নারী প্রার্থীর জন্য ভোটারের বাড়ি বাড়ি দুই সতীন! সঙ্গে স্বামীও
1 min readগল্প, উপন্যাসে ‘সতীন’ মানেই খল চরিত্র, ঝগড়াটে বা খারাপ কিছু বোঝাই। কিন্তু বাস্তবে এর ব্যতিক্রমও আছে। বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মাজেদা বেগম ৪, ৫ ও ৬নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর তাঁর জয়ের জন্য সতীনরা দিনরাত ভোট চাচ্ছেন ভোটারদের কাছে।
তিন সতীন একই সঙ্গে ভোটারের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়ায় বিষয়টি ভোটারদের মধ্যেও আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কয়েকজন ভোটার বলেছেন, বর্তমান সময়ে যখন সতিনদের মধ্যে মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত হয় না, তখন এক সতীনের জয়ের জন্য আরো দুই সতীন অক্লান্ত পরিশ্রম করে ভোট চাওয়ার বিষয়টি একটি বিরল ঘটনা।
একাধিক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাজেদা বেগম নারী আসনের ২নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে ‘আনারস’ প্রতীক নিয়ে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদিন ভোরে তাঁরা তিন সতিন মিনু বেগম, রেনু বেগম ও মাজেদা বেগম স্বামী আব্দুস সামাদকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় বের হন। গভীর রাত পর্যন্ত জয়ের আশায় ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি ক্লান্তিহীনভাবে ছুঁটে বেড়াচ্ছেন।
বন্তেঘরী গ্রামের ভোটার ফজলুর রহমান (৪৫) বলেন, ‘সতীন মানেই যে খারাপ কিছু নয় তা আব্দুস সামাদের স্ত্রীরা প্রমাণ করেছেন। তাঁদের এই তিন সতিনের প্রচারণা ভোটারদের মধ্যে আলাদা একটা উৎসাহ নিয়ে এসেছে। মাজেদা বেগম এখন এ পৌরসভার আলোচিত প্রার্থী।
মিনু বেগম বলেন, ‘আমাদের আলাদা আলাদা হাঁড়ি। কিন্তু সবাই আপন বোনের মতো। শুধু ভোট নয়, সকল সুখে-দুখে আমরা একে অন্যের পাশে দাঁড়াই।’
প্রার্থী মাজেদা বেগম বলেন, ‘সতীন মানেই মনে করা হয় শত্রু। কিন্তু এক্ষেত্রে আমি সৌভাগ্যবান। সতীনরা আমার কাছে বোনের মতো। অতি আপনজন। আমি নির্বাচিত হতে পারলে এলাকায় নারী নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবো।’
আব্দুস সামাদ বলেন, ‘আমার স্ত্রীদের নিয়ে আমি খুশি। তাঁরা সব সমস্যাকে মিলেমিশে মানিয়ে নিতে পারে। আর তাঁদের এই মধুর সম্পর্কের কথা ভোটারেরা জানতে পেরে সকলেই অনেক খুশি।’
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আব্দুস সামাদের চার স্ত্রীর। এর মধ্যে বড় স্ত্রী সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করার জন্য নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারছেন না। তবে এতে তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তিনি টাকা পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করছেন। মাজেদা বেগম বর্তমানেও ওই সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করছেন। গতবারেও একইভাবে প্রচারণা চালিয়ে তাঁরা ভোটারদের মন জয় করেছিলেন।
উল্লেখ, এই ওয়ার্ডে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিদা আরো দুজন রয়েছে। ভোটার সংখ্যা ৫ হাজার ৪৯৫ জন। তৃতীয় ধাপে আগামী ৩০ জানুয়ারি এই পৌরসভার ভোট গ্রহণ হবে।