May 4, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

বিপাকক্রিয়া সুস্থ রাখার উপায়

1 min read

সান ফ্রান্সিসকো’র ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া’র ‘এন্ডোক্রিনোলজি, মেটাবলিজম অ্যান্ড নিউট্রিশন’ বিভাগের অধ্যাপক এবং বেকারলি’র ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া’র ‘হিউম্যান নিউট্রিশন’ বিভাগের অধ্যাপক মার্ক হেলারস্টেইন বলেন, “সাধারণত মানুষ যখন ‘মেটাবলিজম’ বা পাচন বা বিপাক ক্রিয়া নিয়ে কথা বলে তখন মূলত আলাপ হয় ক্যালরি খরচের মাত্রা নিয়ে।”

রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “ক্যালরি গ্রহণকে অর্থের সঙ্গে তুলনা করতে পারে। দৈনিক কিছু টাকা পকেটে নিয়ে আপনি দিন শুরু করেন। কোনো দিন টাকা থেকে যায়, কোনোদিন আবার সবই খরচ হয়ে। ক্যালরির ব্যাপারটাও তাই। খরচ হয়ে গেলে তো হয়েই গেল, যদি বেঁচে যায় তবে তা জমা হয় মূলত চর্বি হিসেবে।”

মেটাবলিজম বা বিপাকক্রিয়া কী?

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডায়াবেটিস অ্যান্ড অস্টিওপোরোসিস সেন্টার’য়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ব্রায়ান ফার্টিগ বলেন, ‘গ্রিক শব্দ ‘মেটাবলিজমো’, যার অর্থ পরিবর্তন, থেকে ‘মেটাবলিজম’য়ের উৎপত্তি। শরীরে যত জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে এবং ফলাফল হিসেবে কর্মশক্তির ভারসাম্য বজায় থাকে, তার সমষ্টিই হল ‘মেটাবলিজম’। ওজনের সঙ্গে ‘মেটবলিজম’য়ের সম্পর্ক নিয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা হলো ‘স্লো মেটাবলিজম’ আর ‘ফাস্ট মেটাবলিজম’।”

“বিপাকক্রিয়ার গতি দ্রুত হওয়া মানে হল বেশি খেয়েও যাদের ওজন বাড়ে না। আর ‘মেটাবলিজম’ ধীর গতির হওয়া মানে হল অল্প খেয়েই ওজন বেড়ে যাওয়া।”

পোর্টল্যান্ডের ‘লেবেল্স হেল্থ’য়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ মেডিকাল অফিসার কেসি মিন্স বলেন, “শুধু ওজন দিয়ে বিপাকক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। শরীরের প্রতিটি কোষে চলে বিপাকক্রিয়া। সবকিছু ভালোভাবে সক্রিয় থাকলেই বিপাকক্রিয়া সুস্থ থাকে।”

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে আলোকে বিপাকক্রিয়া ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে জানানো হল

লিন মাসল টিস্যু: ডা. হেলারস্টেইন বলেন, “শরীরে ‘লিন মাসল টিস্যু’ যত বেশি হবে, ততই ক্যালরি খরচ হবে বেশি। এর জন্য শরীরচর্চা করতে হবে। এই ধরনের পেশি গড়ার আদর্শ উপায় হল ‘রেজিস্ট্যান্স ট্রেইনিং’। দুই পাউন্ড পেশি বাড়লে প্রতিদিন ৯০ ক্যালরি বেশি খরচ হবে। সপ্তাহের তিনবার শক্তি বাড়াবে এমন ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। যোগব্যায়ামও পেশির ঘনত্ব বাড়াতে সহায়ক।”

ভোজ্য আঁশ: যুক্তরাষ্ট্রের ডায়েটারি গাইডলাইন বলে, নারীদের প্রতিদিন ২৮ গ্রাম আর পুরুষের প্রতিদিন ৩৮ গ্রাম ভোজ্য আঁশ গ্রহণ করা উচিত। উদ্ভিজ্জ উৎস থেকেই একমাত্র ভোজ্য আঁশ পাওয়া সম্ভব।

তাই খাদ্যাভ্যাসে প্রচুর পরিমাণে ফল ও শাকসবজি থাকতে হবে।

ডা. মিন্স বলেন, “ভোজ্য আঁশ হজমের প্রক্রিয়াকে ধীর করে এবং হজমের সময় শর্করার শোষণ কমায়। অন্ত্রের ‘মাইক্রোবায়োম’য়ের স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য বজায় রাখতে ভোজ্য আঁশ খুবই জরুরি। ‘চিয়া সিডস’, ‘ফ্লাক্স সিডস’, সীম, ডাল ইত্যাদি ভোজ্য আঁশের উৎকৃষ্ট উৎস।

চিনি কম: ডা. মিন্স বলেন, “বিপাকক্রিয়ার সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে চাইলে চিনি খাওয়া পরিমাণ কমাতেই হবে। চিনি বেশি খেলে দিনের মাঝামাঝি সময়ে শরীর প্রচণ্ড ক্লান্তিতে ভেঙে পড়ে, মুখরোচক খাবার খাওয়ার ইচ্ছা অদম্য হয়ে ওঠে, মানসিক অস্বস্তি দেখা দেয়।”

দীর্ঘমেয়াদে অতিরিক্ত চিনি খাওয়া অভ্যাস ডেকে আনতে পারে হৃদরোগ, ক্যান্সার, ‘আলৎঝাইমার’স ডিজিজ’, ‘ডিমেনশা’ ইত্যাদি।

উপায় হল যে খাবারে ২ থেকে ৩ গ্রাম পরিমান ‘অ্যাডেড সুগার’ আছে সেগুলো বাদ দিতে হবে। প্রক্রিয়াজাত সাদা আটা খাওয়া কমাতে হবে। যার প্রেক্ষিতে খাদ্যতালিকা থেকে কমিয়ে দিতে হবে পেস্ট্রি, কুকিজ, কেক, পাস্তা ও পাউরুটি।

পানিতে চুমুক: ডা. ফার্টিগ বলেন, “অসংখ্যবার এই পরাপর্শ শুনেছেন, আর তার যথাযথ কারণও আছে। প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করতেই হবে। এতে ‘মেটাবলিক রেট’য়ের গতি কমবে, শর্করা ও চর্বি পেশিতে পৌঁছাতে পারবে না।”

ঘুমকে প্রাধান্য দিন: স্বাস্থ্য ও বিপাকক্রিয়া ঘুমের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।

ডা. মিন্স বলেন, “একটি রাত কম ঘুমালে, অন্যান্য দিনের তুলনায় ভিন্ন সময়ে ঘুমাতে গেলে ‘ইনসুলিন’য়ের ভারসাম্য নষ্ট হয়। ফলে ‘স্ট্রেস হরমোন’য়ের মাত্রা বেড়ে যায় এবং পরদিন রক্তে শর্করার মাত্রা থাকে অতিরিক্ত। এই সমস্যা এড়াতে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যেতে হবে এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়তে হবে।”

আর প্রতিদিন সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *