ইইউর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কতটা?
ইইউর দেশগুলোর আমদানি করা জ্বালানি তেলের এক-চতুর্থাংশ সরবরাহ করে আসছে রাশিয়া।
এ বছরের মধ্যে সমুদ্রপথে রাশিয়া থেকে আসা তেল বন্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে এই জোট। এর ফলে ইইউতে রাশিয়ার সরবরাহ করা তেল দুই-তৃতীয়াংশ কমে যাবে।
অবশ্য এরপরেও ইইউ সাময়িকভাবে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আমদানি বজায় রাখবে। কারণ হাঙ্গেরি রাশিয়া থেকে তাদের মোট চাহিদার ৬৫ শতাংশ তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করে।
অন্য দুই দেশ, জার্মানি ও পোল্যান্ড, যারা রাশিয়ার তেলের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, তারাও এ বছরের শেষ নাগাদ ওই তেল কেনা বন্ধ করবে বলে জানিয়েছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন জানান, এর মাধ্যমে কার্যত রাশিয়া এই জোটে যে পরিমাণ তেল রপ্তানি অব্যাহত রাখতে পারবে, তা নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে রপ্তানি করা তেলের মাত্র ১০ থেকে ১১ শতাংশ।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এরইমধ্যে রাশিয়া থেকে সব ধরনের তেল, গ্যাস ও কয়লা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং যুক্তরাজ্যও এই বছরের মধ্যে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে যাচ্ছে।
কোন ধরনের জ্বালানি সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে না ইইউ?
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির ৪০ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। জার্মানির মতো দেশে মোট গ্যাস চাহিদার অর্ধেকের বেশি সরবরাহ করে মস্কো।
তাই নিজেদের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে রাশিয়ার গ্যাসের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ইইউর জন্য কঠিন হবে।
মার্চে ইউরোপের এই জোটের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, যে তারা এ বছরের শেষ নাগাদ রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি দুই-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনবে। যদিও সদস্য দেশগুলোর মধ্যে এ বিষয়ে এখনও কোনো সমঝোতায় পৌছানো সম্ভব হয়নি।
এদিকে বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দাম বেড়ে চলায় সুবিধা পাচ্ছে রাশিয়া। শুধু ইইউতে তেল ও গ্যাস বিক্রি করে তারা এক বছরে প্রায় চার লাখ কোটি ইউরো আয় করতে যাচ্ছে।
রাশিয়া কি পরিমাণ জ্বালানি তেল রপ্তানি করে?
যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের পর বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ জ্বালানি তেলের মজুদ রাশিয়ায়।
নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে রাশিয়ার মোট ক্রুড বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের প্রায় অর্ধেক রপ্তানি করা হতো ইউরোপে।