সাবেক বিচারপতি জয়নুল ও তার ছেলের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন
1 min readজ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীন ও তার ছেলে মো. ফয়সাল আবেদীনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়। সংস্থাটির জনসংযোগ দপ্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, শিগগিরই তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক গোলাম মাওলা আদালতে চার্জশিট দাখিল করবেন।
২০১৯ সালের ২১ জুলাই অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক এই বিচারপতির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। মামলার তদন্ত শেষে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদনের সুপারিশ তুলে ধরে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। কমিশন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের মোট সম্পদ ১ কোটি ৩২ লাখ ৩৯ হাজার ১৭৪ টাকার সম্পদের কথা তার সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেন। তার ১৯৮২-১৯৮৩ কর বর্ষ থেকে ২০১০-১১ কর বর্ষ পর্যন্ত পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় হয়েছে হয়েছে ৬৪ লাখ ৭৪ হাজার ৩৯ টাকা। পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ অর্জিত সম্পদ ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ২১৩ টাকা। এসবের বিপরীতে তার আয়ের উৎস পাওয়া যায় ১ কোটি ৮৭ লাখ ৬৩ হাজার ৩০৪ টাকার। তার আয়ের তুলনায় ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৯ টাকা বেশি সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
আরও জানা গেছে, সাবেক এই বিচারপতি তার ছেলেকে ২৬ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছিলেন বলে ঘোষণা দেন। যা তার ছেলে ফয়সাল আবেদীনের আয়কর নথিতে উল্লেখ করেন। উক্ত ঋণ পরিশোধের তথ্য তার ছেলের আয়কর নথিতে উল্লেখ আছে। কিন্তু বিচারপতির আয়কর রিটার্নে ২৬ লাখ টাকা ঋণদান এবং ফেরত প্রাপ্তির কোনো তথ্য নেই। বিচারপতির দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে দাখিলকৃত ব্যাংক স্টেটমেন্টে (২০০৫-২০০৬ এবং ২০০৬-২০০৭ অর্থবছর ) তার অ্যাকাউন্ট থেকে ২৬ টাকা উত্তোলনের তথ্য নেই।
দুদক জানায়, সাবেক এই বিচারপতি ফয়সাল আবেদীনের আয়কর নথিতে তার দায় ক্রমান্বয়ে পরিশোধ দেখানো হলেও বিচারপতি মো. জয়নাল আবেদীনকে টাকা পরিশোধের কোনো দালিলিক প্রমাণ পাওয়া পাওয়া যায়নি।
সংস্থাটি মনে করে মো. জয়নুল আবেদীন তার অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ বৈধ করার জন্য ২৬ লাখ টাকা তার ছেলে ফয়সাল আবেদীনের ফ্ল্যাটে বিনিয়োগ করেন। এছাড়া মো. জয়নুল আবেদীন তার স্ত্রীর নামে ৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ থাকার হিসাব দাখিল করেন। দুদকের তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগদখলে রাখা এবং ছেলে ফয়সাল আবেদীনকে ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য প্রদত্ত ২৬ লাখ টাকা নিজ আয়কর নথিতে ও দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে প্রদর্শন না করে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।
ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত ২৬ লাখ টাকা জেনেশুনে বৈধ করার জন্য সম্পত্তি ক্রয় ও দখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় জয়নাল আবেদিন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারার অভিযোগ আনা হয়েছে।