দেশের শীর্ষ ১০ ধনী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে যারা
1 min readএকটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি নির্ভর করে সেদেশের ব্যসায়ীদের ওপর। যে দেশ ব্যবসা-বাণিজ্যে যতো বেশি স্বনির্ভর এবং কৌশলী, পৃথিবীতে তারা সবচেয়ে এগিয়ে। চীনকেই দেখুন, শুধু ব্যবসায়ীক মারপ্যাঁচেই এই দেশটা আমেরিকাকে ঘোল খাইয়ে বিশ্ব অর্থনীতির কাণ্ডারীতে পরিণত হচ্ছে ধীরে ধীরে।
আমাদের দেশটা ছোট, বিশ্বের অর্থনীতির সঙ্গে তুলনা করলে চুনোপুঁটিই বলা যায়। তবুও আমাদের অর্থনীতির চালিকাশক্তিটা সেই ব্যবসায়ীদের হাতেই। এই ব্যসায়ীদের মধ্যে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর মালিক- সবাই আছেন। আমাদের আজকের আয়োজনে থাকছে বাংলাদেশের সেরা দশ ব্যবসা প্রতিষ্টান এবং ব্যবসায়ীকে নিয়ে। যাদের ওপর নির্ভর করে আমাদের অর্থনীতির উন্নতি-অবনতি।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগই কিন্ত পরিবারকেন্দ্রীক। অর্থাৎ দেশের কয়েকটা পরিবারের হাতেই ঘুরেফিরে পুরো দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নির্ভর করে। চলুন জেনে নায়ে যাক সেই সব প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে- সরিষার তেল উৎপাদন দিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু। তারা এখন বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম।
যে তীর আটা, ময়দা, সুজি ছাড়া আপনার চলেই না। সেই সব পণ্যই সিটি গ্রুপে উৎপাদিত। এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুধু খাবার- দাবারের মধ্যেই তাদের ব্যবসা সীমাবদ্ধ রাখেননি। করেছেন হাসপাতালও। ১৯৭২ সালে ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান এই সিটি গ্রুপের গোড়াপত্তন করেন। তিনি শুরু করেছিলেন সিটি অয়েল গ্রুপ দিয়ে। কালের বিবর্তনে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়ে আজকের এই অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে তারা। প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক এই প্রতিষ্ঠানের আয়তাধীন বিভিন্ন কারখানায় কাজ করছে। প্রতি বছর ১০০ কোটি টাকার বেশি মুনাফা আয় করে সিটি গ্রুপ।
১৯৭৮ সালে কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা মিলে তাদের সম্পদ একত্রিত করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং কোম্পানি গঠন করে। নাম দেন ইউনাইটেড গ্রুপ। তারা আশা করেছিল তাদের অনন্য ব্যবসা দৃষ্টিকোণ তাদেরকে এমন একটি ব্যবসা গঠনে সাহায্য করবে। যা যুগের পর যুগ টিকে থাকবে এবং একদিন দেশের ব্যবসায়িক জগতের পথপ্রদর্শক হবে। সেই দিন হতে চল্লিশ বছর পর, আজ ইউনাইটেড গ্রুপ এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় দেশের সবচেয়ে স্বীকৃত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিনিত হয়েছে।
শূন্য থেকে শুরু করা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আজ মহীরুহ। হাসপাতাল থেকে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় আরো অনেক অনেক প্রতিষ্ঠানের মালিক তারা। শিক্ষা, চিকিৎসা ছাড়াও বিদ্যুৎ, জ্বালানি, রেস্তোরাঁ, আবাসন, হোটেল থেকে শুরু করে বেসরকারি বন্দর, রয়েলস্টিকসহ নানা খাতে তাদের সফল বিচরন। তাদের সর্বমোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। সালমান এফ রহমানের প্রতিষ্ঠিত বেক্সিমকো গ্রুপ বাংলাসেধের শীর্ষে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অষ্টম। বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড বা বেক্সিমকো হলো একটি বাংলাদেশী বহুজাতিক নিয়ন্ত্রক কোম্পানি। কোম্পানিটি ১৯৭০ এর দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমন্বিত কোম্পানি। দেশের স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধনের সবচেয়ে বৃহৎ অংশ এই কোম্পানির।
মূলত ওষুধ রফতানি দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন সালমান এফ রহমান। এরপর গার্মেন্টস, আবাসন, মিডিয়াসহ জ্বালানি খাতেও রয়েছে তাদের বিনিয়োগ। বর্তমানে এর পণ্য সমূহ প্রায় ১০৩ টি দেশে রপ্তানি করা হয়। পূর্ব ইউরোপ এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় এর বস্ত্র বিপণনকেন্দ্র আছে। ৬৫ হাজার কর্মী কাজ করে তাদের অধীনে। মোট সম্পদের পরিমাণ দেড় বিলিয়নেরও বেশি।
সামান্য বিড়ি তৈরির কারখানা থেকে দেশের সেরা করদাতা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় উঠে এসেছে সেটি আকিজ গ্রুপ। ৪০ এর দশকে বিড়ি দিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও এখন টেক্সটাইল, তামাক, সিরামিক, প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং, ওষুধ, ভোক্তা পণ্যসহ আরো অনেক ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছে আকিজ গ্রুপ। বর্তমানে তাদের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস আকিজ ফুড এন্ড ব্যাভারেজ থেকে। রয়েছে হাসপাতালও। ৭০ হাজারেরও বেশি কর্মচারী রয়েছে এই গ্রুপের অধীনে। টানা কয়েক বছর সর্বোচ্চ করদাতার প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল আকিজ গ্রুপ।
পুষ্টি তেল বিক্রি করে দেশের সবার কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছিল এই প্রতিষ্ঠানটি। ১৯৭২ সালে জন্ম নেয়া এই প্রতিষ্ঠানটির অধীনে রয়েছে জাহাজ ভাঙার কারখানা, স্টিল মিল, চা বাগান, কাগজের মিলসহ নানা ধরনের ব্যবসা। ৩০ হাজার কর্মী কাজ করে এই গ্রুপের বিভিন্ন কারখানায়। আড়াইশ কোটি টাকার রেভিনিউ নিয়ে দেশের শীর্ষ ধনীর তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে এই গ্রুপ।
রাঁধুনি গুঁড়া মশলা, মাছরাঙ্গা টেলিভিশন, স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল, টয়লেট্রিজ, কনজ্যুইমার প্রোডাক্ট রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসার তালিকায়। স্যামসাং এইচ চৌধুরীর হাত ধরে এই গ্রুপ শূন্য থেকে দেশের শীর্ষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় পাঁচ নম্বরে রয়েছে। দেশের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এটি। বিয়েল এস্টেট থেকে শুরু করে ব্যাংক ব্যবসার সঙ্গে রয়েছে তাদের সম্পৃক্ততা। ৩০ হাজার কর্মী কাজ করে তাদের অধীনে।