পদ্মা সেতু ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও সহনশীল
1 min readপদ্মা সেতুতে স্থাপন করা হয়েছে ১০ হাজার টন ওজন বহনে সক্ষম বিয়ারিং। অত্যাধুনিক ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং’য়ের সক্ষমতায় রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও টিকে থাকতে পারবে সেতুটি। এখন পর্যন্ত বিশ্বের কোনো সেতুতে এমন সক্ষমতার বিয়ারিং লাগানো হয়নি বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।
প্রকল্প সূত্র বলছে, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে পদ্মা সেতু তিনটি বিশ্ব রেকর্ড গড়ছে। প্রথমটি হলো- সেতুর পিয়ার/খুঁটির নিচে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরে স্টিলের পাইল বসানো হয়েছে। এসব পাইল তিন মিটার ব্যাসার্ধের।
দ্বিতীয় রেকর্ড হলো- নদী শাসনসংক্রান্ত। নদী শাসনে চীনের ঠিকাদার সিনোহাইড্রো করপোরেশনের সঙ্গে ১১০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়েছে। এর আগে নদী শাসনে এককভাবে এত বড় দরপত্র আর হয়নি। সর্বশেষ ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং’য়ের সক্ষমতা হচ্ছে ১০ হাজার টন। এখন পর্যন্ত কোনো সেতুতে এমন সক্ষমতার বিয়ারিং লাগানো হয়নি।
এ ছাড়া পদ্মা সেতুতে পাইলিং ও খুঁটির কিছু অংশে অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা অতি মিহি (মাইক্রোফাইন) সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর নদীতে থাকা ৪০টি পিলারের নিচের পাইল ইস্পাতের। আর ডাঙার দুটি পিলারের পাইল কংক্রিটের। নদীতে তিন মিটার ব্যাসার্ধের ইস্পাতের বড় বড় পাইপ রয়েছে, যার ভেতরটা ফাঁপা। ২২টি পিলারের নিচে ইস্পাতের এমন ছয়টি করে পাইল বসানো হয়েছে। বাকি ২২টিতে বসানো হয়েছে সাতটি করে পাইল। আর ডাঙার দুটি পিলারের নিচের পাইল আছে ৩২টি, যা গর্তের মধ্যে রড-কংক্রিটের ঢালাইয়ের মাধ্যমে হয়েছে।
নদীর পানি থেকে প্রায় ১৮ মিটার উঁচু পদ্মা সেতুর তলা। পানির উচ্চতা যতই বাড়ুক না কেন, এর নিচ দিয়ে পাঁচতলার সমান উচ্চতার যে কোনো নৌযান সহজেই চলাচল করতে পারবে। সেতুটির মূল কাঠামোর উচ্চতা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় সমান।
প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, পদ্মা নদীর পানির প্রবাহ পরিবর্তন হয়। এ জন্য নৌযান চলাচলের পথ সব স্থানেই সমান উচ্চতায় রাখার চেষ্টা রয়েছে সেতুটিতে।