November 24, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

সুস্থ হাড় ও পেশির জন্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার

1 min read

একথা প্রায় সবারই জানা হাড় ও দাঁত সুস্থ রাখার পাশাপাশি পেশি গঠনে ভূমিকা রাখে ক্যালসিয়াম।

তাই দুধ খাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া দেহের চাহিদা পূরণে সহায়তা করে।

নিউ ইয়র্ক’য়ে ‘ফাংশনাল মেডিসিন এক্সপার্ট এবং লেখক ডা. মার্ক হেম্যান ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে জানান, দুধ ছাড়াও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ আরও অনেক খাবার আছে যা সুস্বাস্থ্যে ভূমিকা রাখে।

তার এই তথ্যের সূত্র ধরে ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ সুজান পির্কেল বলেন, “খুব সহজেই ভেষজ উপাদান থেকে দৈনিক ১০০০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম পাওয়া সম্ভব।”

ক্যালসিয়ামের উপকারিতা

যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ ক্যারিসা গ্যালওয়ে বলে, “শরীরের প্রায় প্রতিটি কোষই কোনো না কোনোভাবে ক্যালসিয়াম ব্যবহার করে। কেবল শক্তিশালী দাঁত এবং হাড় তৈরির ৯৯ শতাংশই ক্যালসিয়াম নয় বরং স্নায়ুতন্ত্রের পেশি গঠনেও এর ভূমিকা রয়েছে। এটা রক্ত জমাট বাঁধা ও অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ভঙ্গুর রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে সহায়তা করে।”

যে পরিমাণ ক্যালসিয়াম দেহে প্রয়োজন

“অন্যান্য পুষ্টির মতোই, ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বয়স এবং লিঙ্গসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে,” বলেন নিউ ইয়র্ক’য়ের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ জেনিফার মায়েং।

তার মতে, “একজন সাধারণ ব্যক্তির ক্যালসিয়ামের প্রস্তাবিত চাহিদা প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০০০ মি.লি. গ্রাম। তবে কিশোরী, মেনোপজ-পরবর্তী মহিলা এবং ৭০ বছরের বেশি বয়সি প্রাপ্তবয়স্কদের এর চেয়ে বেশি প্রয়োজন।”

ক্যালসিয়ামের কার্যকারিতা বাড়াতে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি’য়ের প্রয়োজন হয় বলে জানান মায়োং।

তিনি বলেন, “ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে। পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণের পরেও ভিটামিন ডি’য়ের অভাবে দেহে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়।”

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে

বাদাম ও বীজ

বীজ উচ্চ ক্যালসিয়াম ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার। তিল, চিয়া, সূর্যমুখী ও পপি বীজ খাওয়ার পরামর্শ দেন, পুষ্টিবিদ পির্কেল।

গাঢ় পত্রল সবজি

ডা. হেম্যানের মতে, “পালংশাকের মতো কলই শাকও উপকারী। এক কাপ শাকে ২৬৮ মি.লি. গ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এছাড়াও িএতে ঘুম বর্ধক হরমোন ট্রিপ্টোফেন বাড়াতে সক্ষম ভিটামিন বি সিক্স রয়েছে।

পুষ্টিবিদন পির্কেল, ক্যালসিয়ামের বৃদ্ধিতে কপি, সবুজ শালগম ও সবুজ শাক সবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন।

সপ্তাহের এক এক দিন সালাদ, স্মুদি ও অন্যান্য খাবারে গাঢ় সবুজ শাক যোগ করে খাওয়া ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে। এটা ভিটামিন ও খনিজেরও ভালো উৎস।

উদাহরণস্বরূপ, সবুজ শাকগুলো যকৃতের জন্য খুব ভালো এবং পটাসিয়ামের ভালো উৎস। শালগমের শাক হাড় সুস্থ রাখে। এক কাপ শাক দৈনিক ভিটামিন কে’য়ের চাহিদার ১৫৩ শতাংশ পূরণ করে।

টিনজাত মাছ

টিনজাত মাছ বিশেষ করে সার্ডিন ও স্যামন খাওয়ায় পরামর্শ দেন অনেক পুষ্টিবিদ।

ডা. হেম্যানের মতে, “সার্ডিনে ক্যালসিয়ামের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। প্রতি পরিবেশনে যা প্রায় ৩৫১ মি.লি. গ্রাম। এটা ফসফরাস ও ভিটামিন ডি’র ভালো উৎস যা হাড়, পেশি এবং দাঁত শক্ত করতে সাহায্য করে।”

এক পরিবেশন টিন জাত স্যামনে রয়েছে ৮২৬ মি.লি. গ্রাম ক্যালসিয়াম যা দৈনিক চাহিদার ৮০ শতাংশ পূরণ করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও আয়ু বাড়ায়।

সয়া ধরনের খাবার

সয়া ভেষজ প্রোটিন। টফুতে রয়েছে ৬১ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম এবং অনেক ব্র্যান্ডের সয়াতে বাড়তি ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি উচ্চ মাত্রার খনিজও পাওয়া যায়। টফুতে লৌহ এবং ‘এএলএ ওমেগা-থ্রিস থাকে যা হৃদ-স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে।

দই

সকালের নাস্তায় দই খাওয়া ক্যালসিয়ামের চাহিদা মিটায়। এটা খনিজের ভালো উৎস। কম চর্বির সাধারণ দইয়ের আট আউন্স পরিমাণে প্রায় ৪১৫ মি.গ্রা. খনিজ থাকে। এর প্রোবায়োটিক হৃদ-স্বাস্থ্য ভালো রাখে।রাতে স্মুদি, ওটস বা বাদাম ও বেরির সঙ্গে দই যোগ করে খাওয়া ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে।

দুধ

পুষ্টিবিদ মিয়াং বলেন, “দুধের চর্বির মাত্রার অনুযায়ী এক কাপ গরুর দুধে ৩০০ থেকে ৩২৫ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম থাকে, যা দৈনিক চাহিদার শতকরা ২৫ ভাগ। ছাগলের দুধে প্রায় ৩২৫ মি.গ্রা. বা দৈনিক চাহিদার ২৫ শতাংশ ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।”

মটর

সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে অনেক ক্যালসিয়ামের উৎস।

পুষ্টিবিদ ক্যারিসা গ্যালওয়ে বলেন, “এক কাপ ছোলার মটরে ২৪৪ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম থাকে।”

বেশি ক্যালসিয়াম গ্রহণে ক্ষতি

ফ্লোরিডা’র নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ কিম রোজ বলেন, “হাইপার ক্যালসেমিয়া এমন এক অবস্থা যা ক্যালসিয়ামের মাত্রার বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত।”

অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ তৃষ্ণা ও প্রস্রাবের পাশাপাশি বমি বমিভাব, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং বিভ্রান্তি বাড়ায়।

পুষ্টিবিদ গ্যালওয়ের বলেন, “ক্যালসিয়াম গ্রহণের একটা ঊর্ধ্ব সীমা আছে। খাবারের মাধ্যমে না নিয়ে সম্পূরকের মাধ্যমে বাড়তি ক্যালসিয়াম গ্রহণ করলে এমন সমস্যা দেখা দেয়।”

তিনি জানান, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দৈনিক ২০০০ মি.লি. গ্রামের বেশি ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা ঠিক নয়।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *