April 20, 2025

ফরচুন নিউজ ২৪

ছোট হয়েছে পরোটা-শিঙাড়া, খাওয়া কমিয়েছেন নিম্নবিত্তরা

দফায় দফায় সয়াবিন তেল, আটা-ময়দা সহ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় পাড়া-মহল্লার হোটেল, রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা পড়ছেন বিপাকে। গত বছরের শেষে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর রুটি, পরোটা, ডিম ভাজিসহ বিভিন্ন খাবারের দাম বাড়িয়েছিলেন তারা। তবে সম্প্রতি ফের নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন লাগলেও নতুন করে আর খাবারের দাম বাড়াতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে লোকসান ঠেকাতে পরোটা, শিঙাড়ার আকার ছোট করছেন। তবে এতেও বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন না হোটেল ব্যবসায়ীরা। এমন অবস্থায় ব্যবসা টেকাতে অনেকেই খাবার কম তৈরি করছেন।

হোটেল বলেন, গত বছরের শেষে দাম বাড়িয়েছি। পরোটা ৫টাকা থেকে ১০টাকা করি। ডিম ভাজি ১৫ টাকা করি। কিন্তু দেখা গেলো এতে গ্রাহক কমে গেছে। যিনি আগে দুইটা পরোটা খেতেন তিনি এখন একটা খান। অনেকেই বাসার জন্য নাস্তা নেন, তারাও এখন খাবার কম নেন। আটা-ময়দা, তেলের দাম বাড়ায় আমাদের এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সিরাজ মৃধা আরও বলেন, কোথাও কোথাও নাস্তার জন্য অতিরিক্ত কিছু টাকা দেয়। সেখান থেকে টাকা বাঁচানোর চেষ্টা করছি। কারণ, অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের যে দাম, তাতে হিসাব করে খরচ করতে হয়।

এ সময় হোটেলটির মালিক সাইদ আনোয়ার বলেন, দেখলেনই তো। ২৫-৩০ টাকার বেশি কেউ বিল করছে না। গ্রিল, মোগলাইয়ের মতো কিছুটা দামি খাবারও খাবার বিক্রি হচ্ছে কম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, হোটেলের খাবার তৈরির মূল উপাদান ময়দা ও তেল। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে ময়দার দাম কেজিতে ৮ টাকা, তেলের দাম লিটারে ৪০টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ডিম, সবজি, মাংস, পেঁয়াজসহ সব জিনিসের দাম বেড়েছে। এমন অবস্থায় দাম বাড়িয়ে বা খাবারের মান কমিয়েও বিশেষ সুবিধা হচ্ছে না তাদের।

হোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার পর এমন দুর্যোগ আসতে পারে তা তারা কল্পনাও করতে পারেননি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যদি আরও বাড়ে তাহলে তাদের হোটেল ব্যবসা ছেড়ে বিকল্প চিন্তা করতে হবে।

সাইদ আনোয়ার বলেন, দাঁত কামড়ে ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছি। পুরি ছোট করায় কাস্টমাররা বিভিন্ন রকমের কথা বলছেন। কিন্তু জিনিসপত্রের যে দাম তাতে পুরির দাম ঠিক রাখতে হলে আকার ছোট করতেই হবে।

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, আমরা অনেকেই আর টিকে থাকতে পারছি না। অনেকেই হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ করে ফেলছেন। করোনার পরে ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করেছিলেন। কিন্তু উল্টো এখন ব্যবসা বন্ধ করার অবস্থা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০-৪০ শতাংশ বিক্রি কমেছে। রেস্তোরাঁগুলোতে মানুষ কম আসছেন, খাবারও কম কিনছেন। কিন্তু রেস্তোরঁগুলোর ব্যয় বেড়ে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় হোটেলের কর্মীরাও বেশি বেতন চাইছেন। খুব কষ্টে আছি আমরা।

তিনি বলেন, এখন অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁ খাবার বানানো কমিয়েছে, কেউ দোকান বন্ধ রাখছে। যুদ্ধের কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। এটাতো কারও হাতে নাই, সহসা সমাধানও হচ্ছে না। এ অবস্থায় আমাদের টিকে থাকাটাই বড় চ্যালেঞ্জ।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *