চালের দাম কমলো
1 min readভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ হলেও চলতি বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে আসতে শুরু করায় সপ্তাহের ব্যবধানে হিলিতে চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা কমেছে। কয়েকদিনের মধ্যে চালের দাম আরও কমতে পারে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। চালের দাম কমায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষ।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত আমনের ভরা মৌসুমে দেশে চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে বিপাকে পড়েন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। এমন অবস্থায় চালের বাজার স্থিতিশীল করতে ভারত থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। আমদানি শুল্ক ৬২.৫ ভাগ থেকে কমিয়ে ২৫ ভাগ করে কয়েক লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। দেড় বছর পর ৯ জানুয়ারি থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। সম্প্রতি সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ৩০ এপ্রিল থেকে চাল আমদানি বন্ধ হয়েছে। বর্তমানে হিলি বাজারে শম্পাকাটারি চাল ৫৬ টাকা থেকে কমে ৫৩ টাকা, মিনিকেট ৫৮ থেকে কমে ৫৬ টাকা, জিরা চাল ৫০ থেকে কমে ৪৮ টাকা, রত্না ৪৬ থেকে কমে ৪৩- ৪৪ টাকা এবং স্বর্ণা চাল ৪৪ থেকে কমে ৪২টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
চাল কিনতে আসা ভ্যানচালক লুৎফর রহমান বলেন, ‘করোনার কারণে আগের মতো আয় রোজগার নেই। আগে সারাদিন ভ্যান চালিয়ে ৪শ’-৫শ’ টাকা ইনকাম হলেও বর্তমানে এক থেকে দেড়শ’ টাকা ইনকাম করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এর ওপর যেভাবে চালের দাম বাড়তির দিকে ছিল তাতে করে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য চাল কিনে খাওয়া অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বর্তমানে সেই অবস্থা থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। নতুন চাল আসার কারণে চালের দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা করে কমেছে। এতে করে বেশ সুবিধা হয়েছে। সামনের দিনে চালের দাম যদি আরও কমে তাহলে আমাদের মতো মানুষের সুবিধা হবে।’
হিলি বাজারে চাল কিনতে আসা শ্রমজীবী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আগে মোটা চালের দাম বেশি ছিল ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা, এখন নতুন চাল আসার কারণে দাম কমে ৪১ থেকে ৪২ টাকা হয়েছে। এর কারণে আমরা খানিকটা কম দামে চাল কিনতে পারছি। এতে করে সুবিধা হয়েছে।’
হিলি বাজারের চাল বিক্রেতা স্বপন কুমার ও সুব্রত কুণ্ডু বলেন, ‘সম্প্রতি একসঙ্গে সারাদেশে বোরো মৌসুমের ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়ে গেছে। ধান উৎপাদনও হয়েছে প্রচুর। দেশের বিভিন্ন স্থানের সব অটোমিলগুলো চালু হয়ে গেছে। উৎপাদন শুরু হয়েছে চাল। এ কারণে বাজারে চালের দাম কমতির দিকে রয়েছে। এছাড়াও দেশীয় নতুন চাল আসার কারণে আমদানিকারকদের গুদামে থাকা চালগুলো খানিকটা কম দামে বাজারে ছেড়ে দিচ্ছেন। এতে করে বাজারে চালের সরবরাহ বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা করে কমেছে। সামনের দিনে চালের দাম আরও দুই-এক টাকা কমবে বলে আশা করছি।’
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘বন্দর দিয়ে জানুয়ারি থেকে গড়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ ট্রাক করে চাল আমদানি অব্যাহত ছিল। তবে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ৩০ এপ্রিল থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। এ সময়ে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এক লাখ ৭১ হাজার টন চাল ভারত থেকে আমদানি হয়েছে। বন্দরের ওয়ার হাউজে যেসব চাল ছিল সেগুলোও আমদানিকারকরা পর্যায়ক্রমে খালাস করে তাদের নিজস্ব গুদামে নিয়েছেন।’