November 23, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে ভয়ঙ্কর মাদক

1 min read

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে চোরাচালানের মাধ্যমে উচ্চমূল্যের মাদক আইস ও ইয়াবা আসছেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারির কারণে আইস বা ক্রিস্টাল মেথের পাশাপাশি ইয়াবা পাচারে পেশাদার জেলেদের বেছে নেয়া হচ্ছে। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ দাংগরপাড়া এলাকার লেলু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শাহ। মাছ ধরার কাজ করেন একই এলাকার মন্জুর মাঝির ট্রলারে। সম্প্রতি তাকেই মিয়ানমারে বন্ধক দিয়ে আনা হয়েছে ৫ লাখ ইয়াবার একটি বড় চালান। ঘটনা এখানেই শেষ নয়। সপ্তাহ পার হওয়ার পর টাকা পরিশোধ না করায় ওই যুবকের কপালে নেমে এসেছে ভয়াবহ নির্যাতন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এ ঘটনার ভিড়িও করে পাঠানো হয়েছে। ভিড়িওতে দেখা গেছে, এক দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে খুন করারও হুমকি দেয়া হচ্ছে মিয়ানমারে আটক থাকা যুবককে। পরে জমি বন্ধক রেখে দেড় লাখ টাকা দিয়ে মুক্তি পান ওই যুবক। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে নেমে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুধু এ ঘটনাই নয়, এ ধরনের ঘটনা এখন অহরহ ঘটছে টেকনাফে। নির্যাতনের ভিড়িও ভাইরাল হওয়ার পর বন্ধক দিয়ে আসার সঙ্গে জড়িতরা এখন এলাকা ছাড়া।

জানা গেছে, ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে মন্জুর মাঝির ট্রলারে মাছ ধরার জন্য অনেকের সঙ্গে এলাকা ছাড়েন টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ দাংগরপাড়া এলাকার লেলু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শাহ। এরপর তাকে মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার আনাডং এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে রাখাইনের জিম্মায় রেখে ৫ লাখ ইয়াবা আনেন মন্জুরের শ্যালক শুক্কুর। মধ্যস্থতা করেন মন্জুরের স্ত্রী শামসুন্নাহার। ইয়াবা আনার পর ৩ দিন পর টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি। এরপর দফায় দফায় সময় নিয়ে টাকা দিতে ব্যর্থ হয় শুক্কুর ও শামসুন্নাহার।

এরপর শুরু হয় মোহাম্মদ শাহের ওপর নির্যাতন। পরে সেই ভিড়িও ফুটেজ পাঠানো হয় টেকনাফের স্থানীয় অনেকের কাছে। তথ্যপ্রযুক্তি ও আধুনিকায়নের নেতিবাচক প্রভাব, পারিবারিক-সামাজিক চাপসহ নানান কারণে তরুণদের মধ্যে হতাশা-বিষন্নতা ভর করছে। এর জেরে ঘটছে নৈতিক মূলল্যবোধের অবক্ষয়, যার চুড়ান্ত পরিস্থিতিতে মাদকাসক্তিতেও ঝুঁকছেন অনেক তরুণ-তরুণী। দিন দিন এমন অবসাদগ্রস্থ তরুণ-তরুণীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় বাড়ছে মাদকের চাহিদা। সেই চাহিদার জোগান দিতে বাড়ছে চোরাচালানও। এই চাহিদার প্রয়োজন মেটাতেই মাদকের ধরনও পাল্টাচ্ছে বছর বছর।

জানা গেছে, এক সময় দেশের মাদকের বাজারে গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবার আধিপত্য থাকলেও সম্প্রতি বিস্তার ঘটছে আলোচিত ক্ষতিকর মাদক আইস (মেথামেফেটামিন) বা ক্রিস্টাল মেথের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলেছেন, আইসে ইয়াবার মূল উপাদান অ্যামফিটামিনের পরিমাণ অনেক বেশি। মানবদেহে ইয়াবার চেয়েও বহুগুণ ক্ষতি করে আইস। এটি সেবনের ফলে অনিদদ্রা, অতি উত্তেজনা, স্মৃতিভ্রম, মস্তিস্ক বিকৃতি, স্টোক, হ্নদরোগ, কিডনি ও লিভার জটিলতা এবং মানসিক অবসাদ ও বিষন্নতার ফলে আত্নহত্যার প্রবণতা বাড়ে। শারীরিক ও মানসিক উভয়ক্ষেত্রে রয়েছে এর নেতিবাচক প্রভাব।এ মাদকের প্রচলনের ফলে তরুণ-তরুণীদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত ও অস্বাভাবিক আচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই মাদকে আসক্ত হয়ে তরুণ-যুবকেরা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। মিয়ানমার এ দেশে মাদক ছড়িয়ে দিয়ে যুব সমাজকে ধবংস করে চলেছেন। আর এখানকার মাদকের চাহিদা বিবেচনা করে চোরাকারবারিরা নানা কৌশল গ্রহণ করে। এ দেশে বিভিন্ন দেশ থেকে মাদক আসলেলও বেশিরভাগ আসে মিয়ানমার ও ভারত থেকে। গত ১২ মার্চ টেকনাফ থানা প্রাঙ্গনে ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে কক্সবাজার জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যে কোন বিনিময়ে টেকনাফকে মাদক মুক্ত করা হবে।

 

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *