হাওরে পানি বাড়ায় ফসল কেটে নিচ্ছেন কৃষকরা

পাহাড়ি ঢলে কিশোরগঞ্জের হাওরে বাড়ছে পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় হাওরের সবকটি নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। এতে মাইকিং করে কৃষকদের দ্রুত ফসল কেটে নেওয়ার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টি হওয়ায় জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কালনী-কুশিয়ারা নদী পানি ৫৩ সেন্টিমিটার, ধনু নদীর পানি ১৬ সেন্টিমিটার, মেঘনা নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার ও বৌলাই নদীর পানি ১৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। বৌলাই নদীর পানি কালিয়াজুড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল আলম জানান, পানি বাড়তে থাকায় কৃষকদের ধান ৭০ ভাগ পাকলেই কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ধান কাটার জন্য পর্যাপ্ত কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার মেশিন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে হাওরের ৩০ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। সপ্তাহ খানেক সময় পেলে সব ধান কেটে ফেলা যাবে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানান, ধনু নদীর পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্য নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করায় আগাম বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।পানি বাড়তে থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে জিওলের বাঁধ। এ বাঁধের পাশে নতুন করে আরও একটি বাধ নির্মাণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে ফসল রক্ষা বাঁধগুলো অক্ষত থাকলেও পানি দ্রুত বাড়তে থাকায় আগাম বন্যায় ফসল ডুবির আশঙ্কা করছেন কৃষক।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, ফসল রক্ষা বাঁধগুলো এখনও অক্ষত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো মেরামত করা হয়েছে। ফসল ডুবিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।
চলতি মওসুমে জেলায় এক লাখ ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে চলতি মওসুমে এক লাখ চার হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
তবে দুই সপ্তাহ আগে উজানের ঢলে তলিয়ে যায় প্রায় সাড়ে ৬০০ হেক্টর জমির ধান। অনেক কৃষক জমির কোনো ধানই কাটতে পারেননি। অনেকে পানির নিচ থেকে আধপাকা ধান কেটেছেন।