রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দেশের অর্থনীতিকে বড় ঝুঁকিতে ফেলবে না: অর্থমন্ত্রী
1 min readঅর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট সংকট বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেললেও তা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে এই মুহূর্তে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে না। সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর-পর্বে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে অভিঘাত পড়তে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে এর ফলাফল কী হবে, তা নির্ভর করবে এ যুদ্ধ ও তার ফলে উদ্ভূত সংকট কতটা প্রলম্বিত হবে তার ওপর। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এ সংকটে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়লেও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে এ মুহূর্তে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে না। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ইউক্রেনে শুরু হওয়া রাশিয়ার সামরিক অভিযান এবং এর পাশাপাশি রাশিয়া ও তার মিত্র দেশ বেলারুশের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে।চলমান সামরিক সংকট ও নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস, অপরিশোধিত তেল, সার, গম, নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও ইলেকট্রিক পণ্যের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ফিনিশ গুডসের মূল্য আবশ্যিকভাবে বাড়তে পারে। এ মূল্যবৃদ্ধি বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব ফেলবে। তেল-গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল এবং আন্তর্জাতিক পরিবহন খরচ বেড়ে দেশে মূল্যস্ফীতি অনুভূত হতে পারে। চলমান এ যুদ্ধাবস্থা রাশিয়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির অর্থ পরিশোধ নিয়েও জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। সংসদে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রথম আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশসমূহের সঙ্গে ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি হিসেবে ২ হাজার ১৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সময়ে বর্তমান ও আগের চুক্তি হতে ২ হাজার ৮৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড় হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত (আট মাসে) বিদেশ থেকে ১৩ হাজার ৪৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বিগত এক দশকে বাংলাদেশের ক্রমাগত উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনা মহামারির কারণে তা কমে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশে নামে। তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা ও নিরলস কর্মতৎপরতায় দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তেমন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েনি। বরং মহামারিকালের অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ।