May 5, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

টানা ৯৫ বছর কোরআন তিলাওয়াত হচ্ছে যে মসজিদে

1 min read

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর নওয়াব শাহী জামে মসজিদের সংস্কার হয়েছে অনেক। অনেক কিছুই বদলেছে। তবে ৯৫ বছরেও বদলায়নি একটি রীতি। তা হলো— নামাজের সময় ছাড়া এক মিনিটের জন্যও এমসজিদে বন্ধ হয়নি কোরআন তিলাওয়াত। পালাক্রমে নিয়োগপ্রাপ্ত হাফেজরা এ মসজিদে কোরআন তিলাওয়াত করে চলেছেন।

সেলজুক তুর্কি বংশের ইসপিঞ্জার খাঁ ও মনোয়ার খাঁ নামে দুই ভাই ষোড়শ শতাব্দীতে এক কক্ষের এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। ১৩৫ বছর আগে ধনবাড়ীর জমিদার নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী মসজিদটির সম্প্রসারণ করেন। নওয়াব আলী চৌধুরী ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুসলমান মন্ত্রীমোগল স্থাপত্যরীতিতে তৈরি মসজিদটির মেঝে ও দেয়াল কাঁচের টুকরো দিয়ে মোজাইক করা। মেঝেতে আছে মার্বেল পাথরের নিপুণ কারুকাজ। ভেতরের পুরোটাজুড়ে চীনামাটির মোজাইকে দেখা যাবে ফুলের মোটিফ।

প্রায় ১০ কাঠার ওপর সম্প্রসারিত মসজিদটিতে আছে ৯টি জানালা এবং ৩৪টি ছোট-বড় গম্বুজ।

বড় ১০টি মিনারের প্রতিটি ছাদ থেকে প্রায় ৩০ ফুট উঁচু। ৫ ফুট উঁচু ও ৩ ফুট চওড়া মিহরাবটিও বেশ দৃষ্টিনন্দন।

৩০ ফুট মিনারের মাথায় আছে ১০টি করে তামার চাঁদ। মসজিদে ১৮টি হাড়িবাতি সংরক্ষিত রয়েছে। আগে যেগুলো আলোর জন্য ব্যবহৃত হতো। মোগল আমলের তিনটি ঝাড়বাতিও আছে।

ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদে একসঙ্গে দুইশ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

পাশেই শান বাঁধানো ঘাট ও কবরস্থান।

পূর্বদিকের প্রবেশপথ বরাবর পশ্চিমের দেয়ালে আছে তিনটি মিহরাব। অষ্টভূজাকারের কেন্দ্রীয় মিহরাবের দুই পাশে রয়েছে বহু খাঁজওয়ালা খিলান। অন্য দুটি মিহরাবও বহু খাঁজবিশিষ্ট।

প্রা্য় ৩০ বিঘা জমির ওপর বিশাল এক দীঘি মসজিদটির পাশে। মুসল্লিরা অজু করেন সেখানে। আশপাশে সুপ্রশস্থ ও খোলামেলা জায়গাও অনেক।

ওয়াকফকৃত সম্পত্তির মাধ্যমেই পরিচালিত হয় এ মসজিদ, পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসা ও ঈদগাহ।

নওয়াব শাহী জামে মসজিদটি দেখতে ও চলমান কোরআন তিলাওয়াত শুনতে প্রতিদিনই আসছেন দর্শনার্থীরামসজিদটির ইমামের দায়িত্বে আছেন হাফেজ মাওলানা ইদ্রিস হুসাইন। বর্তমানে কোরআন তিলাওয়াত ও খতিবের দায়িত্বে রয়েছেন পাঁচ জন। তারা হলেন—  হাফেজ মো. কামরুজ্জামান, হাফেজ আব্দুল ওয়ারেজ, হাফেজ আব্দুস সামাদ, হাফেজ মো. হেদায়েত ও হাফেজ আবু হানিফ।

মসজিদের খতিব হাফেজ মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘১৯২৭ সালে নওয়াব বাহাদুর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী এ মসজিদে সার্বক্ষণিক কোরআন তিলাওয়াতের ব্যবস্থা করেন। ১৯২৯ সালে তিনি মারা গেলেও চলমান রয়েছে তিলাওয়াত।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন রা পাঁচ জন হাফেজ দায়িত্বে আছি। নামাজের সময় ছাড়া এক মিনিটের জন্যও বন্ধ হয় না কোরআন তিলাওয়াত। টানা প্রায় ৯৫ বছর ধরে চলছে।’

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *