November 24, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়োগ, তদন্ত করবে ইউজিসি

1 min read

বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করলেও তিনি কোনো নিয়ম মানেন না। নিয়মের তোয়াক্কাও করেন না। স্বেচ্ছাচারিতায় ট্রাস্টি বোর্ডের একাধিক সদস্যকে বাদ দিয়ে স্ত্রী, ছেলে-মেয়েকে যুক্ত করেছেন। এতে কারও সম্মতি না থাকলেও নিজের দাপটে সব সিদ্ধান্ত নেন রাজশাহী সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটির (আরএসটিইউ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. এম এ আজিজ।

সম্প্রতি বিভিন্ন অনিয়মের ১১টি লিখিত অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) জামা দিয়েছেন ট্রাস্টি বোর্ডের এক সদস্য ড. মো. সোলায়মান। এছাড়া ট্রাস্টি বোর্ডের আজীবন সদস্য রাশেদ কবির লিখনও ইউজিসিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাকেও বোর্ড থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউজিসি।

অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক যে কোনো সিদ্ধান্ত চেয়ারম্যান এককভাবে নিয়ে আসছেন। এমনকি ইউজিসি বা শিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের পক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য বোর্ড অব ট্রাস্টিজকে অবহিত করেন না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী পাঁচ বছরের জন্য চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার কথা থাকলেও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কোনো প্রকার সভা ছাড়াই তিনি ৮ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন। এমনকি ২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা পেলেও আজ পর্যন্ত কোনো সভা আহ্বান করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাবও দাখিল করেননি।

অভিযোগে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৬ বিঘা জমি ক্রয় করার কথা থাকলেও তা নিজের নামে নিবন্ধন করান। শিক্ষক নিয়োগ, ছাঁটাই একক সিদ্ধান্তে করে থাকেন। ছাঁটাই হওয়া শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড না দিয়ে আত্মসাৎ করছেন ড. এম এ আজিজ। তিনি অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কম দরে ভবন ভাড়া নিয়ে কয়েকগুণ বেশি দরে ইউজিসিকে দেখিয়েছেন।

নাটোরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমানে রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছাড়াই চলছে। নেই পর্যাপ্ত শিক্ষকও। কোষাধক্ষ্য থাকেন ঢাকায়, যিনি কখনও ক্যাম্পাসে আসেননি বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

অভিযোগকারী ও আরএসটিইউর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সোলায়মানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটি স্বপ্ন আর শিক্ষা বিস্তারের ব্রত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। কিন্তু বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতা আর দুর্নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি ডুবতে বসেছে। চেয়ারম্যান বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে কোনো প্রকার আলোচনা না করেই সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। স্ত্রী, ছেলে, মেয়েকে নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা ফোন দিলেও তিনি ধরেন না। কারও কাছেই তিনি জবাবদিহি করার প্রয়োজন বোধ করেন না।

যোগাযোগ করলে চেয়ারম্যান ড. এম এ আজিজ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতিষ্ঠানটি সচল রেখেছি। আমি দায় নিয়ে এবং ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সব বিষয়ে অবহিত করে সিদ্ধান্ত নিয়ে আসছি, যার সব বিষয়ে বোর্ড অবগত। স্ত্রী, ছেলে, মেয়েকেও বোর্ডের সিদ্ধান্তে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগকারীরা অসত্য, বানোয়াট তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক বিশ্বজিৎ দত্ত  বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটি অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখবে। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    About The Author

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *