সাত দশক পর যুক্তরাষ্ট্রে কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
ক্যানসাসের এক নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে মার্কিন সরকার। প্রায় সাত দশক পর দেশটিতে কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা এটি।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) ইন্ডিয়ানার টেরে হউটের ফেডারেল কারাগার কমপ্লেক্সে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে ৫২ বছর বয়সী লিসা মন্টগোমারির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতার শেষ কয়েক মাসে তার প্রশাসন ১০টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। লিসা মন্টগোমারি হলেন একাদশতম বন্দি যার মৃত্যুদণ্ড ঘটনার ১৭ বছর পর কার্যকর করা হলো।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সাথে সাথে একজন নারী মন্টগোমারির মাস্কটি আলতো করে সরিয়ে জিজ্ঞাসা করেন তার কোনো শেষ কথা আছে কি না। জবাবে মন্টগোমারি শান্ত, চাপা কণ্ঠে ‘না’ বলে সাড়া দেন। তিনি আর কিছু বলেননি।
মন্টগোমেরির আইনজীবী কেলি হেনরি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আজ রাতে এক ব্যর্থ প্রশাসনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রদর্শনী ছিল। লিসা মন্টগোমারির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা প্রত্যেকেরই লজ্জা বোধ করা উচিত।’
হেনরি বলেন, ‘এক ক্ষতিগ্রস্ত ও বিভ্রান্ত নারীকে হত্যা করার উদ্যোগ থেকে সরকার কিছুতেই থামেনি। লিসা মন্টগোমারির মৃত্যুদণ্ড দেয়ার মতো অপরাধ ছিল না।’
লিসা মন্টগোমারি ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে ক্যানসাস থেকে গাড়ি চালিয়ে মিসৌরিতে ভুক্তভোগী ববি জো স্টিনেটের বাড়িতে আসেন। স্টিনেট তখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। মন্টগোমারি ঘরের ভেতরে প্রবেশের পর স্টিনেটকে আক্রমণ করেন এবং তার গলা টিপে ধরেন। এক পর্যায়ে স্টিনেট জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
মন্টগোমারি এরপর রান্নার একটি ছুরি দিয়ে স্টিনেটের তলপেট চিরে ফেলেন। তখন স্টিনেটের জ্ঞান ফিরে আসে। এরপর তাদের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি হয়। মন্টগোমারি তখন স্টিনেটের গলা টিপে শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে হত্যা করেন। মন্টগোমারি পরে স্টিনেটের পেট থেকে শিশুটিকে বের করে তাকে নিয়ে পালিয়ে যান। তিনি শিশুটিকে তার নিজের বাচ্চা বলে চালানোর চেষ্টা করেন।
এ হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হলে একজন বিচারক অপহরণ ও হত্যার দায়ে মন্টগোমারিকে দোষী সাব্যস্ত করেন। সর্বসম্মতিক্রমে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার রায় ঘোষণা করা হয়। কিন্তু মন্টগোমারির আইনজীবীদের পক্ষ থেকে আদালতে যুক্তি দেয়া হয় যে শৈশবে গণধর্ষণসহ ‘যৌন নির্যাতনের’ শিকার হয়েছিলেন তিনি। এর ফলে তার আবেগ ও মানসিক অবস্থা স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।