ছড়িয়ে পড়ছে মাঙ্কিপক্স, ডব্লিউএইচও বলছে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব
1 min readএকের পর এক দেশে ছড়িয়ে পড়ছে অতি সংক্রামক ‘মাঙ্কিপক্স’। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আমিরাতসহ তিন দেশে এই ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। আমিরাত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটিতে প্রথম কেস রেকর্ড করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই নতুন করে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯৭০ সালে প্রথম গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে এই সংক্রামক ভাইরাসের খোঁজ মেলে। এখন পর্যন্ত ১৮টি দেশে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। আমিরাত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি পশ্চিম আফ্রিকায় সফর করে এক ব্যক্তি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মঙ্গলবার চেক প্রজাতন্ত্র এবং স্লোভেনিয়াতেও একজন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
আফ্রিকার বাইরে এখন পর্যন্ত ২৩৭টি কেস শনাক্ত হয়েছে। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, আফ্রিকার বাইরে যেসব দেশে সাধারণত মাঙ্কিপক্স দেখা যায় না, সেখানে এর বিস্তার ঠেকানো সম্ভব। এই রোগে আক্রান্তদের দেহে গুটি দেখা দেয় এবং জ্বর আসে।
তবে বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কম। মধ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকার দুর্গম অঞ্চলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেশি দেখা যায়।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদীয়মান রোগ বিষয়ক প্রধান ভ্যান কেরখোভ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, পরিস্থিতি এখনো আয়ত্তের মধ্যে রাখা সম্ভব। আফ্রিকার বাইরে এই ভাইরাস এ পর্যন্ত ১৬টির বেশি দেশে শনাক্ত করা হয়েছে। গত ৫০ বছরের মধ্যে আফ্রিকার বাইরে এই ভাইরাস এর আগে এত ব্যাপকভাবে ছড়ায়নি।
যুক্তরাজ্যে এ পর্যন্ত ৫৭ জনের মাঙ্কিপক্স ধরা পড়েছে। এই রোগে আক্রান্ত কারও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে এসেছেন এমন যে কাউকে ২১ দিন পর্যন্ত আলাদা থাকার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে জার্মানি বলছে, মাঙ্কিপক্স আরও বেশি ছড়াতে পারে এমন আশঙ্কায় তারা ৪০ হাজার ডোজ টিকা প্রস্তুত রাখতে বলেছে।
তবে মাঙ্কিপক্স সাধারণত মানুষ থেকে মানুষে সহজে ছড়ায় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঙ্কিপক্সের হুমকিকে করোনাভাইরাস মহামারির সঙ্গে তুলনা করা ঠিক হবে না।
সংক্রমণ আসলে ঘটছে একজনের চামড়ার সঙ্গে আরেকজনের শরীরের চামড়ার সংস্পর্শ থেকে। আর এপর্যন্ত যাদের এই সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাদের লক্ষণ বেশ মৃদুই বলা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আরেক কর্মকর্তা জানান, এরকম প্রমাণ এখনো নেই যে এই ভাইরাসের কোনো মিউটেশন হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুটিবসন্ত বিষয়ক বিভাগের প্রধান রোজামন্ড লুইজ বলেন, এই গ্রুপের ভাইরাসগুলোতে সাধারণত মিউটেশন বা ধরণ পরিবর্তন হতে দেখা যায় না। এগুলো মোটামুটি একই রকম থাকে।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, কিছু নির্দিষ্ট গ্রুপের মানুষ হয়তো অন্যান্যদের চাইতে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। কিন্তু বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা খুবই কম।
তবে খুব ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে এই রোগ আরও ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশ আছে। বিশেষ করে যেসব মানুষ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন তারা ঝুঁকিতে আছেন।