একাত্তরের চেয়েও কঠিন যুদ্ধে রয়েছি: নানক
1 min readসাম্প্রদায়িক প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি আজও বাংলাদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্নভাবেই দেশের স্বাভাবিক অবস্থাকে অস্বাভাবিক অবস্থায় পরিণত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একাত্তরের চেয়েও একটি কঠিন যুদ্ধে রয়েছি বলে দাবি করেন তিনি।শনিবার (২০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সবুজবাগ বুদ্ধ মহাবিহারে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ প্রার্থনা, অনাথ শিশুদের মাঝে বস্ত্র ও খবার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য ও ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম রহমতুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি এবং আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং সংশ্লিষ্ট উপকমিটির সদস্য সচিব সুজিত রায় নন্দী।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বিশ্বনেতা হিসাবে সারাবিশ্বে পরিচিত ছিলেন। তিনি সারাজীবন নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সংগ্রাম করে গেছেন, মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। বারবার ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছিলেন। অসম্ভবকে সম্ভব করার মতো নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
নানক আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন অগ্রগতির এক মহাসড়কে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি সূচকে শেখ হাসিনার নেৃতত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন স্বাপ্নিক মানুষ। তিনি নিজে স্বপ্ন দেখেন এবং মানুষকে স্বপ্ন দেখান এবং স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। তাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার কাছে দেশের মানুষের প্রত্যাশাও অনেক বেশি। মানুষের এই প্রত্যাশা পূরণে তিনি নিরলসভাবে কাজ করছেন।’
সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী অপশক্তির দিকে আঙুল তুলে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্ব সরকার গঠন হলে বা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যখনই সরকার গঠন হয়, জনগণ যখন ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তখনই ষড়যন্ত্র শুরু হয়। এই আওয়ামী লীগকে একটি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি মেনে নিতে পারে না।’
আর মেনে নিতে পারে নাই বলেই এই তিন টার্মের প্রথম মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার ২১ দিনের মাথায় বিডিআর বিদ্রোহ ঘটিয়ে সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করা হল। শুধু কি তাই, রামুর বৌদ্ধ বিহারে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হল, ওই প্রতিক্রিয়াশীল ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী, রামুতে ধ্বংসযজ্ঞ চালাল। সকল পবিত্র বৌদ্ধ বিহারের মূর্তিকে ধ্বংস করে দিল। শত বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছিল এই ধর্মান্ধ প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি’- বলেন নানক।
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি আজও বাংলাদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা আজ বিভিন্ন ভাবেই আমার স্বাভাবিক অবস্থাকে অস্বাভাবিক অবস্থায় পরিণত করতে চায়।’
সুনামগঞ্জের শাল্লায় যারা প্রায় ৮২টি হিন্দু বাড়ির উপর হামলা করে তছনছ করে দিয়েছেন, মূর্তি-মন্দির ভেঙেছেন, তারা কারা? এই শক্তির সঙ্গে যারা হাত মিলিয়েছেন, এই শক্তির সঙ্গে যারা বুঝে, না বুঝে হাত মিলিয়েছেন কাউকে এই সরকার, শেখ হাসিনার সরকার দেয় নাই, ছাড় দেবে না। তাদের সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে’- বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমরা যখন এগিয়ে যাচ্ছি তখন শত্রুরা শক্তিশালী হচ্ছে। শত্রুরা ষড়যন্ত্রকে আরও শানিত করছে। এই শানিত ষড়যন্ত্র থেকে আমাদেরকে সচেতন এবং ঐক্যবদ্ধ থেকে আমাদের সকল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। এভাবেই এদেরকে মোকারিলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করাই আজকে একাত্তরের চেয়েও একটি কঠিন যুদ্ধে আমরা রয়েছি। এই যুদ্ধে একাত্তরে যেমনিভাবে আমরা হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান এক বাঙ্কারে যুদ্ধ করে আমরা যেমনিভাবে শক্তিধর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আর এ দেশের রাজাকার আলবদরদেরকে পরাজিত করে বাংলাদেশ এনেছিলাম, তেমনিভাবেই আমাদের হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা কায়েম করতে হবে, এই হোক আমাদের শপথ।’