করোনা মোকাবিলায় সবার সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
1 min readকরোনার সেকেন্ড ওয়েভে সংক্রমণ এবং মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এই রোগের বিস্তার মোকাবিলায় সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তিনি দেশের ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের রফতানি খাতকে সমৃদ্ধকরণে সংশ্লিষ্ট মহলকে গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার (২৭ জুন) ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৪’ প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ অবস্থা (করোনা) আমরা মোকাবিলা করতে পারবো। ইনশাআল্লাহ সে বিশ্বাস আমাদের রয়েছে। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা চাই। আবার যেহেতু মানুষ ব্যাপকভাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং মৃতের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তাই সবাই একটু সাবধানে থাকবেন। নিজেকে এবং পরিবারকে নিরাপদে রাখবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে নিজেকে এবং অপরকে সুরক্ষিত রাখবেন-সেটা আমার অনুরোধ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ব্যাপক বরাদ্দ দিচ্ছি। এখন তো করোনাভাইরাসের যুগ। মাত্র ১০ টাকায় একজন কৃষক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। সেই সঙ্গে কৃষি উপকরণের যে টাকা সেটা তাদের কাছে সরাসরি যাতে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যায়, সেই ব্যবস্থাটাও আমরা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার কৃষকদের সব থেকে বেশি মর্যাদা দেয়। শুধু তাই নয়, আমরা বর্গাচাষীদের বঞ্চিত করিনি। বিনা জামানতে বর্গাচাষীদের ঋণ দেয়া শুরু করি। উদ্দেশ্য ছিল তারা যেন সর্বশক্তি নিয়োগ করতে পারে উৎপাদনে। আমাদের মাটি এত উর্বর যে একটু গবেষণা করলে যে কোনো ফসল উৎপাদন করা যায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পতিত জমিতে কীভাবে ফসল ফলানো যায় তার জন্য মাটি নিয়ে গবেষণা চলছে। সেখানে গবেষণায় আমরা সাফল্য অর্জন করেছি।’ সরকার নতুন করে ৮০ হাজার হেক্টর পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে বলেও জানান সরকার প্রধান। এখনও বহু জমি পতিত পড়ে আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তার সরকার সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমরা গুরুত্ব দিতে চাই কৃষিপণ্য বা খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পকে। কেননা এ করোনাকালে আমরা যদি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারি তাহলে নিজেদের চাহিদা যেমন মেটাতে পারবো তেমনি অন্যকেও সহযোগিতা করতে পারবো। রফতানির ক্ষেত্রেও আমাদের পণ্য বৃদ্ধি করতে পারবো।’
তিনি বলেন, ফল-মূল, শাক-সবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ-সবকিছুই আমরা উৎপাদন বাড়িয়ে এটাকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করে সেগুলো আমরা বিদেশে রফতানি করতে পারি। কাজেই প্রক্রিয়াজাতকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই ১০০টি বিশেষ অঞ্চলে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি সেখানে যেন কৃষি প্রক্রিয়াজতকরণ শিল্প গড়ে ওঠে, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে ওঠে, যা আমরা বিদেশেও রফতানি করতে পারবো।‘ তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করার বিশেষ অনুরোধও জানান।
বাংলাদেশ আর পিছিয়ে নয় এগিয়ে যাবে, এমনই দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘২০০৮ সালের পর থেকে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় থাকতে পারায় আমরা হাতে সময় পাওয়ায় গবেষণায় যেমন উন্নতি করেছি, তেমনি দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পেরেছি, কেননা জাতির পিতা আমাদের এই স্বাধীন দেশ এনে দেয়ার সময় এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। সে চেষ্টা সরকার অব্যাহত রেখেছে।
কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক ‘বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার ১৪২৪’ প্রদান করেন। যার মধ্যে রয়েছে ৫টি স্বর্ণ পদক, ৯টি রৌপ্য পদক এবং ১৮টি ব্রঞ্জ পদক। কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৩২ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের মাঝে এ পদক বিতরণ করা হয়।