ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়তে দেয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর উপহার
1 min readভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে জীবিকায়ন নিশ্চিত করণে প্রধানমন্ত্রীর উপহারস্বরূপ দেয়া উপকরণ পেয়েছেন কক্সবাজার সদরের দুই ইউনিয়নের ৩৪ ভিক্ষুক। সোমবার দুপুরে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের স্কুল অরুণোদয় হলরুমে সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে এসব উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।
সভায় জানানো হয়, স্বনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভিক্ষুকমুক্ত দেশ গড়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই অংশ হিসেবে কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ও ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৩৪ জন ভিক্ষুককে দিয়ে কক্সবাজারে এ যাত্রা শুরু করা হয়েছে। উপকারভোগী পরিবারের জন্য প্রাথমিকভাবে দু’মাসের খাবার, চাহিদামতো জীবিকার কাজে ব্যবহারের উপকরণ দেয়া হচ্ছে। এসব উপকরণের মধ্যে রয়েছে-হাঁস-মুরগি, ছাগল, রিকশা ও সেলাই মেশিনসহ আরো বিভিন্ন পণ্য। অনেককে টাকা দিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করানো হচ্ছে।
সভায় অতিথিরা বলেন, নবীজীর শিক্ষা করো না ভিক্ষা। সেই দর্শন থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উদ্যোগ নিয়েছিলেন ভিক্ষা নয়, কর্মের আয়ে চলবে জীবন। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু সেই উদ্যোগ নিয়ে যখন কাজ শুরু করলেন, তার কিছুদিন পরই বিপথগামীদের হাতে সপরিবারে নিহত হন। এরপর পরনির্ভরশীলতা রোধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি পরবর্তী সরকার।
তারা আরো বলেন, দীর্ঘ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর নেয়া উদ্যোগগুলো আবার শুরু করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় সারাদেশে কর্মহীন তথা ভিক্ষুকদের স্বনির্ভর করার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। কক্সবাজারে দুটি ইউনিয়নের ৩৪ ভিক্ষুককে দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছে।
প্রধান অতিথি ডিসি মো. কামাল হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে জেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। এখানে জমা হয় প্রায় ৪৮ লাখ টাকা। এ টাকার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুদান ৫০ লাখ টাকা যুক্ত করে ৯৮ লাখ টাকা হয়। এ ফান্ড থেকেই প্রথম যাত্রায় ৩৪ জনের পেছনে খরচ হচ্ছে প্রায় ৯ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, ধীরে ধীরে পুরো জেলায় এ কার্যক্রম ছড়ানো হবে। সদরের পরে কুতুবদিয়া, মহেশখালী, উখিয়া-টেকনাফে এ যাত্রা শুরু করা হবে। জেলায় এক হাজার ৫০১ জনকে ভিক্ষুক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের পুনর্বাসন করা হবে।
ডিসি বলেন, যাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে তাদের তদারকি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী দু’বছর পর্যন্ত তাদের পেছনে সময় দিয়ে আর যেন ভিক্ষায় না ফেরে তা নিশ্চিত করা হবে। এভাবে কক্সবাজারকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা হবে। পর্যটনের স্বার্থে এটি অতীব জরুরি। এ উদ্যোগে প্রশাসনের পাশাপাশি বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসতে অনুরোধ জানান তিনি।
কক্সবাজার সদর ইউএনও সুরাইয়া আক্তার সুইটির সভাপতিত্বে উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম চৌধুরী, জাসদ সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল, এডিসি মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, ভাইস চেয়ারম্যান হামিদা তাহের, সদর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার শামশুল হুদা, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি নজিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর প্রমুখ।