April 25, 2024

ফরচুন নিউজ ২৪

আজ স্থায়ী ঠিকানা পাচ্ছে ৫৩ হাজার ৩৪০ পরিবার

1 min read

সারা দেশে ভূমি-গৃহহীন পরিবার এবং ১ থেকে ১০ শতাংশ জমি আছে কিন্তু ঘর নেই বা জরাজীর্ণ ঘর রয়েছে—আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর দ্বিতীয় পর্যায়ে এমন ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবার স্থায়ী ঠিকানা পাচ্ছে আজ রবিবার। দেশের কয়েকটি উপজেলায় এই ঘর উদ্বোধনে ভার্চুয়ালি ঢাকার গণভবন থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আনুষ্ঠানিকভাবে ঘর হস্তান্তরকালে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আজ প্রত্যেক উপকারভোগীর হাতে জমিসহ ঘর, কবুলিয়ত, দলিল, নামজারি ও গৃহসনদ হস্তান্তর করা হবে। স্থায়ী আশ্রয়স্থল পেতে যাওয়া মানুষগুলো এরই মধ্যে মেতেছে উচ্ছ্বাস-উল্লাসে।

গরিব-অসহায় মানুষের মধ্যে যাদের জমি আছে, কিন্তু ঘর তৈরির সামর্থ্য নেই তারা বিনামূল্যে ঘর পাচ্ছে। আর যাদের জমিটুকুও নেই তাদের দুটোই দেওয়া হচ্ছে কোনো খরচ ছাড়া। এতে স্থায়ী ঠিকানা পেয়ে পাল্টে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জীবনমান। নতুন জীবনবোধ তাদের সমাজে মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের পর মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গরিব-অসহায় মানুষের জন্য বিশেষ কিছু করতে চাচ্ছিলেন। সে অনুযায়ী গত বছরের জুন মাসে সারা দেশে দুই শ্রেণিতে আট লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারের তালিকা করা হয়। এই তালিকা ধরে পর্যায়ক্রমে ঘর দেওয়া শুরু করেছে সরকার। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি প্রথম পর্যায়ে ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ রবিবার দ্বিতীয় পর্যায়ে একসঙ্গে ৫৩ হাজার ৩৪০টি পরিবারকে ঘরের চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

চলমান এই প্রকল্পে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আরো এক লাখ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বিনা মূল্যে জমিসহ ঘর দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প-২’ শিরোনামে। সারা দেশে মাঠ প্রশাসনের মাধ্যমে সরাসরি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, শেখ হাসিনা প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব-অসহায় মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বর্তমান উদ্যোগে প্রায় ৯ লাখ পরিবার ঘর পাচ্ছে। এর আগে আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন উদ্যোগে হস্তান্তর করা হয়েছে প্রায় পৌনে দুই লাখ ঘর ও ফ্ল্যাট। পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এই উদ্যোগে উপকারভোগী পরিবার দাঁড়াবে পৌনে ১১ লাখে। প্রতি পরিবারে গড়ে পাঁচজন হিসাবে উপকারভোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৫৪ লাখ।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান  বলেন, গরিব মানুষকে ঘর করে দেওয়ার বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এর জন্য বাড়তি ব্যয় হচ্ছে না। একাধিক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নিজ নিজ বরাদ্দকৃত টাকার মাধ্যমে মহৎ এই উদ্যোগ এগিয়ে চলেছে।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব হোসেন জানান, যাদের জমি নেই, তাদের দুই শতাংশ জায়গা বন্দোবস্ত দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। যারা জমি ও ঘর দুটোই পাচ্ছে তারা প্রায় আড়াই থেকে পৌনে তিন লাখ টাকার সুবিধা পাচ্ছে। আর যারা শুধু ঘর পাচ্ছে তাদের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় দুই লাখ টাকা। যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের সুযোগ আছে সেসব এলাকায় ঘরগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগও দেওয়া হচ্ছে।

রবিবার সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৪৩৬টি ঘর রংপুর বিভাগে প্রদান করা হবে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ১০ হাজার ৫৪৭টি ঘর, ঢাকায় সাত হাজার ৬৩০টি ঘর, রাজশাহীতে সাত হাজার ১৭২টি, বরিশালে ৩৭ হাজার ১৫৩টি, খুলনায় ৯১১টি, ময়মনসিংহে দুই হাজার ৫১২টি এবং সিলেট বিভাগে এক হাজার ৯৭৯টি ঘর প্রদান করা হবে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালিকানুযায়ী দেশে ভূমিহীন এবং গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা দুই লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি (ক-শ্রেণি)। আর শুধু গৃহহীন পরিবার হচ্ছে পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি (খ-শ্রেণি)।

 

About The Author