লাল কার্ড আর ফাউলে ঠাসা ম্যাচে ব্রাজিলকে রুখে দিলো ইকুয়েডর
1 min readমারদাঙ্গা ফুটবল, ভরপুর অ্যাকশন। বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ঘটনাবহুল এক ম্যাচে নেইমারবিহীন ব্রাজিলকে ১-১ গোলে রুখে দিয়েছে ইকুয়েডর।
উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে প্রথম ২০ মিনিট যেতেই দুই দল ১০ জনে পরিণত হয়। ব্রাজিলের গোলরক্ষক ‘দুই দুইবার’ লাল কার্ড দেখেন। চলে ফাউলের পর ফাউল। তবে শেষ পর্যন্ত এই লড়াইয়ে জিততে পারেনি কোনো দলই।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার ৮৫০ মিটার উঁচুতে ইকুয়েডরের রাজধানী কিটোয় ম্যাচটিতে শট কিংবা বল দখলে এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। এমনকি শুরুতে গোলেও এগিয়ে গিয়েছিল তারা। কিন্তু ইকুয়েডর পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে দেয়নি সেলেসাওদের।
ম্যাচে ফাউল হয়েছে মোট ৩২টি। দুটি লাল কার্ড। ভিআরের ছড়াছড়ি তো ছিলই। এমন এক লড়াইয়ে কাসেমিরোর গোলে ব্রাজিল এগিয়ে যাওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগে সমতা টানেন ইকুয়েডরের ফেলিক্স তরেস।
ম্যাচের প্রথম মিনিটেই মোইজেজ কাইসেদোকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাজিলের এমেরসন। ২০তম মিনিটে প্রতিপক্ষের আরেক খেলোয়াড় এস্ত্রাদাকে পেছন থেকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড (লাল কার্ড) দেখে মাঠ ছাড়েন এই ডিফেন্ডার।
তার পাঁচ মিনিট আগেই অবশ্য লাল কার্ড দেখে ফেলেছিলেন ইকুয়েডরের গোলরক্ষক আলেকজান্ডার ডোমিঙ্গেজ। ফলে ২০ মিনিটের পর থেকে একজন করে কম নিয়ে খেলতে হয় দুই দলকে।
ব্রাজিল এগিয়ে যায় ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে। ফেলিপে কৌতিনহোর বলে হেড করেন ম্যাথিউস কুনহা। সেটা কোনোরকমে বাঁচান ইকুয়েডর গোলরক্ষক। তবে বল পেয়ে ডান পায়ের আলতো টোকায় ঠিকই গোল আদায় করে নেন কাসিমিরো।
১৫ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখেন ইকুয়েডরের গোলরক্ষক আলেকজান্ডার ডোমিঙ্গেজ। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ডি-বক্সের মুখে ছুটে আসা প্রতিপক্ষের গলায় বুট দিয়ে আঘাত করে বসেন তিনি।
এর পাঁচ মিনিট পর ব্রাজিলের এমেরসনের লাল কার্ড। ২৬তম মিনিটে নয়জনের দলে পরিণত হতে বসেছিল সেলেসাওরা। প্রতিপক্ষের পাল্টা আক্রমণ রুখতে ডি-বক্স থেকে বের হয়ে শট নেন এলিসন। কিন্তু তার পা লেগে যায় এনের ভালেন্সিয়ার মাথায়।
রেফারি লাল কার্ড তুলে দেন সঙ্গে সঙ্গেই। তবে পরে দীর্ঘ সময় ভিএআর দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টান তিনি। হলুদ কার্ড পেয়ে বেঁচে যান ব্রাজিল গোলরক্ষক।
প্রথমার্ধেই ১০টি করে ফাউল করে দুই দল। সময়ক্ষেপনের কারণে বাড়তি ১০ মিনিট দিতে হয় রেফারিকে। তবে ব্রাজিল ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধেও অ্যাকশন আর ফাউল চলেছে। ৫৫ মিনিটের মাথায় ব্রাজিলের ডি-বক্সে রাফিনিয়ার চ্যালেঞ্জে একুয়েডরের ডিফেন্ডার পেরভিস এস্তুপিনান পড়ে গেলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু ভিএআর দেখে আবার সিদ্ধান্ত পাল্টান তিনি।
অবশেষে ৭৫তম মিনিটে সমতায় ফেরে ইকুয়েডর। গনজালা প্লাতার কর্নার থেকে দারুণ হেডে গোল করেন ফেলিক্স তরেস। পুরো ম্যাচে ওই একটি শটেই লক্ষ্যে ছিল স্বাগতিকদের। সেটিই গোল পেয়ে যায় তারা। অন্যদিকে ১২ শটের ৬টি লক্ষ্যে রেখেও এক গোলের বেশি আদায় করতে পারেনি ব্রাজিল।
ইনজুরি টাইমে আরেক নাটক। যোগ করা সময় ৫ মিনিট হলেও পুরো ম্যাচজুড়ে ‘অস্থির’ এলিসনের কাণ্ডে সেটি গিয়ে ঠেকে ১২ মিনিটে। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের মিডফিল্ডার প্রেসিয়াদোর মুখে আঘাত করে বসেছিলেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক।
আরও একবার তাকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। কিন্তু সফরকারি দলের খেলোয়াড়দের তীব্র প্রতিবাদের মুখে দীর্ঘক্ষণ ভিএআর দেখে সিদ্ধান্ত বদলান রেফারি। শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলের ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়ে দুই দল।
লাতিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে সবার আগে কাতার বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করা ব্রাজিল এই ড্রয়ের পর ১৪ ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে। ১৫ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে একুয়েডর।