May 17, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

যুদ্ধের দামামায় ডিজেলে দৈনিক লোকসান ৭৬ কোটি টাকায়

1 min read

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে হু হু করে। গত পাঁচদিনের ব্যবধানে পরিশোধিত ডিজেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৪২ ডলার (৩ হাজার ৬শ টাকা)। দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে রাষ্ট্রীয় পেট্রোলিয়াম জ্বালানি আমদানি, বিপণন নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। সবশেষ ৯ মার্চ পরিশোধিত ডিজেলের দাম উঠেছে ১৭৬ ডলার ৩১ সেন্ট (১৫ হাজার ১৪০ টাকা)। বিপিসি বলছে, বর্তমান মূল্য অনুসারে তাদের দৈনিক লোকসান গিয়ে ঠেকেছে ৭৬ কোটি টাকায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি সরবরাহ ও পরিবহন ব্যবস্থাতেও প্রভাব ফেলেছে। যে কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলসহ সব ধরনের জ্বালানির দাম বাড়ছে।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সকালে বিপিসির ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পর্যালোচনা নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভাতেও ডিজেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছেন বিপিসির কর্মকর্তারা।

বিপিসি সূত্রে জানা যায়, দেশে বছরে কমবেশি ৬০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেলের চাহিদা থাকে। এর মধ্যে ১৫ লাখ মেট্রিক টন ক্রুড ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধন করা হয়। অবশিষ্ট ৪৫ লাখ টন পরিশোধিত জ্বালানি আমদানি করে দেশের চাহিদা মেটায় বিপিসি। বাংলাদেশে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল ব্যবহার হয়, তার ৭৩ শতাংশের বেশি ডিজেল। সড়ক ও নৌ পরিবহন, কৃষির সেচ পাম্প এবং বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ নানা ক্ষেত্রে ডিজেলের ব্যবহার রয়েছে। বাজারে বর্তমানে ৮০ টাকা লিটারে ডিজেল বিক্রি করে সরকারি মালিকানাধীন বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও যমুনা অয়েল কোম্পানি।

বিপিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারের ডিজেলের পাঁচদিনের গড় মূল্যের সঙ্গে ব্যারেলপ্রতি ২ ডলার ৮৩ সেন্ট প্রিমিয়াম, লিটার প্রতি প্রায় ১৯ টাকা আমদানি কর (ভ্যাট, ট্যাক্স মিলে), বন্দর ব্যয়, কোম্পানি কমিশন, পরিবহন ব্যয়, অপারেশন ও হ্যান্ডলিং লস, অন্যান্য লস মিলিয়ে ডিজেলের বিক্রয় মূল্য হিসাব করা হয়।

বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে বাড়তে থাকে জ্বালানির দাম। বিশেষ করে গত বছরের মে মাসের পর থেকে ডিজেলে ভর্তুকি বেড়ে গেছে। গত ৪ নভেম্বর থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। ওই সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে পরিশোধিত ডিজেলের দাম ব্যারেলপ্রতি একশ ডলারের কাছাকাছি ছিল। পরবর্তীসময়ে গত নভেম্বর মাসে ডিজেলের দরপতন হলেও ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে আবারো বাড়তে থাকে ডিজেলের দাম। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর অস্বাভাবিকভাবে জ্বালানির দাম বেড়েছে।

জানা যায়, ৪ মার্চ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ সালফারযুক্ত পরিশোধিত ডিজেলের ব্যারেলপ্রতি দাম ছিল ১৩৪ ডলার ০৪ সেন্ট। ৯ মার্চ একই ডিজেলের দাম উঠেছে ব্যরেলপ্রতি ১৭৬ ডলার ৩১ সেন্ট।

আগে কেনা ডিজেল বর্তমান বাজারে বিক্রিতে লোকসান হিসাব করার যৌক্তিকতা নিয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি বিপিসির কেউ। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের এক যুগ্মসচিব জাগো নিউজকে বলেন, জ্বালানি তেল, বিশেষ করে ডিজেল কেনার জন্য একমাস আগে অর্ডার দেওয়া হয়। বিপিসির দেওয়া শিডিউল অনুযায়ী সাপ্লাইয়াররা তা সরবরাহ করে। ট্যাংকে নেওয়ার পর মেইন ডিপো থেকে সারাদেশের ডিপোগুলোর মাধ্যমে ডিলার ও ফিলিং স্টেশনগুলোতে সরবরাহ করা হয়। এটা একটি প্রক্রিয়া। ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছানো পর্যন্ত কোন তেল কখন এসেছে তা নির্ধারণ সম্ভব নয়, তাই বর্তমান মার্কেটভ্যালু অনুযায়ী লাভ কিংবা লোকসান হিসাব করা হয়।

     

    About The Author

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *