যুক্তরাষ্ট্রের ‘মায়ো ক্লিনিক’য়ের মতে, মানসিকচাপ হালকাভাবে নেওয়ার মতো কিছু নয়। এটি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা-সহ দীর্ঘস্থায়ী কোনো রোগের একটি প্রধান কারণ হতে পারে।
মানসিক চাপের অশনি সংকেত
সামান্যতম চাপ বৃদ্ধি কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ায় তবে অতিরিক্ত মানসিক চাপ ক্ষতিকর বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ক্যালিফোর্নিয়া’র ‘নিউপোর্ট হেল্থ কেয়ার’য়ের প্রধান ও নিবন্ধিত কাউন্সিলর ক্রিস্টিন উইলসন ‘ইট দিস নট দ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “মানসিক চাপ হল দৈনন্দিন জীবনে একটি সাধারণ অনুভূতি, বিশেষ করে যখন তা সাধারণ জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে। যখন এই চাপ অপ্রতিরোধ্য এবং দীর্ঘ হতে শুরু করে তখন তা মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।”
তাই তিনি মানসিক চাপ চিহ্নিত করা ও তা উপশমের দিকে গুরুত্বারোপ করেনমানসিক চাপের কারণে দেহে নানা রকমের লক্ষণ দেখা যায়। যেমন- ঘন ঘন ক্লান্তিবোধ, পেট ব্যথা, বুক ব্যথা ইত্যাদি অনুভব করা।এছাড়াও কিছু লক্ষণের মধ্যে রয়েছে বারবার নেতিবাচক চিন্তা করা, মেজাজ খারাপ থাকা ইত্যাদি।
পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও আপনজন থেকে দূরে যাওয়া, ঘুমে সমস্যা বা অতিরিক্ত ঘুম, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মনোযোগে সমস্যা ইত্যাদি সবই মানসিক চাপের লক্ষণ বলে মনে করেন, উইলসন।
অনেকেই মানসিক চাপ কমাতে ড্রাগ, অ্যালকোহল বা অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করেন। যা নানান রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে চাপও বৃদ্ধি করে।
উপরের সবকটি ধাপ যদি নিজের জন্য অকার্যকর মনে হয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
উইলসন সতর্ক করেছেন, “যদি এই চাপের অনুভূতি মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতার ওপর প্রভাব ফেলতে থাকে তাহলে পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “এমন অনুভূতিতে, গভীর শ্বাস প্রশ্বাসের অনুশীলন করার চেষ্টা করা যেতে পারে বা কাজ থেকে বিরতি নেওয়া অথবা কাছের বন্ধু বা আপনজনের সঙ্গে কথা বলা উপকার দিতে পারে।”
মানসিক চাপ কমাতে ইতিবাচক অভ্যাস
দৈনন্দিন এমন অনেক কাজ আছে যা মানুষের মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে।উইলসন মানসিক চাপ কমাতে কিছু কাজের পরামর্শ দেন, যার মধ্যে শরীরচর্চা অন্যতম। সাধারণ কাজ যেমন- হাঁটা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত ভালো ঘুম নিশ্চিত হওয়া, বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা, শখের বিষয় নিয়ে সময় কাটানো যা আনন্দ দেয় এমন কাজগুলো ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
উইলসন বলেন, “জীবনে চাপ কমানোর জন্য ছোট ছোট পদক্ষেপ নেওয়া সামগ্রিক সুস্থতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর একটি বড় প্রভাব ফেলতে পারে।”
তাই অতিরিক্ত চাপে ভুগছেন এমন লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং দৈনন্দিন রুটিনে কিছু ইতিবাচক অভ্যাসকে অন্তর্ভুক্ত করা শরীর ও মন দুয়ের জন্যই জরুরি।