November 23, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

উড়ন্ত গাড়ি আসছে বাজারে!

1 min read

ভবিষ্যতে বিজ্ঞান আমাদের জীবন কীভাবে বদলে দিতে পারে তা নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছিল হলিউডে। ১৯৮২ সালের ছবি ‘ব্লেড রানার’এ দেখানো হয়েছিল ভবিষ্যতের লসএঞ্জেলস শহরে আকাশের মহাসড়ক দিয়ে ছুটে চলেছে উড়ন্ত যানবাহন। সেই রূপালি পর্দায় দেখা কল্পলোকের জিনিস এখন বাস্তবে রূপ পেয়েছে।

জার্মানির ভলোকপ্টার কোম্পানি তাদের ভলোসিটি মডেলের বিদ্যুৎশক্তি চালিত উড়ন্ত ট্যাক্সিকে প্রথম বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স দিয়েছে। ফলে উড়ন্ত ট্যাক্সি এখন আগামী দশকগুলোতে আমাদের যাতায়াত, কর্মজীবন এবং জীবনযাত্রায় একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছে।

ব্যাটারি প্রযুক্তি, কম্পিউটার এবং বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে এতটাই অগ্রগতি হয়েছে যে উদ্ভাবকরা এখন ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন ধরনের উড়ন্ত গাড়ি তৈরি করছেন। সেই সঙ্গে এসব গাড়ি আকাশে কোন পথ ধরে চলবে তার পথ নির্দেশনা পদ্ধতিও তারা উদ্ভাবন করেছেন।

বাণিজ্যিক বিমানের চেয়ে আকারে অনেক ছোট। বেশিরভাগই ডিজাইন করা হয়েছে ডানার বদলে হেলিকপ্টারের মত ঘূর্ণায়মান পাখা বা রোটার দিয়ে। যাতে গাড়িগুলো খাড়াভাবে আকাশে উঠতে বা নামতে পারে।

সবচেয়ে বড় কথা হল এই উড়ন্ত গাড়িগুলোর নক্সা তৈরি করা হয়েছে এমনভাবে যাতে তারা দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে। বিশেষ করে যানজটের শহরগুলোতে মানুষ যাতে দ্রুত তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে।

তবে এই মুহূর্তে আকাশ যানের বাজার কতটা আশাব্যঞ্জক তা বলা মুশকিল। যদিও বেশ কয়েকটি নতুন প্রতিষ্ঠান পাল্লা দিয়ে বাণিজ্যিক আকাশ-যান, উড়ন্ত মোটরবাইক এবং ব্যক্তিগত উড়ন্ত ট্যাক্সি তৈরির কাজে নেমে পড়েছে।

উদ্যোক্তাদের অর্থ সহায়তাদানকারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান, পাশাপাশি গাড়ি ও বিমান সংস্থাগুলো এই সম্ভাবনাময় শিল্পে লগ্নি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের ধারণা ২০৪০ সাল নাগাদ এটা ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের শিল্প হয়ে উঠতে পারে।

এমনকি উবার কোম্পানিও এই উড়ন্ত ট্যাক্সি সেবায় তাদের ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে। আকাশ পথে ‘উবার এলিভেট’ নাম দিয়ে তারা ব্যবসা করার ছক কাটছে।

ইতোমধ্যে, বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আকাশ পথে পরিবহন ব্যবস্থার নতুন নিয়মনীতি ও নিরাপত্তার মান কী হবে তার রূপরেখা তৈরির কাজও শুরু করেছে।

জার্মান ভিত্তিক কোম্পানি ভলোকপ্টার তাদের ভলোসিটি মডেলের বিদ্যুৎশক্তি চালিত উড়ন্ত ট্যাক্সিকে প্রথম বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স দিয়েছে। সংস্থাটির পরিকল্পনা অনুযায়ী এই যান আগামীতে পাইলটবিহীন উড়তে পারবে।

শুরুর দিকে ভলোসিটির পাইলট চালিত উড়ন্ত ট্যাক্সিতে বসতে পারবেন মাত্র একজন যাত্রী। ফলে এই রাইডের জন্য ভাড়া পড়বে একটু বেশি। কিন্তু তারা আশা করছে যাত্রীদের মধ্যে আস্থা তৈরি হলে তারা স্বয়ং-চালিত মডেল বের করবে। যেখানে চালকের প্রয়োজন হবে না।

এই যান চলবে বিদ্যুৎশক্তিতে, গাড়ির কোন ডানা থাকবে না। নয়টি ব্যাটারি থেকে সরবরাহ করা বিদ্যুৎশক্তি দিয়ে চলবে গাড়ি।

বিমান ওঠানামার জন্য যেমন বিমানবন্দর বা এয়ারপোর্ট থাকে, এইসব উড়ন্ত ট্যাক্সি ওঠানামার জন্য বড় বড় শহরের বিভিন্ন জায়গায় বসানো হবে ভার্টিপোর্ট। এই ট্যাক্সি যেহেতু খাড়াভাবে (ভার্টিকালি) আকাশে উঠবে, তাই এই ওঠানামার বন্দরগুলোর নাম তারা দিতে চাইছেন ভার্টিপোর্ট।

তবে ভার্টিকালি বা সোজাসুজি কোন যানের আকাশে ওঠানামার প্রযুক্তি এখনও খুবই নতুন। এ ক্ষেত্রেও নানাধরনের নকশা তৈরির কাজ এগোচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর জন্য পুরো স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার বিকল্প নেই। নতুন চ্যালেঞ্জ থাকবে অনেক। শুধু তো আকাশে চলা গাড়ি বা অন্য ধরনের যানবাহন নয়, আকাশে আরও অনেক ধরনের ঝুঁকি থাকবে যেমন উড়ন্ত মহাজাগতিক বস্তু, পাখি, ড্রোন, আর বিমান! এদের কেউ চলার পথে এসে পড়ছে কিনা তা নিয়ন্ত্রণ জরুরি হবে।

ভলোসিটি বাণিজ্যিকভাবে তাদের উড়ান শুরু করবে ২০২২ সালে।

About The Author