November 22, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

রাশিয়াকে ঠেকাতে ‘খাদ্য কূটনীতির’ কৌশলে ইউরোপ

1 min read

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গম ও সারের দাম বেড়ে যাওয়া এবং সম্ভাব্য ঘাটতির বিষয়ে রুশ প্রচারণার জবাব দিতে ‘খাদ্য কূটনীতি’র কৌশল নিয়েছে ইউরোপ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের দাবি, এই সংকটকে রাশিয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফল হিসেবে প্রচারের চেষ্টা করছে। এতে বিশ্বব্যাপী ইইউর প্রভাব হুমকিতে পড়েছে। এ কারণে রুশ প্রভাব ঠেকাতে ‘খাদ্য কূটনীতি’ ও ‘বর্ণনা যুদ্ধে’ অবতীর্ণ হওয়ার পরিকল্পনা করছে ইউরোপ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, বলকান, উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রুশ প্রভাব ঠেকাতে খাদ্য কূটনীতি চালু করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। থাকছে মোটা অংকের অর্থসহায়তাও।

এসব দেশে খাদ্য ঘাটতি মোকাবিলায় জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সঙ্গে নতুন উদ্যোগ ঘোষণা করতে চলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইইউর বৃহত্তম কৃষিপণ্য উৎপাদক ফ্রান্স ‘ফার্ম’ নামে একটি কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছে। এর মাধ্যমে দরিদ্র দেশগুলোর জন্য একটি বৈশ্বিক খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

গত মঙ্গলবার ইইউ ও জাতিসংঘ খাদ্য সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভস লে দ্রিয়াঁ জানিয়েছেন, আগামী জুন পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সভাপতি থাকছে ফ্রান্স। এর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই খাদ্য কূটনীতির বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি নিশ্চিত করতে চায় দেশ

ছাড়া, জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পরিবর্তন করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে হাঙ্গেরি। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) নিশ্চিত করেছে, তারা একটি খাদ্য আমদানি অর্থায়ন ব্যবস্থা বিবেচনা করছে।

তবে ইইউর বিদেশ বিষয়ক দপ্তর বলছে, বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে এফএও মহাপরিচালকের সঙ্গে কাজ করা খুবই ‘চ্যালেঞ্জিং’। এ বিষয়ে জাতিসংঘের সংস্থাটিকে দ্রুত কাজ করার জন্য ইউরোপ চাপ দিচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে রয়টার্স।

সহায়তা প্যাকেজ
ইউরোপের আরেক কূটনীতিক জানিয়েছেন, খাদ্য সংকটের বিষয়ে রাশিয়ার প্রচারণা ‘ভুয়া’ বলে মনে করে ব্রাসেলস। রাশিয়ার সঙ্গে খাদ্য বাণিজ্য নিষিদ্ধ করা হয়নি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

২৭ সদস্যের এই জোট রাশিয়া থেকে খাদ্য আমদানি নিষিদ্ধ না করলেও সারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। রাশিয়ার পাশাপাশি এর মিত্র বেলারুশ থেকেও সার আমদানি নিষিদ্ধ করেছে তারা।

ফরাসি মন্ত্রী লে দ্রিয়াঁর দাবি, এসব নিষেধাজ্ঞা সম্ভাব্য খাদ্য সংকট তৈরি করছে না, করছে ইউক্রেনে রাশিয়ার দখরদারত্ব। ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল গত সোমবার বলেছেন, বন্দরগুলোতে আক্রমণ এবং গমের গুদামে বোমা হামলার মাধ্যমে ইউক্রেনের কৃষিপণ্য রপ্তানি কঠিন করে তুলছে রাশিয়া।

ইউরোপীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনের গমের গুদামগুলো পরিপূর্ণ থাকলেও জ্বালানি ঘাটতির কারণে তারা রপ্তানি করতে পারছে না। এ কারণে ইইউ পোল্যান্ডের মাধ্যমে খাদ্য রপ্তানি সহজতর করার চেষ্টা করছে এবং পরিস্থিতি সহজ করতে ইউক্রেনীয় কৃষকদের কাছে জ্বালানি সরবরাহে সহায়তা করছে।

ইউরোপীয় এই জোট সবচেয়ে অরক্ষিত দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার জন্য ২২ কোটি ৫০ লাখ ইউরো বরাদ্দ করেছে তারা। এর প্রায় অর্ধেকই পাবে মিসর। এছাড়া লেবানন, জর্ডান, তিউনিশিয়া, মরক্কো ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ প্রত্যেকে দেড় থেকে আড়াই কোটি ইউরো জরুরি সহায়তা পাবে। আরও ৩০ কোটি ইউরো কৃষি সহায়তা দেওয়া হবে পশ্চিম বলকান দেশগুলোকে।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *