May 4, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

শিল্প নগরীতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৮ লাখের বেশি

1 min read

প্রধানমন্ত্রী  বলেছেন, বর্তমানে শিল্প নগরীতে বিনিয়োগের পরিমাণ ৪১ হাজার ২১৭ কোটি টাকা এবং কর্মসংস্থান হয়েছে আট লাখের অধিক লোকের। তিনি বলেন, আমাদের সরকারের নীতি এবং কর্মসূচির ফলে বর্তমানে জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান প্রায় ৩৫ শতাংশ। দেশব্যাপী পরিবেশবান্ধব শিল্পের প্রসার ঘটছে এবং নারীদের অংশগ্রহণ জোরদার হচ্ছে। এতে দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির অনেক সূচকে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে। এরই মধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। এসময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিটি শিল্প কারখানা ও অন্যান্য সকল স্থাপনা নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের চারটি প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ৭৬৬টি পণ্য বিদেশে রপ্তানি করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সাল থেকে সব নির্বাচনেই দেশের মানুষ আমাদের প্রতি আস্থা রেখেছে, সমর্থন দিয়ে আসছে, আমি দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের এই সমর্থনের ফলে আজকের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত আছে। আমরা মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
পরিবেশবান্ধব শিল্পকারখানা গড়ে তোলার ওপর জোর দেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, প্রতিটি কারখানা গড়ে তোলার সময় পরিবেশকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। শিল্পে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ঘোড়াশাল এবং পলাশে দুটি পুরোনো ইউরিয়া সার কারখানার স্থলে পরিবেশবান্ধব নতুন ‘ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা’ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করি। এ কারখানায় দৈনিক দুই হাজার ৮০০ মেট্রিক টন (বার্ষিক প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন) ইউরিয়া সার উৎপাদন হবে। প্রকল্পটিতে জাপান ও চীন সরকার ঋণসহায়তা প্রদান করায় আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৫৭ সালে শেখ মুজিব ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (ইপসিক) প্রতিষ্ঠা করেন, যা বর্তমানে বিসিক নামে পরিচিত। বিসিককে শক্তিশালী করতে আজ আমরা তেজগাঁওয়ে বিসিকের বহুতল ভবন এবং মাদারীপুরে স¤প্রসারিত বিসিক শিল্প নগরী নির্মাণ উদ্বোধন করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিটি শিল্প কারখানা থেকে শুরু করে নির্মাণাধীন অন্যান্য সকল স্থাপনা, সবকিছু পরিবেশ-বান্ধব করার পদক্ষেপ নিচ্ছি। বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশ-বান্ধব (গ্রীন) ১০টি তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যে ৭টিই বাংলাদেশে উল্লেখ করে  আরো বলেন, সরকার প্রতিটি ধাপে পরিবেশ বিবেচনায় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
বলেন, সরকার দেশব্যাপী ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করেছে এবং দেশে যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে, তখনই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি লাভ করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের অনেক দায়িত্ব আছে এবং এগুলো সম্পন্ন করতে হবে। এদিন ১০ হাজার ৪৬০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী একই সময়ে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের ১৪ তলা বিশিষ্ট প্রধান কার্যালয়সহ আরো চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলো হচ্ছে মাদারীপুর বিএসসিআইসি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট স¤প্রসারণ, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স সেন্টার (বিআইটিএসি) এর আওতায় টুলস ইনস্টিটিউশন স্থাপন এবং বাংলাদেশ স্টিল এন্ড ইঞ্জিনিয়ালিং কর্পোরেশন (বিএসইসি)’র আওতায় এলইডি লাইট অ্যাসেম্বিং প্লান্ট স্থাপন।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে ঘোড়াশাল থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্টিজ কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান শাহ মো. ইমদাদুল হক। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা বিআইসিসি থেকে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকিও বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে এই প্রকল্পগুলোর ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে, শিল্পমন্ত্রণালয় প্রকাশিত শিল্পায়নের ব্যাপারে  চিন্তাধারার ওপর একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *