ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প: ধ্বংসস্তূপে এখনও আটকা বহু মানুষ
1 min readধ্বংসস্তূপে হন্যে হয়ে ভুক্তভোগী মানুষগুলোকে খুঁজছেন উদ্ধারকর্মীরা। কেউ বা আহত কাউকে উদ্ধারের পর ছুটছেন হাসপাতালের পথে। পুরো সিয়ানজুরে স্বজনদের কান্না আর আহাজারি। সোমবার (২১ নভেম্বর) ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১৬২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩২৬ জন।
রিখটার স্কেলে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হলেও এর আঘাতে কেঁপে ওঠে জাভা দ্বীপের বেশ কয়েকটি শহর। ভেঙে পড়ে বড় বড় দালান। ঘটেছে ভূমিধসের ঘটনাও। দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্মকার্তারা জানিয়েছেন, এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। নিহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্যমতে, ভূ-কম্পনটির উৎপত্তিস্থল ছিল সিয়ানজুর এলাকা থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।সিয়ানজুর প্রশাসনের মুখপাত্র অ্যাডাম বলেন, কয়েক হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভূমিকম্পে।
ভুক্তভোগীদের খোঁজে রাতভর চলে উদ্ধার তৎপরতা। সিয়ানজুর হাসপাতালগুলোতে হতাহত লোকজনের স্বজনদের ভিড় বাড়ছে।
ভূমিকম্পে আহত ৪৮ বছর বয়সী এক বাসিন্দা বর্ণনা দিচ্ছিলেন এভাবে ‘আমার ওপর সবকিছু ভেঙে পড়ে। আমার দুটি বাচ্চা বেঁচে গেছে, আমি তাদের উদ্ধার করেছি। বাকী ২ জনকে এখানে নিয়ে এসেছি এবং একজন এখনও নিখোঁজ।
মঙ্গলবার সকাল থেকে উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছে আরও কয়েকশ পুলিশ সদস্য। আনতারা নিউজ এজেন্সিকে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির ন্যাশনাল পুলিশের মুখপাত্র দেদি প্রসেতিও। তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করাই এখন তাদের প্রধান কাজ। পশ্চিম জাভার গভর্নর রিদওয়ান কামিল ভূমিকম্পে ১৬২ জন নিহত হওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছেন। ভূমিকম্পে নিহতদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে বলেও জানান তিনি। ভূমিকম্পের ফলে আইসোলেটেড হয়ে পড়া লোকজন যেন আরও দুর্ঘটনার মধ্যে না পড়েন সে বিষয়ে সতর্কও করেন তিনি।
সিয়ানজুর পুলিশ প্রধান মেট্রো টেলিভিশনকে জানান, ২০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের অনেকেই আর বেঁচে নেই। এখনও স্থানীয় বাসিন্দারা স্বজনদের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানাচ্ছেন।
এদিকে, কোথাও কোথাও বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় গত রাতে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হয় বলে জানা গেছে।
‘প্যাসিফিক রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থানের কারণে ইন্দোনেশিয়া অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ একটি দেশ। এর আগে ২০০৪ সালে দেশটির উত্তরে সুমাত্রা দ্বীপের কাছে ৯ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয় এবং এর ফলে সুনামি আঘাত হানে ১৪টি দেশে। ভারত মহাসাগরের উপকূলে ২ লাখ ২৬ হাজার মানুষ মারা যায় সে সময়। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল ইন্দোনেশিয়ার।