আবেগাপ্লুত হয়ে সংসদে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী
1 min readমুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ঘর উপহার দিচ্ছে সরকার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে সংসদে আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদে ফেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব ঘর উপহার দেওয়াকে জীবনে সব থেকে আনন্দের দিন বলেও জানান তিনি।
বুধবার (৩০ মার্চ) জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। সম্পূরক প্রশ্নে ফখরুল ইমাম প্রধানমন্ত্রীকে তার আনন্দের স্মৃতি বর্ণনা করতে অনুরোধ করেন।
স্বাধীনতার পরে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গুচ্ছগ্রাম তৈরির কাজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুরু করেছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার (বঙ্গবন্ধুর) স্বপ্ন ছিল দেশের কোনো মানুষ গৃহহীন, ভূমিহীন ও ঠিকানাবিহীন থাকবে না। এটা জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল।
জাতির পিতার লক্ষ্য পূরণ করাই একমাত্র কাজ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার লক্ষ্য মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়া। ১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর থেকে ভূমিহীন মানুষদের ঘর তৈরি করে দিচ্ছি এবং পুনর্বাসন করে যাচ্ছি। আমরা শুধু ঘর দিয়ে বসে থাকছি না, ঘর দেওয়ার পরে তাদের অর্থ দিচ্ছি, প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। আয়ের পথও করে দিচ্ছি। ১৫ আগস্টের পরে যে দুঃখ, কষ্ট, যতনা ভোগ করতে হয়েছে আমার জীবনে, সেই দুঃখের মধ্য দিয়ে, বোঝা নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলাম বাবার স্বপ্ন পূরণে।
ঘর উপহার দেওয়ার পরে নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এটা খুব ভালোভাবে মনিটরিং করে। কার্যালয়ের সচিব ও কর্মকর্তারা প্রায় যাচ্ছেন, তারা কেমন আছেন দেখছেন। দেখে আসার পরে আমাকে ছবি পাঠালো। দেখলাম ঘর পাওয়ার পরে মানুষের যে অনুভূতি। তারা ঠিকানা পেয়েছে, সেই আনন্দে তাদের কান্না, হাসি, বেদনা উপলব্ধি করলাম। সেদিন আমিও…। একটা মানুষ, একটা পরিবার- যারা একটা ঠিকানা পেয়েছে। ঘর পাওয়ার পরে তাদের জীবন পাল্টে গেছে। অভাব, দারিদ্র্য নেই। নিজের জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে।
তিনি বলেন, আমার জীবনে সব থেকে বড় আনন্দের দিন। একজন মানুষ, যার কিছু ছিল না, তাকে একটা ঘর দিয়ে তার মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। এর থেকে বড় আনন্দের কিছু হতে পারে না। সেদিন আনন্দে চোখের পানি রাখতে পারিনি। আমি অঝোরে কেঁদেছিলাম। কারণ এটাই তো আমার বাবার স্বপ্ন ছিল। এসময় প্রধানমন্ত্রী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। জলে চোখ ভিজে যায় তার।
দ্রব্যমূল্য নিয়ে সংসদে আলোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে সংসদ গরম করা হলো, সেজন্যই আমি যখন প্রশ্নগুলো (তারকা চিহ্নিত প্রশ্ন) পেলাম, এটা এক নম্বরে নিয়ে আসলাম। ভাবলাম যে আজ উত্তর দেবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী সব জিনিসের দাম বেড়েছে। তার প্রভাব আমাদের ওপর পড়েছে, এটা স্বাভাবিক। কিছু লোক তো আছে যারা সুযোগটা নেওয়ার চেষ্টা করে। সেটা যাতে নিতে না পারে, তার জন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি।
তিনি বলেন, কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের বিরোধী দলের একজন সদস্য (বিএনপির এমপি হারুনুর রশীদ), তিনি আজ নেই। থাকলে ভালো হতো। তিনি বললেন যে, খেজুর রিকশাওয়ালারা কিনবে না। রিকশাওয়ালারা খেজুর খাবে না কেন? আমরা কিন্তু প্যাকেজে খেজুর সব জায়গায় দিচ্ছি না। কিছু ঢাকা শহরে রাখা হয়েছে, যেটা টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি ঘর উপহার দিয়েছে সরকার। তৃতীয় পর্যায়ে ৬৫ হাজার ৪৭৪টি ঘর দেওয়া হবে।