আবারও বেড়েছে চাল,সয়াবিন তেল, আটা, আলু ও পেঁয়াজের দামও। শুধু তাই নয়,কোরবানিকে সামনে রেখে আদা, হলুদসহ বিভিন্ন মসলার দামও বেড়েছে।
শুক্রবার (২৪ জুন) রাজধানীর কাওরান বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মোটা ও চিকন চালসহ সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। চিকন চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা টাকা। চিকন বা সরু (যার ব্র্যান্ডিং নাম নাজিরশাইল ও মিনিকেট) এক কেজি চালের দাম এখন ৮০ টাকার ওপরে। গত সপ্তাহে এই চাল বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। এছাড়া গরিব মানুষের মোটা চালের (পাইজাম ও স্বর্না) কেজি এখন ৫৩ টাকা। গত সপ্তাহে এই চাল বিক্রি হয়েছে ৫১ থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে।
আমদানি করা পেঁয়াজের দাম গিয়ে ঠেকেছে প্রতি কেজি ৬০ টাকায়। গত সপ্তাহে এই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকা কেজি দরে। টিসিবির হিসাবে গত সপ্তাহের চেয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম এই সপ্তাহে বেড়েছে বেড়েছে ১৮ শতাংশের বেশি। একইভাবে আলুর দামও বেড়েছে ১৭ শতাংশের বেশি। রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি আলু এখন ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে একই আলু বিক্রি হয় ২৫ টাকা কেজি দরে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোরবানিকে সামনে রেখে পেঁয়াজ আলুসহ বেশ কয়েকটি মসলার দাম বেড়ে গেছে।
আমদানি করা হলুদের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ টাকার বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে তারা যে হলুদ ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন, সেই হলুদ শুক্রবার (২৪ জুন) বিক্রি করছেন ২২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া গত সপ্তাহে যে হলুদ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়, সেই হলুদ এখন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি দরে। টিসিবির হিসাবে আমদানি করা হলুদের দাম বেড়েছে কেজিতে ২১ শতাংশ।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে দেশি আদার দাম বেড়েছে কেজিতে ৪২ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে কেজিতে ৫০ টাকা বেশি দামে দেশি আদা বিক্রি করছেন। তারা জানান, গত সপ্তাহে যে আদার দাম ছিল ৭০ টাকা কেজি, এই সপ্তাহে সেই আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি। এছাড়া ১২০ কেজি দরের আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে।
টিসিবির তথ্যমতে, তেজপাতার দাম বেড়েছে কেজিতে ২৫ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের ১৬০ টাকা কেজি দরের তেজপাতা এ সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।মসুর ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। গত সপ্তাহের ১৩০ টাকা কেজি দরের মসুর ডাল এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা কেজি দরে। ছোলার দামও কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। অর্থাৎ ৭০ টাকা কেজি দরের ছোলা এখন বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি দরে।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্যাকেট ময়দা তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে ৭২ টাকা কেজি দরে। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে প্যাকেট আটাও। কেজিতে দুই টাকা বেড়ে আগে ৫৮ টাকা কেজি দরের আটা বিক্রি হচ্ছে এখন ৬০ টাকা কেজি দরে।
গুঁড়ো দুধ ডানো ও ডিপ্লোমা (নিউজিল্যান্ড) গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৭৩০ টাকা কেজি। এ সপ্তাহে ক্রেতাদের একই গুঁড়ো দুধ কিনতে হচ্ছে ৭৬০ টাকা কেজি। অর্থাৎ কেজিতে দাম বেড়েছে ৩০ টাকা।
অবশ্য দাম কমেছে রসুনের। খুচরা বাজারে আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩৫ টাকায়। দেশি রসুন পাইকারি ও খুচরায় মিলছে প্রতি কেজি ৬০ টাকায়।
এদিকে খুচরা বাজারে ডিমের হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর মালিবাগ বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৪০-১৫০ টাকায়। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা।
এদিকে গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, পাকা টমেটো ৭০ থেকে ৮০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বেগুনের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। করলার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে, কাঁচা কলার হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তেলাপিয়া, পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। রুই মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা, শোল মাছের কেজি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, কৈ মাছের কেজি ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা।