November 22, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

সাকিব-মুজিবের ঘূর্ণিতে চট্টগ্রামে বরিশালের হ্যাটট্রিক

1 min read

জয় দিয়ে শুরু করেও পরপর দুই পরাজয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল তারকাসমৃদ্ধ দল ফরচুন বরিশাল। চট্টগ্রাম পর্বে এসে দলের সঙ্গে মুজিব উর রহমান যোগ দিতেই বদলে গেলো পুরো দৃশ্যপট। আফগান স্পিনারকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিপক্ষ শিবিরে একের পর এক ত্রাস ছড়িয়ে বেড়াচ্ছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে টানা দুই জয়ের পর আজ স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকেও হারিয়ে হ্যাটট্রিক করে ফেললো সাকিবের বরিশাল। একইসঙ্গে বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্ব শেষে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে গেলো তারা।

চট্টগ্রামে হ্যাটট্রিক জয় পাওয়া তিন ম্যাচে একই ধাচে খেলেছে বরিশাল। তিনটি ম্যাচেই রান করেছে ১৪০-১৫০ এর ভেতরে। পরে বল হাতে গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষকে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ চট্টগ্রামের বিপক্ষে তারা অলআউট হয়েছে ১৪৯ রানে।

পরে ১৫০ রানের লক্ষ্যে দুই বল আগেই চট্টগ্রাম অলআউট হয়েছে ১৩৪ রানে। ফলে ১৫ রানের জয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছে বরিশাল। আজও ব্যাট হাতে ৫০ রানের পাশাপাশি বোলিংয়ে ৩ উইকেট নিয়ে বরিশালের জয়ের নায়ক অধিনায়ক সাকিব।

সোমবার খুলনার বিপক্ষে ম্যাচে সাকিব-মুজিব মিলে ৮ ওভারে মাত্র ২৩ রান খরচায় নিয়েছিলেন ২ উইকেট। আজ তারা দুজন মিলে ৮ ওভারে মাত্র ৩২ রান খরচায় নিয়েছেন ৬টি উইকেট। মূলত এ দুই স্পিনারের ঘুর্ণিতেই কুপোকাত হয়েছে চট্টগ্রাম।

উইল জ্যাকসের (০) সঙ্গে ইনিংস সূচনা করতে নেমে আফিফ হোসেন ধ্রুব খেলেছেন ৩২ বলে ৩৯ রানের ইনিংস। প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে নামা শামীম পাটোয়ারি ২৯ রান করতে খেলেন ৩০টি বল। আজ প্রথমবার সুযোগ পাওয়া চ্যাডউইক ওয়ালটনের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান।

দলীয় শতরান হওয়ার আগেই ৭ উইকেট হারিয়ে পরাজয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল চট্টগ্রামের। সেখান থেকে ৩ চার ও ১ ছয়ের মারে ১৩ বলে ২৬ রান করে খানিক আশা জাগিয়েছিলেন দলের অধিনায়কত্ব হারানো মেহেদি হাসান মিরাজ।

শেষ দিকে শরিফুল ইসলামের একটি করে চার-ছয়ের মারে ৩ বলে ১০ রানের ইনিংসে শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমেছে। বরিশালের পক্ষে সাকিব ২৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। মুজিব ৪ ওভারে ৩ উইকেট নিতে খরচ করেছেন মাত্র ৯ রান।

এর আগে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বরিশাল। আজ ক্রিস গেইলের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করতে পাঠানো হয় বিপিএলে অভিষিক্ত মুনিম শাহরিয়াকে। কিন্তু ইনিংসের তৃতীয় বলেই সাজঘরে ফিরে যান মুনিম। অপরপ্রান্তে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন গেইল। তবে তা বড় হয়নি।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর সপ্তম ওভারেই আউট হয়ে যান ইউনিভার্স বস। ফেরত যাওয়ার আগে ১ চারের সঙ্গে তিনটি বিশাল ছয় হাঁকান গেইল। উইল জ্যাকসের বলে লং অন বাউন্ডারিতে দুর্দান্ত এক ক্যাচে গেইলের বিদায়ঘণ্টা বাজান মেহেদি হাসান মিরাজ। এরপর ৩.৪ ওভারে ৩১ রান যোগ করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

ইনিংসের ১১তম ওভারে শান্তর আউট নিয়ে দেখা দেয় ঝামেলা। আফিফ হোসেনের বলে কাট করতে গিয়ে ব্যর্থ হন শান্ত, বল জমা পড়ে উইকেটরক্ষক আকবর আলির গ্লাভসে। জোরালো আবেদন করে চট্টগ্রামের ফিল্ডাররা। আউট দেননি মাঠের আম্পায়ার, চট্টগ্রাম নেয় এডিআরএস।

টিভি রিপ্লে দেখে আওয়াজের ওপর নির্ভর করে আউটের সিদ্ধান্ত জানান থার্ড আম্পায়ার। তবে থার্ড আম্পায়ারের এই সিদ্ধান্তে চোখেমুখে দ্বিধার ছাপ ফুটে ওঠে মাঠের আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুলের। এটি মানতে কষ্ট হয় ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তর। বেশ কিছুক্ষণ উইকেটের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।

অধিনায়ক সাকিবও বুঝতে পারছিলেন না কী বলবেন, শান্তকে থামিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। পরে আম্পায়ারের মধ্যস্থতায় শুরু হয় খেলা। এরপরই ঠিক ঝড়টা তোলেন সাকিব। ইনিংসের ১৫তম ওভারে নাসুম আহমেদের বলে পরপর তিনটি ছক্কা হাঁকান তিনি।

পরের ওভারেই পূরণ করেন এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম এবং টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২০তম ফিফটি। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ৪৫ ইনিংস পর ফিফটির দেখা পেলেন তিনি। বিপিএলে ফিফটি করলেন ২০১৯ সালের জানুয়ারির পর।

অবশ্য ফিফটি করে আর বেশিদূর যেতে পারেননি বরিশাল অধিনায়ক। ইনিংসের ১৭তম ওভারে আক্রমণে এসে তৃতীয় বলেই সাকিবের মূল্যবান উইকেটটি নেন মৃত্যুঞ্জয়। আউট হওয়ার আগে তিনটি করে চার ও ছয়ের মারে ৫০ রান করেন সাকিব।

নিজের পরের ওভারে চার বলের ব্যবধানে নুরুল হাসান সোহান, ইরফান শুক্কুর ও মুজিব উর রহমানকে ফেরান মৃত্যুঞ্জয়। শেষ ওভারের প্রথম বলে সরাসরি থ্রোয়ে শফিকুল ইসলামকে রানআউট করে বরিশালের ইনিংস গুটিয়ে দেন শরিফুল। তিনি ৯ রানে নেন ২টি উইকেট। মৃত্যুঞ্জয়ের ৪ উইকেটে খরচ হয়েছে ১২ রান।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *