November 22, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

যুক্তরাষ্ট্র চায় রাশিয়া দুর্বল হয়ে পড়ুক

1 min read

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার ফলে অন্য কোথাও হামলা চালানোর প্রবৃত্তি থেকে মস্কো বিরত থাকবে বলে আশা করেন তিনি। ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে পারলে তারা যুদ্ধে জয়ী হবে বলেও উল্লেখ করেন অস্টিন।

তিনি আরও জানিয়েছেন, ইউক্রেন এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে অতিরিক্ত ৭১৩ মিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তার জন্য বরাদ্দ দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

কিয়েভে রোববার রাতে তার সংক্ষিপ্ত সফর শেষ করে পোল্যান্ডে লয়েড অস্টিন সাংবাদিকদের বলেন যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় এই যুদ্ধের পরিণতিতে রাশিয়া সামরিক শক্তির দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়ুক।

তিনি বলেন, আমেরিকা দেখতে চায় রাশিয়া এতটাই দুর্বল হয়ে পড়বে যেন ইউক্রেনে হামলার মতো সক্ষমতা ভবিষ্যতে তাদের আর না থাকে।

পেন্টাগনের প্রধান বলেন, এই যুদ্ধে রাশিয়া এরই মধ্যে তাদের সামরিক ক্ষমতার অনেকটাই হারিয়েছে…আমরা দেখতে চাই দ্রুত সেই দুর্বলতা যেন তারা কাটিয়ে উঠতে না পারে। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্যে অবাক হয়েছেন অনেকেই।

তবে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী যদি এমন ইঙ্গিত দিয়ে থাকেন তবে এর সাথে হয়তো অনেক পশ্চিমা মিত্র দেশই একমত হবে না।

কুয়ালালামপুরে মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সমরবিদ্যা বিশেষজ্ঞ ড. সৈয়দ মাহমুদ আলী মনে করেন, এই যুদ্ধে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও একটি পক্ষ এবং এই যুদ্ধ থেকে তারা যে, উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায় তা অন্য দুই পক্ষের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা।

ড. আলী বলেন, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মূল লক্ষ্য নিজ নিজ কিছু আঞ্চলিক এবং অভ্যন্তরীণ স্বার্থ উদ্ধার বা রক্ষা কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য ‘বৃহত্তর ভূ-রাজনীতি’।

ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার চেয়েও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এই যুদ্ধের লক্ষ্য বিশ্ব ভূ-রাজনীতিতে রাশিয়া যেন এরপর মাথা তুলে না দাঁড়াতে পারে। রাশিয়া যেন যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছার বিরোধী কোনো পদক্ষেপ না নিতে পারে।

সে জন্য আমেরিকা চাইছে রাশিয়াকে এই যুদ্ধে এমনভাবে পরাভূত করা, তাদের এমন ক্ষতি সাধন করা যাতে রুশ নেতারা ভবিষ্যতে আর কোনোদিন ইউক্রেনে হামলা চালানোর পদক্ষেপ না নেন।

কিয়েভে রোববার রাতের সফরে অস্টিনের সঙ্গী ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনও। এই যুদ্ধে রাশিয়ার কী পরিণতি আমেরিকা দেখতে চায় তা নিয়ে তার সহকর্মী লয়েড অস্টিনের মতো এমন কোনো বক্তব্য ব্লিনকেন দেননি যা নিয়ে কাটাছেড়া হতে পারে। তবে এই যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় দেখাই যে আমেরিকার মূল লক্ষ্য তা স্পষ্ট করেই বলেছেন তিনি।

কিয়েভ থেকে ওয়াশিংটনে ফিরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়া তাদের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে এবং ইউক্রেন সফল হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা জানিনা এই যুদ্ধ সামনের দিনগুলোতে ঠিক কিভাবে এগুবে, কিন্তু আমরা এটা জানি যে ভ্লাদিমির পুতিন যতদিন টিকবেন স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেন তার চেয়ে বেশি দিন টিকবে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনের প্রতি ভবিষ্যতে আমাদের সাহায্য অব্যাহত থাকবে। চূড়ান্ত সাফল্য না আসা পর্যন্ত এই সহায়তা চলবে।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে তাদের বৈঠকের সময় মার্কিন এই দুই মন্ত্রীই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকা ইউক্রেনকে অতিরিক্ত ৭০ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য দেবে এবং কিয়েভে পর্যায়ক্রমে মার্কিন কূটনীতিকরা ফিরে আসবেন।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আবারও নিশ্চিত করা হয়েছে যে ইউক্রেনের মাটিতে মার্কিন কোনো সৈন্য লড়াই করতে যাবেনা বা ইউক্রেনের আকাশে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করে আমেরিকা তা কার্যকরী করবে না।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *