ঘরের মাঠ হ্যাগলি ওভালে ল্যাথাম অপরাজিত আছেন ১৬৪ বলে ১১৮ রান করে। তার দ্বাদশ টেস্ট সেঞ্চুরি এটি। অধিনায়ক হিসেবে ৬ টেস্টে ফিফটিই পেরোতে পারলেন তিনি প্রথমবার।
উইল ইয়াংয়ের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে শক্ত ভিত গড়ে দেন ল্যাথাম। যে মাঠে প্রথম দিনে ইনিংস শুরু করার মতো কঠিন কাজ ক্রিকেট বিশ্বে কমই আছে, যেখানে প্রথম ইনিংসে সেরা উদ্বোধনী ছিল আগে স্রেফ ৩৭ রানের, সেখানেই ১৪৮ রানের দারুণ জুটি গড়েন ল্যাথাম ও ইয়াং।
কিউইদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি এমন রান জোয়ারে বড় ভূমিকা আছে বাংলাদেশের বাজে বোলিংয়েরও। আগের টেস্টে দুর্দান্ত বোলিং করা পেস আক্রমণ এবার সহায়ক কন্ডিশনেও ভীষণ বিবর্ণ। সকালের সেশনে মেঘলা আকাশের নিচে সবুজ ঘাসে ভরা উইকেটে তারা পারেনি কিউই ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিতে। দ্বিতীয় সেশনে খানিকটা উন্নতি হলেও তা হয়নি যথেষ্ট।
তিন পেসারই খাটো লেংথে ও স্টাম্পের বাইরে বল করেছেন অনেক। ফুল লেংথগুলো বেশ কবারই হয়ে গেছে হাফ ভলি। খুব বেশি মুভমেন্টও আদায় করতে পারেননি কেউ।
আলগা বল পেয়ে তা কাজে লাগিয়েছেন ল্যাথাম। চার আদায় করেছেন কিছু ভালো বলেও।
ম্যাচের আগে বাংলাদেশ বড় ধাক্কা খায় কুঁচকির চোটের মুশফিকুর রহিমকে না পেয়ে। তার জায়গায় দলে ফেরেন কিপার-ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান। চোট পেয়ে মাহমুদুল হাসান জয়ের ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত ছির আগেই। তার জায়গায় টেস্ট ক্যাপ পান মোহাম্মদ নাঈম শেখ, দেশের শততম টেস্ট ক্রিকেটার তিনি।
হ্যাগলি ওভালে সব দলেরই চাওয়া থাকে। সেই ভাগ্য পরীক্ষায় জিতে আগে বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু অধিনায়ক মুমিনুল হকের মুখে হাসি ফোটানোর মতো বোলিং করতে পারেননি পেসাররা।
শুরুর দিকে তবু উইকেট না পেলেও কিছুটা নিয়ন্ত্রণ ছিল তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের বোলিংয়ে। নতুন বলে ৮ ওভারে কিউইদের রান ছিল ২২।
নবম ওভারে আক্রমণে আসেন গত টেস্টের নায়ক ইবাদত। প্রথম বলটি অনেক বাইরে করে ল্যাথামের ব্যাটে চার হজম করলেও দ্বিতীয় বলেই তার এলবিডব্লিউর আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার ওয়েন নাইটস। পঞ্চম বলে আরেকবার। দুবারই রিভিউ নিয়ে টিকে যান ল্যাথাম। একবার বল যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরে দিয়ে, আরেকবার স্টাম্পের ওপর দিয়ে।
আর দু-তিনবার ব্যাটের কানায় লেগেছে বল। এছাড়া পুরো সময়টাই ল্যাথাম ও ইয়াংকে কোনোরকম বিপাকে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথম ঘণ্টায় ১২ ওভারে রান ছিল ৩৪, পরের ঘণ্টায় ১৩ ওভারে আসে ৫৮ রান।
লাঞ্চের পর প্রথম ওভারেই সুযোগ পায় বাংলাদেশ। ইবাদতের বলে ইয়াংয়ের ব্যাট ছুঁয়ে বল যায় উইেটর পেছনে। প্রথম স্লিপে যা সহজ ক্যাচ হতে পারত নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে। কিন্তু দ্বিতীয় স্লিপ থেকে ডাইভ দিয়ে ধরতে গিয়ে তা ফেলে দেন লিটন দাস।
পরে ওভারথ্রো থেকে ওই বলে আসে ৭ রান! ইবাদতের পরের ওভারে আরেকটি ওভারথ্রো থেকে আসে ৫ রান।
পরে মেহেদী হাসান মিরাজকে বাউন্ডারি মেরে ইয়াং ফিফটি করে ৯৮ বলে। তাকে ৫৪ রানে থামি জুটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। শরীর থেকে দূরে ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে ধরা পড়েন ইয়াং।
নতুন ব্যাটসম্যান ডেভন কনওয়ে ক্রিজে গিয়ে খেলতে থাকেন থিতু ব্যাটসম্যানের মতোই। তার সঙ্গেও জুটি গড়ে তোলেন ল্যাথাম।
ল্যাথামকে খুব বেশি বিপাকে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। হ্যাগলি ওভালের সফলতম ব্যাটসম্যান শতরান পা রাখেন স্রেফ ১১৩ বল খেলেই।
পরের সময়টুকুও নির্বিঘ্নে খেলে তিনি চা বিরতিতে যান কনওয়ের সঙ্গে। অবিচ্ছিন্ন জুটির রান হয়ে গেছে ৫৪।