উন্নয়নে বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট
1 min readক্ষমতার টানা তৃতীয় মেয়াদে দুই বছর শেষ করে কাল তিন বছরে পা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। দলটি আগের দুই মেয়াদে ১০ বছর পার করেছে বেশ সফলতার সঙ্গেই। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় নিয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। সে সময় দেশের অর্থনীতি ছিল অনেকটাই ভঙ্গুর। বিদ্যুৎ খাত ছিল বেহাল। গত এক যুগে ৬ হাজার মেগাওয়াট থেকে এখন ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতায় পৌঁছেছে দেশ। তখন অবকাঠামো পরিস্থিতিও ছিল নাজুক। আর দারিদ্র্যের ছিল উচ্চ হার। একই সঙ্গে খাদ্য ঘাটতিও ছিল। কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগে ছিল মন্দাবস্থা। গত এক যুগে এসব খাতে এসেছে অভাবনীয় পরিবর্তন।
অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামোর উন্নয়নের মতো বড় খাতগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে দেশ পরিচালনা শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর পেরিয়ে গেছে এক যুগ। এই সময়ে বদলে গেছে দেশের উন্নয়নের দৃশ্যপট। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আর সরকারের ধারাবাহিকতায় অর্থনীতিতে এসেছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭২ বছর। মাথাপিছু গড় আয় বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ হাজার ডলার।
শুধু তাই নয়, যোগাযোগব্যবস্থাকে সহজ করেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ ফোর লেন মহাসড়ক। নবনির্মিত ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে সহজ করেছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলবাসীর চলাচল। ঢাকা ও চট্টগ্রামে নির্মিত ফ্লাইওভারগুলোরও সুফল পাচ্ছে দেশবাসী। কক্সবাজার থেকে টেকনাফে নির্মিত হয়েছে ৮০ কিলোমিটার দৃষ্টিনন্দন মেরিন ড্রাইভ। চট্টগ্রামে নির্মাণ হচ্ছে বে-টার্মিনাল। ব্যাপক হারে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে দেশজুড়ে করা হচ্ছে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল। প্রযুক্তিতে পরিবর্তন এনেছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। বেড়েছে কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন। ফলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বৈদেশিক রিজার্ভ বেড়েছে কয়েক গুণ। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। নানা চড়াই-উতরাই আর বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির বদনাম ঘুচিয়ে বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ঢাকার জীবনকে সহজ আর গতিময় করতে মেট্রোরেলের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল। যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন সংযোগ হবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাস্তবায়ন কাজও এগিয়ে চলছে। পায়রা ও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালসহ আরও অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। এর সবই সম্ভব হচ্ছে একই সরকারের ধারাবাহিকতার কারণে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘন ঘন সরকার পরিবর্তন হলে বিভিন্ন নীতি-কৌশণের পরিবর্তন ঘটে যা মূলত উন্নয়ন কর্মকান্ডকে স্তিমিত করে ফেলে। গত এক যুগে সরকার পরিবর্তন না হওয়ায় উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রয়েছে। এটি যে কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্যই মঙ্গলকর।
আওয়ামী লীগ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিশাল জয় পেয়ে ২০০৯ সালের শুরুতে সরকার গঠনের পরপরই সারা দেশে শুরু করে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড। দ্বিতীয় মেয়াদেও সরকার অপরবির্তিত থাকায় তা আরও গতি পায়। ঢাকাসহ সারা দেশের রাস্তাঘাট, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ-জ্বালানিসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোয় ধাবমান ঘোড়ার মতো উন্নয়ন কর্মকান্ড চলতে থাকে। দীর্ঘদিনের বাধা কাটিয়ে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে আসে অবিশ্বাস্য সাফল্য। এরই ধারাবাহিকতায় একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও টানা তৃতীয়বার জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এর আগে দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে যোগাযোগ, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, রেলসহ সংশ্লিষ্ট খাতগুলোয় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বৃহৎ প্রায় এক ডজন প্রকল্পের কাজ শুরু করে সরকার। এগিয়েও যাচ্ছিল বেশ দ্রুতগতিতে। তরতর করে বাড়তে থাকে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ও জিডিপি প্রবৃদ্ধি। কিন্তু ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনে শুরু হওয়া কভিড-১৯ মহামারী সারা বিশ্বে ২০২০ সালজুড়ে বিস্তৃতি লাভ করে। এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও নেমে আসে বিপর্যয়। থেমে যায় সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ড। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দু-একটি প্রকল্পের কাজ চললেও সেগুলোয় নেই কাক্সিক্ষত গতি। গত জুন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু আবারও সচল করে সরকার। বিশ্বের অনেক শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ বিপর্যয় এড়াতে ব্যর্থ হলেও বাংলাদেশ মোটামুটি সফলই হয়েছে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারেও এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ, যা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাও স্বীকৃতি দিয়েছে।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘করোনার আঘাতে আমরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তবে সেটাকে খুব ভালোভাবেই সামাল দিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে সামষ্টিক অর্থনীতি। ফলে অর্থনীতিও দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমাদের ক্ষতি কমই হয়েছে।’ নতুন বছরটা দেশের অর্থনীতির জন্য বেশ ভালোই যাবে বলে তিনি মনে করেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে এ দেশের মানুষের অভ্যন্তরীণ চাহিদার বেশির ভাগই মেটানো হয় দেশীয় উৎস থেকে। আর বিশ্বপরিমন্ডলে বাংলাদেশের কৃষির অবস্থান খুবই শক্তিশালী। ফলে মহাসংকট সত্ত্বেও বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি হয়নি। না খেয়ে থাকেনি কোনো মানুষ। হয়তো প্রয়োজনের চেয়ে কম খেয়েছে। এর আগের বছর ২০১৯ সালের শুরুটা ছিল দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই স্বস্তিদায়ক। সব উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হয়ে চলছিল বেশ দ্রুতগতিতে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও ছিল উচ্চ। মাথাপিছু আয়ও দ্বিগুণের বেশি হয়েছিল। কিন্তু অনিয়ম-দুর্নীতি আর বিশ্বমন্দার বাড়তি মাত্রা যোগ হওয়ায় সে বছরের শেষ দিকে এসে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা সামষ্টিক অর্থনীতি আচমকা হোঁচট খেয়ে বসে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় করোনা মহামারী। এর প্রচ- ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সামগ্রিক অর্থনীতি। যার রেশ এখনো শেষ হয়নি। বরং প্রথম ঢেউয়ের ধাক্কা পুরোপুরি কেটে ওঠার আগেই শুরু হয়েছে দ্বিতীয় ঢেউ। ফলে একমাত্র প্রবাসী আয় ছাড়া এখন পর্যন্ত দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সবগুলো প্রধান সূচক নেতিবাচক ধারায় রয়েছে। তাই সামনের দিনগুলোয় অর্থনীতির গতিবিধি কী হতে পারে তা অনুুমান করাও মুশকিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে প্রায় টানা এক দশক ধারাবাহিকভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ৫ শতাংশের বৃত্ত ভেঙে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্য দিয়ে নতুন এক অধ্যায় শুরু করে বাংলাদেশ। সব শেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এরপর করোনা মহামরীতে সারা বিশ্বের প্রায় সব দেশই নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি পেলেও বাংলাদেশ ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। আর চলতি অর্থবছর শেষে বাজেটের টার্গেট অনুযায়ী ৮ দশমিক ২ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অথচ ২০০৮ সালে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল মাত্র সাড়ে ৫ শতাংশ। ২০২২ সালের আগেই ডাবল ডিজিট (দুই অঙ্ক) প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। একইভাবে ২০০৯ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ৭০৯ মার্কিন ডলার। এখন তা ১৯০০ ডলার অতিক্রম করেছে। সে সময় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। এখন ৪৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। রপ্তানি ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৯ সালে তা ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আগামীতে ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। স্থায়ী কর্মসংস্থানে খুব একটা আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি না হলেও অস্থায়ী কর্মসংস্থান, বিকল্প কর্মসংস্থান ও কর্মমুখী শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে কর্মক্ষম মানুষ আর শ্রমশক্তিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে সরকার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘গত এক যুগে দেশের প্রায় সব ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্র, অবকাঠামো, বিদ্যুৎসহ কয়েকটি খাতে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু সরকারি অর্থের অপচয় ও দীর্ঘসূত্রতা রোধ করতে পারলে উন্নয়ন কর্মকান্ড আরও বেশি ত্বরান্বিত করা যেত। তবে একই মতাদর্শের সরকার টানা এক যুগ ক্ষমতায় থাকায় সব ধরনের নীতি-কৌশল একই রকম থেকেছে।’ তাই সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করাটাও বেশ সহজ হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে গত কয়েক বছরে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, নবীনগর ডিইপিজেড-চন্দ্রা-যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, মিরপুর ফ্লাইওভার, হাতিরঝিল, হানিফ ফ্লাইওভার, মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার, কুড়িল ফ্লাইওভার, বনানী ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে। চলমান এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে সড়কপথে চাপ কমবে। এর মাধ্যমে যেমন যানজট কমবে, তেমন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভ্রমণে জ্বালানি ও সময়- উভয়ই সাশ্রয় হবে। কমে আসবে পণ্য পরিবহন ব্যয়। বহুল প্রত্যাশিত ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে হাইস্পিড রেল স্থাপন প্রকল্পের কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজে স্বাভাবিক গতি ফিরেছে। এ প্রকল্পের সব স্প্যান বসানো সম্পন্ন করেছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। গত নভেম্বর পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ছিল ৮২ শতাংশ। আশা করা হচ্ছে ২০২২ সালের জুনের আগেই কাজ সমাপ্ত হবে। নভেম্বর পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে রেললিঙ্ক প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ২৮ শতাংশ। একইভাবে চলছে মেট্রোরেল লাইন-৬-এর কাজও। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের প্রথম অংশ দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সম্পন্ন হবে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজও এগিয়ে চলছে। বাস র্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) কাজেও গতি ফিরেছে। ইতিমধ্যে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। গত মার্চে খুলে দেওয়া হয়েছে ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েটির মূল অংশ। এ প্রকল্পের দ্বিতীয় অংশ তেঘরিয়া থেকে বাবুবাজার ব্রিজ পর্যন্ত ৩ কিলোমিটারের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ অংশের আড়াই কিলোমিটারই এলিভেটেড এবং বাকি অংশ সমতলভূমিতে নির্মিত। এর ফলে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা এগিয়ে যাবে আরেক ধাপ। ঝিলমিলবাসীও এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে পারবেন তেঘরিয়া থেকে। এ প্রকল্পের কাজও এ বছরের প্রথম প্রান্তিকেই শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, যোগাযোগের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণ করা হচ্ছে প্রায় কিলোমিটারের সুড়ঙ্গ। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’। গত নভেম্বর পর্যন্ত এ প্রকল্পের কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৬১ শতাংশ। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এর কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা থাকলেও ২০২১ সালের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো অবিরাম কাজ করছে। ঢাকা শহরের চারদিকে সাবওয়ে নির্মাণকাজের সমীক্ষা প্রায় শেষ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এ প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হবে নতুন বছরের প্রথম প্রান্তিকেই। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালের কাজেও গতি ফিরেছে। করোনা মহামারীতে সাধারণ ছুটির সময় যেসব শ্রমিক ও টেকনিশিয়ান নিজ দেশে গিয়ে আটকা পড়েন, তার অধিকাংশই ফিরে এসে কাজে যোগ দিয়েছেন। জানা গেছে, বিশ্বের অত্যাধুনিক, দৃষ্টিনন্দন বিমানবন্দরগুলোর সমতুল্য হবে শাহজালাল বিমানবন্দর। যেখানে থাকবে ইংল্যান্ডের হিথ্রো, সিঙ্গাপুরের চেঙ্গি কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের জন এফ কেনেডির মতো আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা।
উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশ যে আর্থসামাজিকভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে তার একটা ইতিবাচক বার্তা দেবে এ টার্মিনাল। বিমানবন্দরে নেমেই বিদেশি বিনিয়োগকারী, পর্যটকসহ আগতদের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে এক ধরনের ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করবে বলে মনে করে সরকার।