November 21, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

1 min read

আজ ঐতিহাসিক ২৩ জুন। আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সব আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া দলটি এবার পা রাখছে তিয়াত্তর বছরে। এ উপলক্ষ্যে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। এতে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লক্ষ্যই হলো দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়া এবং বিশ্বে বাঙালি জাতিকে একটি মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস দলের মধ্যে শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো ও গণতন্ত্রের চর্চা অটুট থাকলে কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।’

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ পথচলায় অর্জন যেমন পাহাড়সম, তেমনই এসেছে নানা বাধাবিপত্তি, দুর্যোগ-দুর্বিপাকও। জাতির পিতাকে হত্যা, দলে ভাঙন, নেতাদের দলত্যাগ, সামরিক জান্তাদের রোষানল, নিষেধাজ্ঞা, হামলা-মামলাসহ নানা সংকটের সম্মুখীন হতে হয়েছে দলটিকে। তবে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকের আওয়ামী লীগ দেদীপ্যমান। টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় দলটি। এর আগে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একবার ক্ষমতাসীন ছিল আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা এখন দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় দেশে দারিদ্র্য কমেছে। বেড়েছে মাথাপিছু আয়। স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ বাস্তব। এছাড়া আরও অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলেছে। সাম্প্রদায়িক শক্তি ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান দেশ-বিদেশে প্রশংসতি হচ্ছে। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, আওয়ামী লীগের লক্ষ্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে কিছু বাধা থাকলেও আওয়ামী লীগ সঠিক পথেই রয়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাস এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিরোধী দল না থাকাসহ বেশকিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে দলের সামনে। তবে তৃণমূল পর্যন্ত দলকে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী করে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েও কাজ করছে আওয়ামী লীগ।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান যুগান্তরকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। করোনাভাইরাস না এলে আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম। তিনি বলেন, আমাদের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ হলো তিনটি। ১ নম্বর চ্যালেঞ্জ হলো-দেশে এখনো ভালো একটা বিরোধী দল গড়ে উঠেনি। বিএনপি-জামায়াত কেউ বাংলাদেশকে ভালোবাসে না। এরা স্বাধীনতার পক্ষের বিরোধী দল না। আমাদের দুই নম্বর চ্যালেঞ্জ হচ্ছে-কোভিড-১৯ মোকাবিলা। এর জন্য অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা-সবকিছুই সমস্যায় রয়েছে। তিন নম্বর চ্যালেঞ্জ হলো-সাম্প্রদায়িকগোষ্ঠী ও জঙ্গিবাদ প্রতিহত করা। আমি মনে করি, এই তিনটি আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ এবং এগুলো আমরা মোকাবিলা করতে পারব। কারণ আমরা সঠিক রাস্তায় আছি। পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যা করে ঘাতকরা। এরপর নানা বাধাবিপত্তি পায়ে ঠেলে ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। চার যুগ ধরে দলটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে দলটি ক্ষমতাসীন হয়। মাঝে একবার ক্ষমতার বাইরে থেকে এবং ১/১১ মেকাবিলা করে টানা তৃতীয়বারসহ চতুর্থবার ক্ষমতায় আছে দলটি। এই সময়ে দেশের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক ভিডিওবার্তায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, মহান ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রামসহ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও মহৎ অর্জনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর নাম। অনেক বাধা অতিক্রম করে সাধারণ জনগণের ভালোবাসায় অত্যন্ত দক্ষতা, সততা ও সফলতার সঙ্গে দেশের সেবা করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রমাণ করেছেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের মানুষ নিরাপদে থাকে। আগামী দিনের পথচলায় তাই জনগণকে আওয়ামী লীগের পাশে থাকার আহ্বান জানান আমির হোসেন আমু।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য। তার দুটি স্বপ্ন ছিল। একটি হলো স্বাধীনতা আর অন্যটি হলো ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ। একটি স্বপ্ন তিনি পূরণ করে গেছেন। অন্যটি পূরণে যখন কাজ করছিলেন, তখনই তাকে হত্যা করা হয়। তিনি আরও বলেন, ১৯৮১ সালে আমরা বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিই। সেই পতাকা হাতে নিয়ে নিষ্ঠা, সততা ও দক্ষতার সঙ্গে ৪০ দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। চারবার তিনি রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। আমরা আশা করি, তার হাত ধরেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ হবে।’ ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার স্বামীবাগে কেএম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর উদ্যোগে এক কর্মী সম্মেলনের মধ্য দিয়ে গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সভাপতি, টাঙ্গাইলের শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক, শেখ মুজিবুর রহমানকে (কারাবন্দি ছিলেন) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয় প্রথম কমিটি। এই দলটিই ১৯৫৫ সালে ধর্মনিরপেক্ষতাকে আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করে। দলটির নামকরণ হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নাম হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

 

About The Author