November 23, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

যুদ্ধের প্রভাব জ্বালানি তেলে, লোকসান গুনছে বিপিসি

1 min read

আন্তর্জাতিক বাজারে পরিশোধিত ডিজেলের দাম ব্যারেলপ্রতি কমবেশি ৮০ ডলার হলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) কোনো লোকসান দিতে হয় না। কিন্তু গত সপ্তাহে সেই ডিজেলের দাম উঠেছে ব্যারেলপ্রতি ১৩৪ ডলারে। তবে রোববার দাম কিছুটা কমলেও, বর্তমানে দেশের বাজারে জ্বালানিটি বিক্রিতে প্রতি লিটারে ২০ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিপিসির পদস্থ কর্মকর্তারা। তবে বিপিসি ভর্তুকি দিলেও সরকার এ পর্যায়ে ডিজেলের দাম বাড়ানোর কথা ভাবছে না বলে জানিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন,  প্রভাব পড়েছে জ্বালানি ও পরিবহন ব্যবস্থায়। যে কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলসহ সব ধরনের জ্বালানির দাম বেড়েছে।

বিপিসি সূত্রে জানা যায়, দেশে বছরে কমবেশি ৬০ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেলের চাহিদা থাকে। এর মধ্যে ১৫ লাখ মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল (অপরিশোধিত জ্বালানি তেল) ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধন করা হয়। বাকি ৪৫ লাখ টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে বিপিসি।বাংলাদেশে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল ব্যবহার হয়, তার ৭৩ শতাংশের বেশি ডিজেল। সড়ক ও নৌপরিবহন, কৃষির সেচপাম্প এবং বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ নানা ক্ষেত্রে ডিজেলের ব্যবহার রয়েছে। বাজারে বর্তমানে ৮০ টাকা লিটারে ডিজেল বিক্রি করে সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও যমুনা অয়েল কোম্পানি।

বিপিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলের পাঁচদিনের গড় দামের সঙ্গে ব্যারেলপ্রতি দুই ডলার ৮৩ সেন্ট প্রিমিয়াম, লিটারপ্রতি প্রায় ১৯ টাকা আমদানি কর (ভ্যাট-ট্যাক্স মিলে), বন্দর ব্যয়, কোম্পানি কমিশন, পরিবহন ব্যয়, অপারেশন ও হ্যান্ডলিং লস, অন্যান্য লস মিলিয়ে ডিজেলের বিক্রয় মূল্য হিসাব করা হয়। মূলত অপারেশন ও হ্যান্ডলিং লসের তথ্য সুনির্দিষ্ট না করার কারণে কী পরিমাণ ভর্তুকি কিংবা লোকসান হয়, সেই হিসাব নেই বিপিসির।

বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে বাড়তে থাকে জ্বালানি তেলের দাম। বিশেষ করে এসময় ডিজেলে ভর্তুকি বেড়ে যায়। ফলে ওই বছরের ৪ নভেম্বর থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি  করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে পরিশোধিত ডিজেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারের কাছাকাছি ছিল। অবশ্য পরে গত বছরের (২০২১ সাল) নভেম্বরে ডিজেলের দরপতন হয়। নভেম্বর মাসের শেষ দিকে ৮৩-৮৫ ডলারের মধ্যে ছিল প্রতি ব্যারেল ডিজেলের দাম। পরে আবারও বাড়ে জ্বালানিটির দাম।

এদিকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর  বাড়তে থাকে। গত সপ্তাহে ডিজেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৩৪ ডলার পর্যন্ত ওঠে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিপিসির এক কর্মকর্তা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার হলে বিপিসিকে কোনো ভর্তুকি দিতে হয় না। কিন্তু বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম হু হু করে বাড়ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে থেকে দাম বাড়লেও যুদ্ধ শুরুর পর বেশি বেড়েছে। এতে জ্বালানি বিক্রিতে বেড়েছে ভর্তুকির পরিমাণও। এর মধ্যে আবার বিপিসির সরবরাহ করা জ্বালানির মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ ডিজেল। যে কারণে লোকসানের পরিমাণও বেশি। যুদ্ধ পরিস্থিতি শেষ না হলে জ্বালানির দাম কমার তেমন আশা নেই।

 

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *