July 27, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

থামছে না হরিণ শিকার, ধরাছোঁয়ার বাইরে শিকারিরা

1 min read

সুন্দরবন ও এর আশপাশের এলাকায় একের পর এক উদ্ধার হচ্ছে হরিণের চামড়া, মাংস, পাসহ হরিণ শিকারের বিভিন্ন উপকরণ। তবে রহস্যজনকভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন শিকারি ও পাচার চক্রের সদস্যরা।

অভিযোগ রয়েছে বন বিভাগ, কোস্ট গার্ডসহ স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই সুন্দরবনে হরিণ শিকার করে যাচ্ছেন শিকারিরা। সুন্দরবন থেকে সহজে বের হয়ে বরগুনার পাথরঘাটা হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাওয়ার ভালো ব্যবস্থা রয়েছে। এজন্য শিকারি ও পাচার চক্রের সদস্যরা বর্তমানে বরগুনার পাথরঘাটাকে বেছে নিয়েছেন হরিণের মাংস, চামড়া, শিং পাচারের রুট হিসেবে।চলতি মাসে বরগুনার পাথরঘাটার বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনবার উদ্ধার হয়েছে হরিণের চামড়া, মাংস, মাথা ও পা। সবশেষ বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সকালে হরিণঘাটা সংরক্ষিত বনের খুব কাছে জিনতলা বাঁধ এলাকায় মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে বস্তাভর্তি হরিণের মাংস, মাথা ও পা ফেলে পালিয়ে যান পাচারকারী দুই সদস্য। পরে বন বিভাগের কাছে সেগুলো হস্তান্তর করেন স্থানীয়রা।

এ ঘটনার মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় একই এলাকা থেকে উদ্ধার হয় হরিণের দুটি চামড়া। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কোস্ট গার্ড দাবি করে, পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় হরিণের চামড়া দুটি।

একের পর এক এমন ঘটনা চলতে থাকায় জনে মনে প্রশ্ন উঠেছে বন বিভাগ ও কোস্ট গার্ডের ভূমিকা নিয়ে। পাথরঘাটা টাইগার টিমের ‘বাঘবন্ধু’ ইমাম হোসেন নাহিদ  বলেন, ‘সুন্দরবনে হরিণ ও হরিণের বাচ্চার সংখ্যা বেড়েছে। মাঝে মধ্যেই বন থেকে বেরিয়ে লোকালয়ের আশপাশে চলে আসে বাচ্চা হরিণগুলো।’

হোসেন নাহিদের মতে, যে বাচ্চাগুলো অসাধু মানুষের হাতে পড়ে যায় তা আর জীবিত অবস্থায় বনে ফিরতে পারে না। তিনি বলেন, সুন্দরবনে হরিণ বাড়ায় শিকারিরাও উঠেপড়ে লেগেছেন। বনে ঢুকলেই হরিণ শিকারের ফাঁদ চোখে পড়ে।

শিকারিরা গ্রেফতার না হওয়ার কারণে জানতে চাইলে হোসেন নাহিদবলেন, বনের মধ্যে বনরক্ষীরা থাকলেও সংখ্যায় কম। এজন্য তারা অনেকটা অসহায়। আবার অনেক বিটে বনরক্ষীদের কাছে অস্ত্র নেই। তাই তারা চাইলেই শিকারিদের মুখোমুখি হতে পারেন না। আবার অনেক সময় বাধ্য হয়ে বা লোভে পড়ে শিকারিদের সঙ্গেই তারা জড়িয়ে পড়েন।‘অবশ্য কোস্ট গার্ডের ক্ষেত্রে বিষয়টা ভিন্ন। কোস্ট গার্ড কর্মকর্তারা মামলায় সাক্ষী হলে বদলি হয়েও সাক্ষী দিতে দূর-দূরান্ত থেকে আসতে বাধ্য হন। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিকারি বা পাচারকারীদের না ধরে শুধু মাংস, চামড়া উদ্ধার দেখায় কোস্ট গার্ড’, যোগ করেন পাথরঘাটা টাইগার টিমের ইমাম হোসেন নাহিদ।

এ বিষয়ে কোস্ট গার্ড পাথরঘাটা স্টেশন কমান্ডার লে. মোমেনুল ইসলাম বলেন, শুধু হরিণের মাংস ও চামড়া নয়, শিকারি ও পাচারকারীদের ধরতেও সবসময় চেষ্টা চালান তারা। সবশেষ কিছু অভিযানে পাচারকারী ও শিকারিরা পালাতে সক্ষম হলেও এর আগে তারা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সহজেই গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বর্তমানে যে চক্রটি তৎপর হয়েছে তাদের গ্রেফতারেও চেষ্টা চলছে।

পাথরঘাটা রেঞ্জের বন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন, বনের মধ্যে বিট কার্যালয়গুলোতে জনবল স্বল্পতায় তারা পেরে ওঠেন না। হরিণ শিকারি ও বনদস্যুরা সবসময় আগ্নেয়াস্ত্রসহ থাকে। তাদের প্রতিরোধে বন বিভাগের লাঠি ছাড়া কিছুই নেই। তবে হরিণের চামড়া বা মাংস উদ্ধার করলে মামলা দিচ্ছেন কোস্ট গার্ড সদস্যরা।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *