জামা-জুতা কেনার টাকা পাচ্ছে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা
প্রাথমিকপর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। নতুন প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী বকেয়াসহ ৯ মাসের উপবৃত্তির টাকা একসাথে পাবে। করোনাভাইরাসের সঙ্কটের কারণে ঈদের আগেই এই টাকা পাবে শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে এই প্রথমবারের মতো প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা জামা, জুতা ও ব্যাগ কেনার জন্য অতিরিক্ত আরো এক হাজার করে টাকা পাবে।
প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, নতুন প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিকের প্রতি শিক্ষার্থীকে ৫০ টাকা হারে উপবৃত্তি দেয়া হলেও নতুন প্রকল্পের তা বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক স্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে দেয়ার টাকার পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। প্রাথমিকস্তরের এক সন্তানবিশিষ্ট পরিবারের মাসিক উপবৃত্তি আগে ১০০ টাকা থাকলেও তা বাড়িয়ে ১৫০ টাকা করা হয়েছে। নতুন মেয়াদে দুই সন্তানবিশিষ্ট পরিবারের উপবৃত্তি ৩০০ টাকা, তিন সন্তানবিশিষ্ট পরিবারের উপবৃত্তি ৪০০ টাকা ও চার সন্তানবিশিষ্ট পরিবারের উপবৃত্তি ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নি¤œমাধ্যমিকস্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে দেয়ার টাকার পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত চালু আছে এমন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের এক সন্তানবিশিষ্ট পরিবারের মাসিক উপবৃত্তি আগে ১২৫ টাকা থাকলেও তা বাড়িয়ে ২০০ টাকা করা হয়েছে। নতুন মেয়াদে এসব স্কুলে পড়া দুই সন্তানবিশিষ্ট পরিবারের উপবৃত্তি ৪০০ টাকা, তিন সন্তানবিশিষ্ট পরিবারের উপবৃত্তি ৫০০ টাকা ও চার সন্তানবিশিষ্ট পরিবারের উপবৃত্তি ৬০০ টাকা করা হয়েছে। একই সাথে প্রকল্পের নতুন সংশোধনীতে প্রধানমন্ত্রী প্রতি শিক্ষার্থীকে জামা, জুতা ও ব্যাগ কেনার জন্য এক হাজার করে অ্যালাউন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সূত্র আরো জানায়, প্রকল্পের মেয়াদ গত জানুয়ারি থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত চলমান থাকবে। একই সাথে গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের উপবৃত্তির টাকা অতিসত্বর দেয়া হবে। এ ছাড়া করোনাকালীন জানুয়ারি থেকে জুনের (দুই কিস্তি) উপবৃত্তি একসঙ্গে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উপবৃত্তির টাকা বিতরণের জন্য শিক্ষার্থীদের তথ্য ১৪ মের মধ্যে পাঠাতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে টাকা পাঠাতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে জানা গেছে।
উল্লেখ্য প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তার ও মান উন্নয়নে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেয় সরকার। এই উপবৃত্তির ফলে প্রাথমিকে ভর্তি বেড়েছে, কমেছে ঝরে পড়া। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে গত বছরের অক্টোবর থেকে এই টাকা পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ গত ডিসেম্বরে শেষ হওয়ায় জটিলতা আরো বাড়ে। করোনার এই সঙ্কটের সময় টাকা পেলে উপকার হতো বলে অভিভাবকরা বলে আসছে।
সরকারের অনুমোদন পাওয়ায় এখন আগামী কিছুদিনের মধ্যে গত অক্টোবর-ডিসেম্বরের কিস্তির উপবৃত্তির টাকা দেয়া হবে। আর জানুয়ারি থেকে জুনের টাকা ঈদের আগেই দেয়া হবে। একই সঙ্গে জামা, জুতা ও ব্যাগ কেনার টাকাও দেয়া হবে। প্রতি তিন মাস পরপর বছরে চার কিস্তিতে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা দেয়া হয়। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এই টাকা দেয়া হয় শিক্ষার্থীদের মায়েদের কাছে।