November 23, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

দিনবদলের অপেক্ষায় ওপারের কৃষি

1 min read

আর মাত্র ২৪ দিন। পদ্মা সেতু চালুর জন্য মুখিয়ে আছে ওপারের ২১ জেলা। সেতু চালুর পরপরই বদলে যেতে থাকবে অর্থনীতি। বিশেষ করে কৃষিতে নিঃসন্দেহে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সেতুর কারণে বাড়বে কৃষিপণ্যের উৎপাদন। দ্রুত স্থানবদল হবে সেসব পণ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, সেতু চালু হলে ফেরিঘাটে যারা হকারি করে জীবন চালাতেন, সেই নিম্ন আয়ের মানুষগুলোও নতুন বাজারের হাতছানিতে মনোযোগী হবে কৃষিতে।

কর্মসংস্থান হিসেবে ছোট ব্যবসা বা কৃষিতেই মন দেওয়ার কথা ভাবছেন তারা। পদ্মা সেতুর কারণে ইতোমধ্যে সেখানকার জমির দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। যে কারণে কিছু জমি বিক্রি করেও অনেকে জোগাতে পারবেন পুঁজি।

একই প্রভাব পড়বে পাশের জেলাগুলোয়ও। বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও যশোরের কৃষিও ফুলেফেঁপে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেলাগুলোর বিস্তীর্ণ চরে ধান চাষের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি কৃষিপণ্য চাষাবাদের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।

তাদের মতে, বরিশালে ধান, শাকসবজি, নারিকেল, সুপারি, আমড়ার পাশাপাশি তেজপাতারও চাষ হয়। বাজারজাত সহজ হলে এসব অঞ্চলে বড় আকারে তেজপাতা চাষের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। বাড়বে নারিকেল ও সুপারির বাগানও।

অন্যদিকে মাগুরা ও ঝিনাইদহের মাটির গুণ বিচার করে কৃষিপণ্য বাছাই করে সেসব চাষাবাদে উৎসাহ দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। যশোর ও ফরিদপুরের খেজুরের গুড়ের কদর আছে দেশজুড়ে। সেখানকার পরিত্যক্ত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে খেজুর গাছ চাষ করার কথাও ভাবছে কৃষি বিভাগ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশালের কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল আলম জানান, বরিশালে ধান, নারিকেল, সুপারির পাশাপাশি এখন তরমুজের চাষ হয়। এখানকার তরমুজ দক্ষিণাঞ্চলের চাহিদা পূরণ করছে। এতদিন এসব পণ্য রাজধানীতে পাঠানো ছিল দুঃসাধ্য। সেতু চালু হলে তা সহজ হয়ে যাবে। এমনটাই প্রত্যাশা এসব অঞ্চলের কৃষকদের।

ফরিদপুরের কৃষি কর্মকর্তা রাজেন চন্দ্র সমদ্দার জানিয়েছেন, এলাকার অনেক মানুষ জীবনের প্রয়োজনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের অনেকের বসতবাড়ি, ভিটে পরিত্যক্ত পড়ে আছে। পদ্মা সেতু চালু হলে অনেকে তাদের ভিটায় ফিরে কৃষিকাজ করে বাকি জীবন পার করার কথা ভাবছেন। সেক্ষেত্রে তাদের চাষাবাদে সহায়তাও দেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, খেজুরের গুড় তৈরিতে এখানকার মানুষ দক্ষ। বাণিজ্যিকভাবে গুড় উৎপাদনে সহায়তা দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর ইতিবাচক প্রভাব আমাদের এখানেও পড়বে। এ অঞ্চলের কুটির শিল্প কৃষিপণ্যের ওপর নির্ভরশীল। সে কারণে এখানে নারিকেলের ছোবড়ার পণ্যের (পাপোস, দড়ি) চাহিদা বাড়বে। এ অঞ্চলের গাছের চারাও দ্রুত পৌঁছানো যাবে দেশের সর্বত্র।

উল্লেখ্য, আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেবেন। এই সেতুকে ঘিরে ইতোমধ্যে আশপাশের জেলাগুলোতে শুরু হয়েছে শিল্পায়ন। চলছে বনায়নও।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *