অর্থনীতির মতো দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে পুঁজিবাজার: সালমান এফ রহমান
1 min readপ্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নেতৃত্বে দেশের পুঁজিবাজার অর্থনীতির মতোই দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে। পুঁজিবাজার একই সাথে অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, বিএসইসির চেয়ারম্যান বন্ড, সুকুক বন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড , গ্রীণ ফিল্টসহ যে বিষয়গুলো নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কথা বলেছেন তা কার্যকর হলে মার্কেট অনেক দূর এগিয়ে যাবে। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই একটা পরিবর্তন বাজারে লক্ষ্য করা গেছে। যা খুবই ইতিবাচক। তাই এই কমিশনের প্রতি আস্থাও বেড়েছে বিনিয়োগকারীদের।
শনিবার (৩১ অক্টোবর) বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এবং ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিজম ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত “টুওয়ার্ডস সাসটেইনেবল ডেভেলপম্যান্ট অব ক্যাপিটাল মার্কেট” শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি শামস মাহমুদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমবিএ’র প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান, এফসিএ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান এবং ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিজম ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল।
সালমান এফ রহমান বলেন, পুঁজিবাজারকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে বেনিফিশিয়ারি একাউন্ট (বিও) ডিজিটাল হওয়া উচিত। এটা ডিজিটাল হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য যেমন সুবিধা হবে তেমনি অনেক বিনিয়োগকারী বাসায় বসেই একাউন্ট খুলে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এখন অনেক ব্যাংক একাউন্টও বাসায় বসেই ডিজিটালি করা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, উৎপাদনহীন ও কারখানা বন্ধ থাকা কোম্পানির শেয়ারে প্রতিদিনই কারসাজি হচ্ছে। এবং এটা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে হচ্ছে। কিন্তু ডিএসই কোনো কিছুই করছে না। আমরা সবাই দেখছি একাি কোম্পানির ১০ বছর ধরে কারখানা ও উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। প্রতিনিয়তই এই রকম কোম্পানির শেয়ার নিয়ে ডিএসইর ব্রোকাররা ম্যানিপুলেশন (কারসাজি) করছে। ডিএসইর সামনেই বন্ধ থাকা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়াচ্ছে। তারা তো লুকিয়ে করছে না। তারপর ডিএসই এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ডিএসইকে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
সালমান এফ রহমান বলেন, পুঁজিবাজারে যদি কোন দুই নম্বারি হয়ে থাকে, সেটা পুরো পৃথিবীতেই সবার আগে স্টক এক্সচেঞ্জ ধরে। বিএসইসিতো অনেক পরের বিষয়, প্রথমেই ধরবে স্টক এক্সচেঞ্জ। তাদের ওখানেইতো প্রতিদিন লেনদেন হয়। যেকোন ধরনের অনিয়মের লেনদেন দেখলে বুঝতে পারা যায়। কিন্তু এখনো আমাদের পুঁজিবাজারে যে কোম্পানি বন্ধ এবং সবাই সেটা জানি, তারপরেও সেই কোম্পানির দর বাড়ে। কারা এসব কোম্পানির শেয়ার কিনে এবং কারা বিক্রি করে, তা স্টক এক্সচেঞ্জ জানে। এখানে যে ম্যানিপুলেশন হচ্ছে এবং ওপেনলি হচ্ছে, লুকিয়ে কেউ করছে না। কিন্তু বাজার পড়ে গিয়ে কোন কিছু হলেই লোকজন রাস্তায় নেমে সরকারকে দোষারোপ করে।
তিনি বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। পুঁজিবাজারের দায়িত্ব শুধু সরকার, অর্থমন্ত্রণালয় ও বিএসইসির, আর স্টক এক্সচেঞ্জ শুধু বসে থাকবেন, তা না। তাদেরকে শক্তিশালী হতে হবে।
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদেরকে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের এই মনস্তাত্তিক অবস্থা থেকে বিনিয়োগকারীসহ সবাইকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা। বলেন, আপনি বিনিয়োগ করেছেন, আপনাকেই জেনে-শুনে করতে হবে। লাভ হোক বা লোকসান হোক তা আপনার।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে ৮০-৮৫ শতাংশই রিটেইল বিনিয়োগকারীরা লেনদেন করে থাকেন। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অবদান খুবই কম। আর বাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অংশ ৩ শতাংশ বলা হলেও লেনদেনে আরও কব। আইসিবি ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নেই বললেই চলে। কিন্তু একটি বাজারতো একমাত্র আইসিবির উপর ভরসা করে চলতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতির মতো দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে পুঁজিবাজার। একই সাথে অর্থনীতিতেও বড় ভূমিকা পালন করবে।
সালমান এফ রহমান বলেন, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে বিও অ্যাকাউন্ট ডিজিটালাইজেশন করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ব্রোকারদেরকে বিদেশে শাখা খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর ফলে এনআরবিরা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে। তাদের আগ্রহকে কাজে লাগানোর জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া তৈরি করতে হবে।