা অন্য কোনো আত্মীয়ের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেননি। মোবাইল ব্যবহার না করার কারণে তাকে খুঁজে পেতে কিছুটা সময় লেগেছে।
শিক্ষককে উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আত্মগোপনে থাকা শিক্ষকের পকেটে তার অফিসের একটি ইমেইল ও ইমেইলের পাসওয়ার্ড এবং বাসার মোবাইল নম্বর ছিল। শনিবার সারাদিন ওই শিক্ষক একজন পান দোকানদের সঙ্গে বসেছিলেন। এরপর দোকানদার তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন তিনি বাসা থেকে চলে এসেছেন। পান দোকানদার শিক্ষককের ইমেইল ও ইমেইলের পাসওয়ার্ড হিসেবে থাকা মোবাইল নম্বর সবুজবাগ থানায় দেওয়ার পর তথ্য-প্রযুক্তির সহয়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
রাতে ওই শিক্ষককে উদ্ধারের পর তার পরিবারকে থানায় ডেকে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।