আল জাজিরার ডকুমেন্টারিতে বাংলায় কণ্ঠ দিয়েছেন যারা
1 min readকাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সরকারবিরোধী বিতর্কিত ডকুমেন্টারি ‘অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ এর বাংলা সংস্করণের রেকর্ডিং লন্ডনে হয়েছে বলে প্রমাণ মিলেছে। বেশকিছু অংশ সমন্বয়ের পাশাপাশি এতে কণ্ঠও দেওয়া হয়েছে ব্রিটেন থেকে। যারা কণ্ঠ দিয়েছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন বিষয়টি স্বীকার করলেও, অনেকেই এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।
বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী শহর লন্ডন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের অনেক ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে এ শহরটির। বর্তমানে সরকারবিরোধী নানা ষড়যন্ত্রের ছক আঁকা হয় এ শহর থেকেই। এমনই এক ষড়যন্ত্রের নীল নকশার কথা জানতে পারে সময় সংবাদ।
সম্প্রতি প্রকাশ পাওয়া আল জাজিরার সরকারবিরোধী বিতর্কিত ডকুমেন্টারি, ‘অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ এর সমন্বয় কাতার থেকে হলেও, এর বেশ কিছু অংশের সমন্বয় ও সম্পাদনার কাজ হয়েছে লন্ডনে। তথ্যচিত্রটির বাংলা সংস্করণের রেকর্ডিং লন্ডন থেকেই হয়েছে বলেও প্রমাণ মিলেছে। আল জাজিরার ঘণ্টাব্যাপী তথাকথিত অনুসন্ধানী তথ্যচিত্রটা দেখার পর অনেকের মতো অবাক হন তৌহিদ ফিতরাত হোসাইনও। পুরো তথ্যচিত্রে ডাবিংকৃত কণ্ঠস্বর তার দীর্ঘদিনের বন্ধু মুরাদ খান, মিতা চৌধুরী এবং পি দাশ বাবু’র বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
কে ছিলেন ঘটনা শুরুর নেপথ্যের কারিগর। লীসা গাজী। যাকে অনেকেই চেনেন নাট্যকর্মী ও লেখক হিসেবে। জানা যায়, লিসা গাজী আগ্রহীদের তথ্যগুলো নিয়ে পুরো বিষয়টি সমন্বয় করেন। তবে লীসা গাজী সমন্বয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে সময় সংবাদকে বলেন, তিনি শুধুমাত্র ভয়েস ওভার দেয়ার জন্য আগ্রহীদের তথ্যগুলো একটি এজেন্সিকে দিয়েছেন মাত্র।
ডকুমেন্টারিতে যারা ভয়েস দিয়েছেন তারা জানতেন, এটি আল জাজিরার একটি ডকুমেন্টারির জন্য দিচ্ছেন। তাদেরই একজন জিয়াউর রহমান সাকলাইন। যিনি সংবাদ উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন লন্ডনের একটি বাংলাদেশি টিভি চ্যানেলে। ভয়েস দেয়ার সময়ের ছবি ও লোকেশন ট্যাগ করে ফেসবুকে তিনি গত ৮ জানুয়ারি একটি পোস্ট করেন, যদিও পরে ফেসবুক পোস্টটি সরিয়ে ফেলেন সাকলাইন।
ধারণা করা হচ্ছে, আল জাজিরার ডকুমেন্টারির বাংলা সংস্করণে তাসনিম খলিলের সাক্ষাৎকারের অংশটুকু বাংলায় কণ্ঠ দেন সাকলাইন। এ বিষয়ে একাধিকবার সাকলাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
বিষয়টি যখন আলোচনার তুঙ্গে এবং সন্দেহের আঙুল লীসা গাজীর দিকেই তখন হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে আত্মপক্ষ সমর্থন করে টেক্সট লিখেন তিনি। সেখান থেকে জানা যায়, ডিসেম্বরের দিকে তিনি জানতে পারেন তথ্যচিত্রটি একটি বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে নির্মিত এবং এটি বাংলাদেশে প্রচারিত হবে। তিনি সেই প্রোডাকশন হাউজকে তার ভয়েসের তিনটি স্যাম্পল ইমেইলের মাধ্যমে পাঠালেও তা নির্বাচিত হয়নি।
পুরো ঘটনাটি ব্রিটেনের বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কলঙ্ক লেপন করেছে বলে ধারণা অনেকের।
শুরু থেকে শেষ- পুরো বিষয়টি নিয়ে আলজাজিরা এবং যারা কণ্ঠ দিয়েছিলেন তারা বেশ গোপনীয়তা রক্ষা করেছিলেন। তবে যারা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে কণ্ঠ দিয়েছিলেন তাদের প্রায় সবাই প্রগতিশীল ধারার। এখন দেখার বিষয়, এর মধ্যেও অন্য কোনো ষড়যন্ত্রের আভাস রয়েছে কিনা?