স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের দ্বারপ্রান্তে ইউক্রেন
1 min readএকে একে মাঠে প্রবেশ করছেন ইউক্রেনের ফুটবলাররা। প্রত্যেকের গায়ে জড়ানো দেশের নীল-হলুদ জাতীয় পতাকা। তাদের দেখে গ্লাসগো হ্যাম্পডেন পার্ক স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উঠে দাঁড়ালেন স্কটল্যান্ডের সমর্থকেরা। হাততালি দিয়ে স্বাগত জানালেন।
ম্যাচটা বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের প্রি-প্লে অফের। বলা হচ্ছে প্লে-অফ সেমিফাইনালের। কাতার বিশ্বকাপে জায়গা পেতে প্রথমে এই ম্যাচটি জিততে হবে। ইউক্রেনের ফুটবলাররা মাঠে নেমেছিলেন অনেক বড় এক আবেগকে সঙ্গে করে। দেশের মানুষ যখন রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ব্যস্ত, তখন তারা হৃদয় জিততে নেমেছেন মাঠে।
ইউক্রেনীয় আবেগের কাছে পরাজিত হলো স্কটল্যান্ড। ৩-১ গোলে স্কটিশদের হারিয়ে বিশ্বকাপের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেলো ইউক্রেন। শেষ বাধা হিসেবে তাদের সামনে রয়েছে ওয়েলস। আগামী রোববার কার্ডিফে ওই ম্যাচটি জিততে পারলেই কাতার বিশ্বকাপে নাম লিখে ফেলবে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইউক্রেন। যারা বিশ্বকাপে খেলবে গ্রুপ ‘বি’তে ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের সঙ্গে।
একই সঙ্গে ইউক্রেনের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হলো স্কটল্যান্ডের। ২৪ বছর ধরে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি তারা। যে কারণে হতাশ স্বাগতিক সমর্থকরা। তবুও আবেগে হৃদয় জেতা ইউক্রেন ফুটবলাররা যখন মাঠ ছেড়ে যাচ্ছিল, তখন তাদের উদ্দেশ্যে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিলেন তারা।
গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার হামলার পর থেকে এই প্রথম কোনো অফিসিয়াল ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ইউক্রেন। গ্লাসগোর হ্যাম্পডেন পার্ক মাঠের ৫১ হাজার দর্শকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাত্র তিন হাজার ইউক্রেনীয়। গ্যালারির এক কোনে জায়গা নিয়েছিল তারা। জাতীয় সঙ্গীতের সময় বুকে হাত, চোখে পানি। জাতীয় সঙ্গীত শেষ হওয়ার পরে হাততালি দিল বাকি ৪৮ হাজার দর্শকও। খেলা শেষেও সেই ছবি। তিন হাজার দর্শক যখন মাঠ ছেড়ে বেরোচ্ছেন তখন প্রায় ১০ হাজার তাদের হাততালি দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন।
এমনই বেশ কিছু টুকরো টুকরো ছবি। এই টুকরো টুকরো ছবিতেই বুধবার রাতে এক অন্য ফুটবল দেখল বিশ্ব। যেখানে একদিকে যুদ্ববিধ্বস্ত ইউক্রেন, তারা খেলেছে, জয় করেছে, সেখানে অন্যদিকে জয়ীকে বরণ করে নেওয়া রয়েছে। গ্লাসগো থেকে বার্তা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, মানবতার, বন্ধুত্বের, সহমর্মিতার।
ম্যাচের ৩৩তম মিনিটে আন্দ্রে ইয়ারমোলেঙ্কোর বাম পায়ের গোলে প্রথমে এগিয়ে যায় ইউক্রেন। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে ইউক্রেন। দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার পরপরই দ্বিতীয় গোল করে ইউক্রেন। ৪৯তম মিনিটে গোলটি আসে রোমান ইয়ারেমচুকের হেড থেকে। ওলেক্সান্ডার কারাভায়েভের ক্রস থেকে ভেসে আসে বলটি।
৭৯ মিনিটে স্কটল্যান্ডের হয়ে একটি গোল শোধ করেন কলাম ম্যাকগ্রেগার। বাম পায়ের দুর্দান্ত এক শটে গোলটি করেন তিনি। ম্যাচ শেষ হওয়ার খানিক আগে, ইনজুরি সময়ে বাম পায়ের শটে গোল করে স্কটল্যান্ডের পরাজয়ের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন আর্তেম ডভোবায়েক।