নারী হত্যার অভিযোগে লন্ডনে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
1 min readযুক্তরাজ্যের লন্ডনে পুলিশের বিরুদ্ধে এক নারীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত সপ্তাহে খুন হওয়া ৩৩ বছর বয়সী ওই নারীর স্মরণে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন হাজারো মানুষ। করোনার বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই লন্ডনের ক্লেপহাম কমনে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়। এসময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
গত ৩ মার্চ সারাহ ইভারার্ড নামের ওই নারী বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন। তাকে সর্বশেষ দক্ষিণ লন্ডনের ক্লেপহাম কমনে দেখা গিয়েছিল। একজন পুলিশ অফিসারকে অপহরণ ও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার ভোর থেকেই মানুষজন সারাহকে শ্রদ্ধা জানাতে ক্লেপফাম কমনের ব্যাসস্ট্যান্ডে ফুল ও মোমবাতি নিয়ে হাজির হন। এসময় নারীরা রাত্রিকালীন দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে উপস্থিত পুলিশের উদ্দেশে বিক্ষোভকারীরা ‘আপনাদের জন্য লজ্জা’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
ক্যাম্পেইন গ্রুপ গণজমায়েতের পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধান ক্রেসিডা ডিক জানান, করোনা মহামারির কারণে কোনো ধরনের গণজমায়েত করা যাবে না। এটা বেআইনি ও অনিরাপদ।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ক্লেপহাম কমনে গণজমায়েত বাড়তে থাকলে পুলিশ সেখান থেকে নারীদের সরিয়ে দিতে শুরু করে। অবশ্য কতোজনকে সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে; সেটা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তা জানাতে পারেনি।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেন, পুলিশের প্রতিক্রিয়া যথাযথ ও সময়োপযোগী ছিল না। এ বিষয়ে ক্রেসিডা ডিকের কাছে জরুরি ব্যাখ্যা চাইবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল জানান, এ বিপর্যয়কর ঘটনার জন্য পুলিশের কাছ থেকে উত্তর চাইবেন তারা।
এর আগে শনিবার প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছিলেন যে তিনি ও ক্যারি সাইমন্ডস ইভারার্ডের স্মরণে মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। তিনি নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে জানান।
এর আগে, শনিবার সকালে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযুক্ত ৪৮ বছর বয়সী পুলিশ অফিসার ওয়েন কোজেন্সকে হাজির করা হয়। আদালতে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তাকে মঙ্গলবার পুনরায় আদালতে হাজির করা হবে। কোজেন্সের আইনজীবী অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে আত্মপক্ষ সমর্থনের আবেদন জানায়নি।
গত বুধবার তল্লাশি চালিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডন থেকে ৫০ মাইল দূরে উডল্যান্ড থেকে সারাহ ইভারার্ডের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
কোজেন্স ২০১৮ সালে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগদান করেছিলেন। গ্রেফতারের আগে লন্ডন অবস্থিত দূতাবাস ও সংসদ রক্ষার দায়িত্বে থাকা একটি সশস্ত্র ইউনিটে কাজ করতেন তিনি। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।
এই হত্যাকাণ্ড যুক্তরাজ্যকে হতবাক করেছে। বিশ্বজুড়ে আবারও নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বহু নারী ও মেয়ে পুরুষদের দ্বারা হয়রানির শিকার হওয়ার কাহিনী সামাজিকমাধ্যমে শেয়ার করার জন্য অনুরোধ জানানো শুরু করে।